একটি সভ্য শিক্ষিত বেড়াল ১০

1.9K 6 0
                                    

"একটি একাকী চুল মুখে এসে নিয়েছে আশ্রয়"
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলে এলাকাটা জেগে ওঠে একসাথে। শরতের তীব্র রোদে সবাই যেন ক্লান্ত গাভীন গাইয়ের মতো বিশ্রাম নিচ্ছিল মহানিম গাছের ছায়ায়। বিকেল হলেই মহল্লাটা গাঁ ঝাড়া দিয়ে ওঠে- নিচ থেকে এর তার নামের ডাক আসে, রিক্সার টুংটাং, বাইক স্টার্টের ভোভো বেড়ে যায়; শব্দগুলো সিঁড়ি বেঁয়ে বেঁয়ে হাওয়ায় উড়ে উড়ে আসে।

চৈতির চোখের পাপড়ি তিরতির করে কাঁপে, মনে হয় এখুনি চোখ খুলবে। কিন্তু খোলে না। হাতটা বাঁকিয়ে মাথার কাছে রাখা, চুলগুলো ফ্যানের বাতাসে দুলছে, উড়ছে, কাঁপছে। স্বপ্ন দেখছে কি ও?

দরজায় ঠকঠক আওয়াজ হয়। নিঃশব্দে উঠে দরজা খুলে দিতেই ঋদ্ধ জুতা খুলে ঘরে ঢুকে। ওর হাতে কীসের একটা প্লাকার্ড।

শব্দ করতে বারণ করে ভেতরে ঢুকতে বলি। ঋদ্ধ আমার বিছানায় ঘুমন্ত চৈতিকে দেখে প্রশ্নপূর্ণ চোখে তাকায় আমার দিকে, কিন্তু কোন প্রশ্ন না করে নিজের রুমে ঢোকে।

আমিও ঢুকি সাথে। এরুমটা ছোট ও পূবমুখো। সকালে প্রচণ্ড রোদ আসে বলে, ঋদ্ধ জোর করে নিয়েছে রুমটা একা। সকালের রোদ নাকি এলার্মের কাজ করে ওর জন্য।

"তুই কি মনে করিস রাষ্ট্র আমাদের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নেয়ার অধিকার রাখে? "

চৈতিকে নিয়ে প্রশ্ন প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু ভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে আসে ও।

বলি, "না। বাকস্বাধীনতাই যদি মা থাকে, তাহলে স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়ে লাভ কী? "

ঋদ্ধ বিছানায় গা এলিয়ে দেয়, বলে, "এইটাই। আমারও প্রশ্ন এটা। স্বাধীন দেশের  নাগরিক হয়ে লাভ কী হলো!"

ঋদ্ধের প্লাকার্ডে একজন দাড়িওয়ালা লোকের ছবি। নিচে লেখা, "মাহিদুলের মুক্তি চাই/ বাকস্বাধীনতা ফেরত চাই!"

রুমটায় বিছানা ছাড়া বসার জায়গা নেই। ওর অসম্পূর্ণ কাজ, ইজেল, প্যাস্টেল, বোর্ড রুমটাকে বেদখল করে আছে। যত্রতত্র রঙ্গের ছোপ। ঋদ্ধেরই আঁকা কয়েকটা পেইন্টিং ঝুলছে দেয়ালে- সেসবের মানে আমি আজও উদ্ধার করতে পারিনি।

ইরোটিক বড়গল্প সমগ্র (১৮+)Where stories live. Discover now