#৪৪

353 17 0
                                    

#আকাশ_পাঠাবো_তোমার_মনের_আকাশে
#নাইমা_জাহান_রিতু
#পর্ব_৪৪

থানা থেকে শফিউদ্দীন আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে দ্যুতিদের বাড়িতে এল ইশতিয়াক। একরাশ অস্বস্তিতে মাথা নিচু করে ড্রইংরুমে ঢুকতেই দীদার এগিয়ে এল। সোফার দিকে ইশারা করে বললো,
-বসুন..
শফিউদ্দীন আহমেদ এক পলক ইশতিয়াকের দিকে তাকিয়ে সোফায় এসে বসলেন। চোখমুখে চিন্তার রেখা ফুটিয়ে বললেন,
-সারজিমের নাম্বারে কল করা হয়েছিল। তবে বন্ধ পাচ্ছি। ওদিকে হাসান সাহেবের সাথে কথা হলেও তার বিরুদ্ধে একশন নেয়া বেশ কঠিন হবে। তাছাড়া তার কথার ধরণ শুনেও মনো হলো না তিনি এসবের সাথে জড়িত!
-কথার ধরন শুনেই বুঝে ফেললেন?
-আমরা এই পেশায় এমনিতেই টিকে নেই.. তবে ব্যপার মনে হচ্ছে অন্যখানে। সারজিমের মায়ের নাম্বার হবে?
-হবে.. দীপা বের করে দে তো।
বাবার আদেশে মহিমা বেগমের নাম্বার বের করে দীপা শফিউদ্দীন আহমেদের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,
-দুলাভাই বসুন..
আলাউদ্দীন খন্দকারের পাশেই বসলো ইশতিয়াক। ঢোক চেপে ধীর গলায় বললো,
-আব্বা আমাকে মাফ করা যায় না?
গম্ভীরমুখে আলাউদ্দীন খন্দকার বললেন,
-তোমার কী মনে হয়? তুমি যা করেছো তাতে তোমাকে মাফ করা উচিৎ?
পাশ থেকে দীপা বললো,
-দুলাভাই যাই করুক.. এসবের মাঝে কিছু মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়েছে। তোমাকে তো বললাম বাবা। ভাবি উনাকে অন্যভাবে জানিয়েছিল বিষয়টি।
-যে কারণেই করুক.. আমার মেয়ে তো নিখোঁজ!
-তুমি এভাবে শুধু দুলাভাইকে দোষ দিতে পারো না.. তোমরা কেনো দুলাভাইকে শুধু একজন স্বামীর চোখেই দেখছো? একজন স্বামীর দায়িত্ব পালনের সাথেসাথে সে কারো ভাই, কারো ছেলেও।
-ওকে স্বামীর চোখেও আমি দেখছি না.. ও আরগুলোর দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলেও আমার মেয়ের স্বামীর ভূমিকায় কখনো দায়িত্ব পালন করেনি..
-একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে কাওকে এভাবে বিচার করা উচিৎ বাবা? তুমি কেনো দুলাভাইয়ের অপর দিক গুলো দেখছো না? দুলাভাই কি কখনো আপুকে খোঁচা দিয়ে কথা শুনিয়েছে? মেরেছে?
-পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা না করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।
-তুমি নিজে কী করতে দুলাভাইয়ের জায়গায় থাকলে? বা তোমার ছেলেরা থাকলে তারা কী করতো?
-আমি আর যাই করিনা কেনো! প্রথম স্ত্রীর বেঁচে থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় বিয়ের কথা চিন্তাতেও আনতে পারতাম না.. আমি এমন অসুস্থ মনমানসিকতা নিয়ে জন্মাইনি..
-আমিও মানছি দুলাভাই এখানে ভুল.. তাই বলে সেটাকে মুদ্রা বানিয়ে আমরা দুলাভাইকে বিচার করতে পারি না!
-ঠিক বলেছে মেয়েটি.. আমার মনে হয় নিজেদের মাঝের দ্বন্দ্ব চুকিয়ে নিয়ে একসাথে মিলেমিশে আমাদের প্রফেসর সাহেবের ওয়াইফকে খোঁজার চেষ্টা উচিৎ। এতে আমাদের সামনে না আসা অস্পষ্ট অনেক বিষয় স্পষ্ট হয়ে উঠবে.. কেইসটা ইজি হবে।
শফিউদ্দীন আহমেদের কথা শুনে চোয়াল শক্ত হয়ে এল আলাউদ্দীন খন্দকারের। লোকটির আজ বুলি ফুটেছে! অথচ এই তিনটে দিন কম করে হলেও দশবার থানার চক্কর কেটেছে সে। তবে অর্থ-প্রতিপত্তি না থাকায় বারেবারে তাকে হেনস্তা করেছে.. দ্যুতিকে নিয়ে চলা কেইস ক্লোজ করে দিয়েছে.. এই আমাদের সমাজ? এই আমাদের সমাজের মানুষ? তবে লাথি মারি এই সমাজের পশ্চাৎদেশে.. মাথা ঠান্ডা করতে লম্বা একটি দম ফেললেন আলাউদ্দীন খন্দকার। দিলরুবা খন্দকারের দিকে তাকিয়ে বললেন,
-নীতাকে ডাকো..
-থাক। এখন বাইরের লোকের সামনে তামাশার দরকার নেই।
-দরকার আছে.. তুমি ডাকো ওকে।

আকাশ পাঠাবো তোমার মনের আকাশে Kde žijí příběhy. Začni objevovat