একটা ছুটির দিন দেখে শমিক, রীনা আর রিনি মার্কেটিঙে বেরিয়েছে। প্রধান উদ্দেশ্য রিনির জন্য তার মনোমতো ফোন কেনা। রিনি অবশ্য বহুবার বিভিন্ন বন্ধুদের সাথে দোকানে গিয়ে ফোন নেড়েচেড়ে দেখে এসেছে, তবুও রীনাদির এক্সপার্ট কমেন্ট ছাড়া কিছু কিনতে সে ভরসা পায় না। রিনির জন্য ফোন পছন্দ করতে করতে রীনার নজর কাড়ল একটা সেট, শমিক আর দেরী করেনি। দু-বাড়ির সবার জন্য কিছু না কিছু নেওয়া হয়েছে, তার সাথে শমিকের জন্য একটা স্যুট জোর করে কিনিয়েছে রীনা। শমিক বারবার অনিচ্ছা প্রকাশ করা সত্ত্বেও কোনও ফল হয়নি।
শমিক যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে বলেছিল, "স্যুট পরে কোথায় যাবো? আমাদের গ্রামে-গঞ্জে কাজ, সেখানে কি এই পোশাক চলে?"
রিনি হেসে জবাব দিয়েছিল, "কেন বিয়েতে পরবি।"
"চুপ কর, সব কথায় কথা বলা চাই।"
রিনি অবাক হয়ে বলল, "বাঃ! খারাপ কি বললাম। ঠিক কি না বলো রীনাদি?"
রীনা তাকে ভালবেসে কাছে টেনে কাঁধে হাত রেখে মুচকি হেসে বলল, "ঠিক বলেছিস, আসলে তোর দাদার এখন খিদে পেয়ে গেছে।"
শমিক সাথে সাথে সম্মতি জানিয়ে বলল, "সেটা ঠিক। সারাদিন যা ঘোরাঘুরি হয়েছে, চলো আগে কিছু খাই।"
গাড়ি ভর্তি জিনিষ নিয়ে ফিরল সন্ধে সাতটা নাগাদ। রীনাদের বাড়ির সামনে নামতেই শমিকের মনে খটকা লাগল, মনে হচ্ছে কিছু একটা ঘটেছে। ঘরে পা দিতেই দেখে কাকু খাটে শুয়ে আছেন, পাশে মা-কাকীমা। সবাই চিন্তান্বিত। পাড়ার ডাক্তার বরেন ব্যানার্জি রুগীকে নানাভাবে পরীক্ষা করছেন, পাশে রতনদা দাঁড়িয়ে। একে-একে রীনা, রিনিও এসে দাঁড়িয়েছে।
রীনা মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে চুপিচুপি জিজ্ঞেস করলো, "কি হয়েছে মা?"
"এই তোর বাবার শরীরটা খারাপ লাগছিল তাই রতনকে দিয়ে ডাক্তারবাবুকে খবর দেওয়া হয়েছে।"
রীনা রতনের দিকে তাকাতেই সে চোখ নামিয়ে বলল, "বাবু যখন এসে গেছে আমি চলি কাকীমা।"
মীনাদেবী সাথে সাথে বললেন, "তুমি যা উপকার করলে, তোমরা সবাই আছো তাই ভরসা।"
![](https://img.wattpad.com/cover/307525455-288-k878166.jpg)
YOU ARE READING
চক্রব্যূহ
General FictionA story about modern-day aspirations and everyday social conflicts.