জ্বরের দুটো দিন স্বপ্নের মত কাটল সিদ্রার। কখনো খালার মুখ আবার কখনো ওই শয়তান লোকটার মুখ দেখতে পেল। আকুল হয়ে থাকল একটু মাকে দেখার জন্য।
জ্বরের ঘোরে সারাক্ষণ মা আর বোনকে নিয়ে প্রলাপ বকছে মেয়েটা। আর মাঝেমাঝে আল্লাহ্ আল্লাহ্ করছে। লোকটা আশা করছিল, জ্বরের ঘোরে কোন না কোন প্রেমিকের নাম নিশ্চয় মুখে আনবে মেয়েটা। কিন্তু ওর আশা ভঙ্গ করে কারো নামই মুখে আনেনি সিদ্রা। আস্তে আস্তে লোকটার বিশ্বাস দৃঢ় হল। এ মেয়ে আসলেই একটা খারাপ মেয়ে। মন থেকে কাউকেই ভালবাসেনি, সবার সাথে নাটক করেছে। কোন ভুল করিনি আমি, একদম ঠিক কাজ করেছি, ভাবল সে।
***
তৃতীয় দিনে জ্বর পুরোপুরিভাবে ছাড়ল সিদ্রার। এ কয়দিন জ্বর না থাকলে ঘুমাতো, আর জ্বর থাকলে শুধু ভুল বকত। এ কয়দিনের কথা কিছুই মনে করতে পারছেনা ও। তবে মাঝেমাঝে খালা ওকে বাতাস করেছে, গা মুছিয়ে দিয়েছে, খাইয়ে দিয়েছে, এরকম মনে পড়ছে হালকা হালকা।আজকে ঘুম ভেঙে দেখল খালা নিচে বিছানা করে শুয়ে আছে। ওর ওড়নার এক কোনা, খালার আচলের সাথে গিট্টু দেয়া। দেখে হাসল সিদ্রা, যাতে পালাতে না পারি তাই এ ব্যবস্থা নাকি। ওড়নাটা নতুন, খেয়াল করতেই গায়ের দিকে তাকাল, একই সেটের একটা জামা পায়জামা ওর গায়ে। খুবই নিম্নমানের কাপড়, তবু খুশি হল সিদ্রা। আর ওই ছেড়া শাড়ি কষ্ট করে পরতে হবেনা। অনেক পিপাসা লেগেছে ওর। বিছানা থেকে নামল পানি খাওয়ার জন্য। শাড়িতে টান পড়তেই ঘুম ভেঙে গেল খালার।
ধড়মড়িয়ে উঠে বসল মহিলা। হেসে দিল সিদ্রা।
“আপনি সবসময় ঘুম ভাঙলে এত চমকে উঠেন কেন?”
খালা কিছু বললনা, উঠে সিদ্রাকে ধরে বিছানায় বসিয়ে নিজে পানি ঢেলে দিল ওকে। তারপর জ্বর আছে কিনা দেখল কপালে হাত দিয়ে। খালার মুখটা প্রসন্ন হয়ে উঠতেই সিদ্রা বুঝল যে ওর জ্বর নেই। ইশারা করে সিদ্রাকে এখানেই থাকতে বলল, আর আঁচলের গিটটা খুলে বের হয়ে গেল ঘর থেকে। খালার কথা না শুনে সিদ্রাও উনার পেছন পেছন বের হয়ে এল।
বিকেলবেলার হালকা আলো ঢুকছে গাছের ফাঁক দিয়ে। মৃদুমন্দ বাতাসে মনটা ভাল হয়ে গেল সিদ্রার। ভাল করে একটু বাতাস খাওয়ার জন্য বারান্দা থেকে নিচে নামল সিদ্রা। ঘরে ফেরা পাখির জোর কিচিরমিচির শোনা যাচ্ছে।
![](https://img.wattpad.com/cover/188177104-288-k270498.jpg)
YOU ARE READING
যে গল্পের নাম ছিলনা
General Fictionঅচেনা এক লোক সিদ্রাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে এলো জঙ্গলের এক কুঁড়েঘরে। শুরু করলো একের পর এক অত্যাচার। এমন অপরাধের শাস্তি ওকে দেয়া হচ্ছে যা করার কথা ও ভাবতেও পারেনা। কিন্তু তাহলে ও শাস্তি পাচ্ছে কেন? এই অত্যাচারের শেষ কোথায়? লেখিকার কথা: সম্পূর্ণ শখের বশে...