নোভা শেখ বাড়ির সামনে এসে আরেকবার ভাবলো। বাড়ির ভেতরে সরাসরি চলে যাওয়াটা মোটেই ভাল কাজ হবে না। কাউকে দিয়ে ভেতরে খবর পাঠিয়ে আরিফকে ডেকে আনাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। কিন্তু সেটা করাও সমীচীন হবে কিনা বুঝতে পারছে না।
শেখ বাড়ি আর ওদের সৈয়দ বাড়ির ভেতরে দা কুমড়া সম্পর্ক অনেক দিন থেকে। নোভা জন্ম থেকে শুনে আসছে এই শত্রুতা। বাপ দাদার আমল থেকেই এই শত্রুরা চলে আসছে। একেবারে সঠিক কারণটা নোভার জানা না থাকলেও এটা জানে যে শত্রুতা শুরু হয়েছিল জমিজমা নিয়ে। তারপর সেটা গ্রামের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে।
নোভা শুনেছে তার দাদার আমলে নাকি প্রায়ই মারামারি বাঁধতো দুই পরিবারের মাঝে। দুই পরিবারের পোষা লাঠিয়াল বাহিনী ছিল।
সময়ের সাথে সেই মারামারি শেষ হলেও শত্রুতা শেষ হয় নি৷ এখনো দুই পরিবার একে অন্যের পথ মারায় না। একই মসজিদে নামাজ পর্যন্ত পড়ে না। আলাদা মসজিদ বানিয়ে নিয়েছেন তারা৷
নোভার এসব ভাল লাগেনা। সে এইসব মানেও না। শেখ বাড়ির এক মাত্র ছেলে আরিফ তার সাথেই ঢাকায় পড়াশুনা করে। নোভা এই ব্যাপার টা খুব ভাল করে জানে আরিফ কারনেই ও ঢাকায় গিয়ে পড়াশুনা করতে পারছে। দুই পরিবারের মধ্যে রেসারেসি ছাড়াও পাল্লা দেওয়ার একটা ব্যাপার আছে। ওর ছেলে ঢাকায় পড়ে আমার মেয়ে কেন পড়বে না, এই মনভাব থেকেই নোভা ঢাকায় গিয়ে পড়ার পথটা আরও সহজ হয়েছে। অবশ্য এটা না হলেও নোভা ঠিকই একটা ব্যবস্থা করে ফেলতো। ছোট বেলা থেকে খুবই জেদি স্বভাবের মেয়ে৷ যা চেয়েছে, তাই করেছে।
ঢাকায় গিয়ে আরিফের সাথে সম্পর্ক টা হঠাৎ ভাল হয়ে যায় ওর। একটা সময় সেটা কখন প্রেমে রূপান্তর হয়ে যায় সেটা নোভা কিংবা আরিফ কেউ ই বলতে পারে না। কেবল ওদের কাছে মনে হয়েছে একে অন্যকে ছাড়া ওরা কোন ভাবেই থাকতে পারবে না।
আজকে যেমন নোভা ছটফট করছিল আরিফের সাথে কথা বলার জন্য৷ গ্রামে ওরা একই সাথে এসেছে। একই ট্রেনে। স্টেশন থেকে আলাদা হয়েছে। স্টেশনে নোভাকে নিতে ওর বাবা হাজির ছিল। আরিফের সাথে কথা বলতে বলতে যখন নোভা নেমে এল সেটা দেখে সে মোটেও খুশি হলেন না। যদিও মুখে কিছুই বললেন না। কারণ কিছু বললে ফল অন্য রকম হতে পারে।
YOU ARE READING
বড় গল্প সমূহ
Romanceআমার বেশির ভাগ গল্প ছোট ছোট । তবে মাঝে মাঝে কিছু বড় বড় গল্প লিখেছি । সেই গল্প গুলোই এই বইতে এক পর্বে কিংবা কয়েক পর্বে পোস্ট করবো ! সব গুলো বড় গল্প আস্তে আস্তে এখানে এসে জমা হবে । পড়ার আমন্ত্রন রইলো ।