পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহে,
মন যখন ডুবে আছে ক্লাইম্যাক্সে,
সেই ফাঁকে, সবাইকে ফাঁকি দিয়ে
পলাতক একটা প্রাণ,
কেউ বুঝতে পারল না,
কেস-ডাইরি পর্যন্ত হল না।
হবেই বা কেন? এ তো খুন নয়,
খবরের কাগজে ছাপার মতো খবরও নয়,
রোজকার দিনপঞ্জিকার ভাঁজে ভাঁজে
এমন শত শত উদাহরণ চাপা পড়ে আছে।
কিন্তু,
অপরাধ তো? কাউকে অপহরণ করা...
খটকা তো লাগবেই।
খবর ছড়িয়ে পড়তেই
সিনেমা হলের পর্দা ফাটিয়ে
হাজারও নক্ষত্রের সমাবেশ,
উৎসাহী মানুষের উপচে পড়া ভিড়,
সবার নজর একটাই চেয়ারে-
অলস, অবশ, ঘাড় গুঁজে বসে আছে
অবিকল একটা মানুষ।
চোখ, কান, নাক সব আছে
যে যার জায়গায়,
তবুও লজ্জাবতী লতার মতো মাথা হেঁট,
শরীর জুড়ে বায়ু চলাচল বন্ধ বলেই
হয়তো তাপ-উত্তাপের বালাই নেই,
চেয়ারের কোণে আধলা ইটের মতো
অবহেলায় আছে পড়ে।
বাজারে খবর-
প্রাণ নেই!
কি অন্যায় আবদার,
নেই কোন প্রতিকার।
কানে কানে কত কথা ছিল,
হাতের পাতায় হাত ধরা ছিল,
এক ধাক্কায় সব মিছে হয়ে গেল,
এতদিনের ভালোবাসা,
কত স্বপ্ন, কত আশা,
কত আপোস, কত আফসোস,
গোপন কত সাংকেতিক ভাষা,
সব কুণ্ডলী পাকিয়ে আকাশে মিলিয়ে গেল।
মাঝ গঙ্গায় কাউকে একা ভাসিয়ে দেওয়া যায়?
দেওয়ালে ছবি সেঁটে কখনো তাকে পাওয়া যায়?
কে বুঝবে?
কাকে বোঝাবে?
এটাই নাকি প্রচলিত প্রথা,
অতএব সাতখুন মাপ।
এই প্রথার বিরুদ্ধাচারণ করতেই কি
গলায় দড়ি দেওয়া?
দশ তলা থেকে ঝাঁপিয়ে পড়া?
সস্তায় নিজেকে বিকিয়ে দেওয়া?