কবিতার নির্যাস গঙ্গার রূপ ধারণ করে,
ভাসিয়ে দিতে পারে
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আদালত চত্বর।
নদীর বেগ বাধা পেলে
নিমেষে ডুবিয়ে দিতে পারে
সযত্নে রক্ষিত, কুক্ষিগত সংস্কার।
শঙ্কিত হতে পারে
সমাজ-সংসার,
এমনই মন্ত্র হল কবিতা।
কবিতা তার স্বপ্নালু, ঢুলুঢুলু
শ্রী-হীন শ্রী ঝেড়ে ফেলেছে,
এখন একেবারে মেদহীন,
দ্বিতীয়ার চাঁদের মতো চকচকে চেহারা।
লজ্জাবতী লতা আর নয় কবিতা।
সস্তা দরে ভাঙা হাটে আর বিক্রি হবে না কবিতা,
নির্জনে উপবাস আর অন্যের উপহাস,
ঢের হয়েছে, আর নয়।
তবে উপায় কি?
সবার মতো, শবের মতো
কবিতা ভোল বদল করেছে।
না,- কোন সর্বনাশ হয়নি।
বিপর্যস্ত বোধ করবার মতো কিছুই ঘটেনি।
কবিতার অর্থ কবিতাই আছে,
স্থান-কাল-পাত্রের সাথে সাথে
রূপ পাল্টেছে,
ভাষা বদলে গেছে,
চাকচিক্য বেড়েছে,
উদাসীনতা কমেছে।
ভাবের পরিবর্তে ভয়,
আর সত্যের জায়গায় মিথ্যে,
স্থান পরিবর্তন করে নিয়েছে।
তাতে খেলা জমেছে,
কবিতার বিক্রি বেড়েছে।
বাজারে প্রচুর দালাল সাধু সেজে বসে গেছে,
বিবেক-বৈরাগ্যের মানেই পালটে দিয়েছে,
বৈরাগ্য এখন বিষয়ে নয় বিবেকে,
কাজেই যা অবশ্যম্ভাবী, তাই হয়েছে –
প্রাণের তাগিদে কবিতা পরিবেশবান্ধব হয়ে উঠেছে।