আমিও না গাধা! এতোদিন পরে দেখা হয়েছে আর উনি সোজা বিয়ের প্রস্তাব দিবেন নাকি!? উনি কি করে জানবেন, আমি গাধার মতো বিয়েতে হ্যাঁ করে দিয়েছি! ফোনটা বের করে কল লগে নাম্বারটার ওপর আঙুল বোলাল সিদ্রা। বাসায় ঢুকার একটু পরেই কল দিয়েছিল রাইয়্যান, ও ঠিকঠাক পৌঁছেছে কিনা জানতে। এবার আর জিজ্ঞেস করেনি সিদ্রা, ওর নাম্বার উনি কি করে পেলেন। যে মানুষ ওর সব খবর রাখে, তার পক্ষে একটা নাম্বার যোগাড় করা আর কি এমন কঠিন কাজ! কিন্তু প্রব্লেম টা হচ্ছে, নাম্বারটা ও সেভ করতে পারছেনা। কারণ, আজকেও উনার নাম জিজ্ঞেস করা হয়নি!
বারবার পড়তে পড়তে অবশ্য নাম্বারটা মুখস্থ হয়ে গিয়েছে, সেভ না করলেও চলবে। কিন্তু যদি উনার কাছে ওর নাম্বার থেকেই থাকে, তাহলে এতদিন উনি কল করেন নি কেন? আর এতদিন ধরে যোগাযোগই বা কেন করেননি? এর মধ্যে আমার যদি বিয়ে হয়ে যেতো!
যদিও তিনমাসের জন্য নিখোঁজ হয়ে যাওয়া একটা মেয়ের বিয়ে হওয়া যে কত কঠিন, তা হাড়ে হাড়ে বুঝে গিয়েছে সিদ্রা। কত ভালো ভালো প্রস্তাবই তো এসেছে, মানুষ ঠিক দায়িত্ব নিয়ে বিয়েগুলো ভেঙে দিয়েছে। যত নেককার দ্বীনদার মানুষই হোক, এমন একটা অতীতযুক্ত মেয়েকে বিয়ে করার সাহস কেউ করতে পারেনি। তবে কেউই রাজি হয়নি বললে অবশ্য ভুল হবে। বিপত্নীক, বয়স অনেক বেশি, বা আগের দু একটা বউ আছে, মানে নিজের কোন দুর্বলতা আছে, এমন কেউ কেউ রাজি হয়েছে, কিন্তু নিজাম সাহেব এসব প্রস্তাব এক কান দিয়ে ঢুকিয়ে আরেক কান দিয়ে বের করে দিয়েছেন। আর এসব প্রস্তাবগুলোর খবর আনতো ওরই নিকটাত্মীয়রা। বলেনা, যার বিয়ে তার খবর নেই পাড়াপড়শির ঘুম নেই, ওর হয়েছে সেই অবস্থা। ওর বিয়ের টেনশনে কেউ যেন ঘুমাতে পারছেনা।
আব্বু আম্মু বা মুনিরা, কেউই এসব কথা ওর সামনে বলতো না। কিন্তু যাদের আনা প্রস্তাব আব্বু রিজেক্ট করেছেন, তারাই ওকে ফোন করে নিজেদের ঝাল মেটাত। এতো ভালো প্রস্তাব কোথায় পাবে, ছেলের বয়স বেশি তো কি হয়েছে, আগের বিয়ে ছিল তো কি হয়েছে, একটা বাচ্চা থাকলে কি সমস্যা, এতো বাছবিচার করার ইচ্ছা তো পালিয়ে গিয়ে আবার ফিরে এসেছিলি কেন, এখন আবার সিনিয়র ডাক্তার পটানোর তাল করছিস নাকি, এমন আরও কত কি! নেহাত ভদ্র মেয়ে বলে মুখের ওপর ফোন রেখে দিতে পারতো না। কিন্তু এসবের জন্য দিনের পর দিন কতগুলো আইটেম যে পেন্ডিং হয়েছে, কতরাত যে শুধু চোখের পানি ফেলে পার করেছে, তার সাক্ষী শুধু ওই হোস্টেলের বালিশ আর কাঁথা।
YOU ARE READING
যে গল্পের নাম ছিলনা
General Fictionঅচেনা এক লোক সিদ্রাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে এলো জঙ্গলের এক কুঁড়েঘরে। শুরু করলো একের পর এক অত্যাচার। এমন অপরাধের শাস্তি ওকে দেয়া হচ্ছে যা করার কথা ও ভাবতেও পারেনা। কিন্তু তাহলে ও শাস্তি পাচ্ছে কেন? এই অত্যাচারের শেষ কোথায়? লেখিকার কথা: সম্পূর্ণ শখের বশে...