#১৪

435 13 0
                                    

#আকাশ_পাঠাবো_তোমার_মনের_আকাশে
#নাইমা_জাহান_রিতু
#পর্ব_১৪

সকাল হয়েছে বেশখানিক্ষণ.. সূর্যর রক্তিম আলো ঘরে প্রবেশ করেছে। যা দ্যুতির উলঙ্গ শরীরের উপর পড়ে তার উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিচ্ছে বহুগুণে। সেদিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর দ্যুতির হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দিল সারজিম। হাত বাড়িয়ে দ্যুতিকে উঠানোর চেষ্টা করতেই হাত ছিটকে তাকে সরিয়ে দিল দ্যুতি। ব্যথায় ভরা শরীর নিয়ে ধীরেধীরে উঠে মেঝেতে ফেলে রাখা জামা, পায়জামা নিয়ে সে এগুলো ওয়াশরুমের দিকে। বিশ্বাস অবিশ্বাসের খেলায় আজ অবিশ্বাসকে জিতিয়ে দিল সারজিম। তবে সে কি ভুলে গিয়েছে, ফুটন্ত কলির মতো মনোরম হৃদয়ে একবার অবিশ্বাসের তীর প্রবেশ করলেই তা সেই হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করে মৃত্যুর প্রান্তে নিয়ে দাঁড় করায়?

-তোমার খাবার..
ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে দ্যুতি বিছানায় বসতেই সারজিম একটি প্লেট রাখলো তার পাশে। পানিভর্তি বড় একটি বোতল মেঝেতে রেখে আবারও বললো,
-খেয়ে নাও.. আমি একটু বেরুবো। তোমার কিছু লাগবে?
সেকথার জবাব দিল না দ্যুতি। স্থির হয়ে সে বসে রইলো নিজের জায়গায়। দ্যুতির উত্তরের জন্য খানিকক্ষণ অপেক্ষা করে সারজিম বেরিয়ে পড়লো শোবার ঘর ছেড়ে। ডাইনিংয়ে এসে ঢকঢক করে এক গ্লাস পানি খেয়ে আবারও ফিরে এল শোবার ঘরের দরজায়। দ্যুতিকে সেভাবেই চুপচাপ বসে থাকতে দেখে বাইরে থেকে দরজা লক করে বললো,
-আমি আসছি..
মুহুর্তেই দৌড়ে দরজার দিকে এগুলো দ্যুতি। দু'হাতে তাতে আঘাত করতে করতে বললো,
-দরজে কেনো আটকাচ্ছো? দরজা খোলো। আমি বাবার কাছে যাবো.. দরজা খোলো।
-তোমার বাবা তোমার মুখ দেখবেন না..
-সেটা আমি বুঝবো.. তুমি দরজা খোলো নয়তো আমি বাবাকে কল করবো।
-কিভাবে করবে? তোমার ফোন আমার কাছে..
আতংকে ছটফট করতে করতে ফোন খুঁজতে শুরু করলো দ্যুতি। তবে কোথাও তার দেখা না পেয়ে চিৎকার করে কেঁদে উঠলো সে।
-আমি চিৎকার করবো.. দরজা খোলো। আমাকে তুমি কয়দিন এভাবে বন্দী করে রাখবে?
-চিৎকার করেও লাভ হবে না। তবুও নিজের গলার স্বর খারাপ করতে চাইলে চিৎকার করতে পারো।
-ও আল্লাহ... আমি এই জানোয়ারকে ভালোবেসে বাবামাকে ছেড়েছিলাম? আমাকে মেরে ফেলো তুমি আল্লাহ.. আমার মৃত্যু দাও। আমি আমার বাবার মনে কষ্ট দিয়েছিলাম.. এতটা বোকামি আমি কেনো করলাম? ও আল্লাহ আমাকে তুমি আরও শাস্তি দাও.. আমাকে মেরে ফেলো। আমি এসবই ডিসার্ভ করি।
-শান্ত হও দ্যুতি।
দরজার ওপাশ থেকে সারজিম নরম সুরে কথাটি বলতেই মেঝেতে বসে পড়লো দ্যুতি।
-আমার জীবনটা শেষ করে দিলে তুমি। কেনো করলে আমার সাথে এমন? আমি তোমাকে ভালোবেসেছিলাম.. বিশ্বাস করেছিলাম। কাল রাতেও আমি সব ভুলে গিয়ে তোমাকে আরেকটা সুযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু তুমি.. তুমি আমাকে একটা পণ্য বানিয়ে ফেললে। খুব লোভী তুমি.. খুব খারাপ। জঘন্য.. আই হেইট ইউ। আই হেইট ইউ। তুমি আমার সাথে কেনো এসব করলে?
সময় গড়িয়ে যেতে লাগলো। বন্দী অবস্থায় কাটতে লাগলো দ্যুতির জীবন। কালের প্রবাহে সময় পেড়িয়ে গেলেও কখনোই এ প্রশ্নের জবাব দিত না সারজিম। দ্যুতি ভাবতো.. কেনো এসব করে সারজিম? শুধুই টাকার জন্য? এত টাকা দিয়ে কী করবে সে? উত্তর পেত না..

আকাশ পাঠাবো তোমার মনের আকাশে Unde poveștirile trăiesc. Descoperă acum