মিশন কেওক্রাডং (Part Two)

877 35 7
                                    

পর্ব চার

আসিফের পেছন পেছন চুপচাপ হামাগুড়ি দিয়ে নিচে নেমে যাচ্ছে নীতু । আসিফ ওকে বলেছে যথা সম্ভব আওয়াজ না করে এগিয়ে যেতে । টিভি সিনেমাতে পাহাড়কে যতটা নির্জন মনে হয়, বাস্তবে এতোটা নির্জন মনে হচ্ছে না । চারিদিক থেকে তীব্র পোকার ডাক শোনা যাচ্ছে । কটেজের ভেতরে যখন ছিল তখনও আওয়াজ গুলো শোনা যাচ্ছিলো কিন্তু এখন বাইরে এসে মনে হচ্ছে যেন কোন প্রাকৃতিক কনসার্টের ভেতরে চলে এসেছে । এই ডাকাডাকির যেন কোন শেষ নেই ।

নীতুর মনের ভেতরে একটা ভয় কাজ করছে । এই ভাবে যে এসবের ভেতরে চলে আসবে কোন দিন ভাবতেও পারে নি। একবার মনে হল হয়তো ওদের টিমের সাথে নিচে চলে গেলেই পারতো । কিন্তু তারপরই মনে হল যদি চলে যেত তাহলে বাকি জীবনে সে শান্তিতে থাকতে পারতো?

মনে হয় না । এখন যা করতে যাচ্ছে সেটাই তার জন্য সব থেকে উপযোগী কাজ । যদি এখন সে মারাও যায় তবুও ।

আসিফ ওকে দাড়াতে নির্দেশ করলো । তারপর ফিসফিস করে বলল, এখানেই কোথাও সেন্সর গুলো সেট করেছিলাম আমরা । ওরা কি সেগুলো বদলে ফেলেছে কি না বুঝতেছি না !

নীতু কোন কথা না বলে নিজের ল্যাপটপ টা চালু করলো । ওর ল্যাপটপের দুই দিকে দুইটা ইউএসবি পোর্টে দুইটা এন্টেনা টাইপের ডিভাইস সেট করা । এই ডিভাইস গুলোও ওকে ওর আওয়ায় ভেতরে যেকোন ইলেকট্রনিক ডিভাইস কে হ্যাক করতে সাহায্য করে । একটু আগে ঠিক যেভাবে সে আসিফের ফোন হ্যাক করেছিলো ।

নীতু ল্যাপটপে একটা প্রোগ্রাম চালু করলো । তারপর কিছু সময় অপেক্ষা করেই পেয়ে গেল যা খুজছিলো । আসিফ বলল, এই দেখো আমাদের থেকে দুই মিটার দুরে প্রথম সেন্সর টা রয়েছে ।

আসিফ তাকিয়ে দেখলো স্ক্রিনে সত্যিই কিছু একটা পয়েন্ট নির্দেশ করছে । ওর ল্যাপটপের স্ক্রিনটা অনেকটা রাডারের মত কাজ করছে । নির্দেশ করছে কোথায় কোথায় আছে সেন্সের !

আসিফ বলল, এগুলো ডিজেবল করা যাবে?

-কেন যাবে না ?

নীতু আর কোন কথা না বলে কাজ শুরু করে দিল । আফিস চারিদিক দেখতে শুরু করলো । আর কিছু দুর গেলেই ওদের বেজ ক্যাম্পটা দেখা যাবে । এই দিকে আশা করা যাচ্ছে কোন পাহারা থাকবে না । ওর লক্ষ্য থাকবে কেবল ভেতরে ঢুকে পরা । নীতুর উপর সে অনেকটা নির্ভর করতে বাধ্য হচ্ছে । নীতু না থাকলে প্লান ছিল অন্য রকম । যদিও সেটা খুব বেশি যুতসই ছিল না । তবে সেটা ছাড়া ওদের হাতে আর কোন উপায়ও ছিল না । ওর উপর নির্দেশ এসেছে যে আজকের ভেতরেই কিছু একটা করতে হবে । কালকেই সন্ত্রাসীদের বেঁধে দেওয়া সময় সীমা শেষ হচ্ছে । তারা কিছু একটা ডিমান্ড করেছে । কিন্তু কি ডিমান্ড করেছে সেটা আসিফ জানে না । তাকে জানানো হয় নি । এমন অনেক হাই ক্লাস ক্লাসিফাইড ব্যাপার আছে যেগুলো জানার ক্লিয়ারেন্স আসিফের নেই । তবে এই টুকু জানে যে তারা যা চেয়েছে সেটা কোন ভাবেই পূরণ করা সম্ভব না । সেই হিসাবে আজকের পরে বন্দীদের এমনিতেও মেরে ফেলবে ওরা । ওদের বাঁচানোর একটা শেষ সুযোগ আসিফ নিজ থেকে কাজে লাগাতে চায় ।

বড় গল্প সমূহWhere stories live. Discover now