#আকাশ_পাঠাবো_তোমার_মনের_আকাশে
#নাইমা_জাহান_রিতু
#পর্ব_৬০মেঝেতে পড়ে দীপাকে ব্যথায় ছটফট করতে দেখে ক্ষণিকের জন্য দিশেহারা হয়ে পড়লেন শিপু চৌধুরী। দৌড়ে গিয়ে দীপার হাত ধরে তাকে টেনে তোলার চেষ্টা করলেন। তবে হঠাৎ কিছু একটা মাথায় আসায় ছুটে গেলেন সদর দরজার দিকে। দরজা খুলে রেখে ইকবাল চৌধুরীকে ডেকে আবারও ফিরে এলেন ঘরে। দীপার দিকে হাত বাড়াতে গিয়েই তার চোখ গিয়ে ঠেকলো দ্যুতির দিকে। আতঙ্কে জড়সড় হয়ে বসে তাদের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে সে। তার সেই দৃষ্টি অকপটে বলে দিচ্ছে দীপাকে ধাক্কা মেরে নিচে ফেলেছে সেই..
পুরো পরিস্থিতি ভেবে মাথায় রক্ত উঠে গেল শিপু চৌধুরীর। দ্যুতির অসহায় মাখা দৃষ্টি উপেক্ষা করেই তার কাছে এসে ধড়াম ধড়াম করে শরীরে চড়থাপ্পড় লাগাতেই পাশ থেকে চেঁচিয়ে উঠলেন ইকবাল চৌধুরী।
-আরে আরে.. ওকে মারছো কেনো?
-তো মারবো না? পুঁজো দিব? হারামজাদিটাই দীপাকে ফেলেছে।
-তাই বলে ওকে মারবে? ওর সেটুকু বোঝার মতো হুশজ্ঞান আছে?
-খাওয়া পড়া সব বোঝে অথচ খারাপ ভালো বোঝে না..
দ্যুতির গালে কষিয়ে আরেকটি থাপ্পড় বসিয়েই
হন্তদন্ত হয়ে দীপার কাছে ফিরে এলেন শিপু চৌধুরী। ইকবাল চৌধুরীকে এগিয়ে আসতে বলে হাত বাড়ালো দীপার দিকে।ভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার জন্য শিক্ষকদের বৈঠক বসেছিল। যাতে উপস্থিত থাকার জন্য বেশ সকাল সকাল বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল ইশতিয়াক। দীর্ঘক্ষণের সেই বৈঠকের পর একটি ক্লাস শেষ হয়ে এলেও তার অস্থির মন পড়ে রয়েছে বাড়িতে। দ্যুতি দীপার হাতে খেয়েছে কি? কোনো ঝামেলা করেনি তো? এর চেয়ে বরং সাত সকালে জোর করে একটু না হয় খাইয়ে দিয়ে এলেই হতো! অশান্ত মনকে শান্ত করতে দীপার নাম্বারে কল দিল ইশতিয়াক। তবে ওদিক থেকে কোনো সাঁড়া না পেয়ে তার বাবার নাম্বারে কল দিল। দুইবার রিং হতেই ওপাশ থেকে ভেসে এল শিপু চৌধুরীর আওয়াজ।
-ইশতিয়াক তুমি কোথায়?
-ভার্সিটি। কেনো কিছু হয়েছে? দ্যুতি কোথায়? ও ঠিকাছে?
-জানি না। জাহান্নামে যাক ও। আমরা হাসপাতালে যাচ্ছি। পারলে তুমিও চলে এসো।
ঘাবড়ে পড়লো ইশতিয়াক।
-হাসপাতালে কেনো?
-তোমার গুণধর বউ দীপাকে ফেলে দিয়ে...
শিপু চৌধুরীর কথা শেষ না হতেই ইশতিয়াক বললো,
-কোথায়? সিটি হসপিটাল?
-হ্যাঁ..
-আচ্ছা আমি আসছি।
ভবন থেকে বেরিয়ে পড়লো ইশতিয়াক। সবুজ ঘাস পেরিয়ে হন্য পায়ে ছুটলো পিচঢালা পথের দিকে। দ্যুতি দীপাকে ফেলে দিয়েছে? কিন্তু দ্যুতি কেনো এই কাজ করবে? এমন একটি কাজ করা কি দ্যুতির পক্ষে সম্ভব? অসম্ভবও তো নয়.. তবে কি দ্যুতি সুস্থ নেই? প্রশ্নত্তরের খেলা শেষ না হতেই বুকের ভেতরটা হু হু করে উঠলো ইশতিয়াকের। সেকেন্ডের মাঝেই মত ঘোরালো সে। দীপার সাথে এখন ছোটমা এবং বাবা থাকলেও দ্যুতি বাসায় একা। অসুস্থ অবস্থায় হয়তো এখন বিছানায় শুয়ে ছটফট করছে!
YOU ARE READING
আকাশ পাঠাবো তোমার মনের আকাশে
General Fictionইশতিয়াক দ্যুতির জীবনের চড়াই-উতরাইয়ের গল্প নিয়ে তৈরি #আকাশ_পাঠাবো_তোমার_মনের_আকাশে