আরেকবার ঢোক গিলে আমি ঘরের চারিদিকে তাকালাম৷ ঠিক ঘর নয় এটা। বড় একটা হলরুম মনে হচ্ছে। একটা ফার্ম হাউজে নিয়ে আসা হয়েছে আমাকে। কেন নিয়ে আসা হয়েছে সেই বিষয়ে আমার কোন ধারনা নেই৷ তবে বুকের ভেতরে একটা ভয় অনুভব করছি। কারন আমাকে যারা তুলে নিয়ে এসেছে তারা নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দিয়েছে। ভাব চক্করেও তাই ই মনে হয়েছে৷ কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না আমাকে কেন তুলে নিয়ে আসলো?
আমি এমন কোন কাজ কি করেছি?
নিজের মনকে জিজ্ঞেস করলাম?
হাজার চেষ্টা করেও এমন কিছু মনে করতে পারল না। আমি নিরিহ ইউনিভার্সিটি টিচার। ছাত্র ছাত্রীদের পড়ানো ছাড়া কোন কাজ করি না, রাজনীতি নিয়ে একটা কথাও বলি না। আর সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলার তো প্রশ্নই আসে না। তাহলে আমাকে তুলে আনলো কেন? আমাজে গুম করবে নাকি?আমি ভয়ে ভয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম। ঠিক তখনই একজন খানসামা মত লোক জুসের গ্লাস নিয়ে রুমের ভেতরে ঢুকলো৷ আমার সামনেই রাখলো গ্লাসটা।
জুসের দিকে তাকিয়েই বুঝতে পারলাম কাচা আমের জুস। কাচা আমের জুস আমার খুব পছন্দ। ক্রস ফায়ারে দেওয়ার আগে শুনেছি বন্দী কে পছন্দের খাবার খাওয়ানো হয়। আমার বেলাতেও কি তাই করা হচ্ছে?
খানসামা বলল, স্যার রাতে কি খাবেন? আপনার পছন্দের ইলিশ মাছ আর গরুর ভূনা করেছি আর কিছু কি লাগবে?
আমি আবারও খানিকটা দ্বিধায় পরে গেলাম। একে তো স্যার বলতেছে আবার আমার পছন্দের খাবারের কথাও জানে। তার মানে আমার ব্যাপারে বেশ খোজ খবর নিয়েছে এরা। প্রথমে মনে হয়েছিল এরা হয়তো ভুল করে নিয়ে এসেছে আমাকে কিন্তু এখন আর তা মনে হচ্ছে না। কিন্তু সেই প্রশ্ন তো থেকেই যাচ্ছে। আমাকে কেন উঠিয়ে নিয়ে আসছে এরা?
আমি জুসের গ্লাসটা হাতে নিয়ে ছোট করে চুমুক দিলাম। তারপর চুপচাপ বসে অপেক্ষা করতে লাগলাম। মরব যখন খেয়েই মরি।কিন্তু আমার জন্য সত্যি অন্য কিছু অপেক্ষা করছি। আমের জুসটা যখন শেষ হয়েছে তখন একজন ঘরের ভেতরে ঢুকলো। চেহারাটা খুবই পরিচিত মনে হল আমার। মেয়েটাকে আমি চিনি। কিন্তু ঠিক চিনতে পারছি না।
মেয়েটির পরনে একট সাদা টিশার্ট আর নিল জিন্স। গলায় একটা লাল স্কার্ফ জড়ানো৷ চুল গুলো পনিটেইল করে বাঁধা পেছনে। আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো। তারপর বলল, আম টা আমাদের নিজেস্ব বাগানের। কোন রকম ক্যামিক্যাল ছাড়া। জুস ভাল হয়েছে?
আমি বললান, হ্যা। ধন্যবাদ।
মেয়েটি ঠিক আমার সামনে এসে বসলো। তারপর বলল, আপনি মনে হচ্ছে আমাকে এখনো চিনতে পারেন নি। তাই না?
আমি বললান, জি ঠিক চিনতে পারছি না। কিন্তু কেমন যেন পরিচিত মনে হচ্ছে খুব।
মেয়ে হাসলো৷ তারপর ঘড়ির দিকে তাকালো৷ কয়েক মুহুর্ত পরে টেবিল থেকে রিমোট টা হাতে নিয়ে টিভি ছাড়লো। সময় টিভিতে সংবাদ শুরু হচ্ছে।
ESTÁ A LER
বড় গল্প সমূহ
Romanceআমার বেশির ভাগ গল্প ছোট ছোট । তবে মাঝে মাঝে কিছু বড় বড় গল্প লিখেছি । সেই গল্প গুলোই এই বইতে এক পর্বে কিংবা কয়েক পর্বে পোস্ট করবো ! সব গুলো বড় গল্প আস্তে আস্তে এখানে এসে জমা হবে । পড়ার আমন্ত্রন রইলো ।