Chapter-7 | Part-1

14 0 0
                                    

শালিনীর অফিস চার দেওয়ালের মাঝে বন্দী নয়। ভারতবর্ষে তাদের প্রধান অফিস দিল্লিতে, তবে শালিনী কাজ শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে। শালিনী রিপোর্ট করে অ্যামেরিকায় নিউ ইয়র্ক অফিসে, কাজেই দিল্লি অফিসের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা জরুরী নয়। শুরুতে শমিকের বেশ অবাক লাগত, কারণ অফিস বলতে তার যে ধারনা এতদিন ছিল, তার সাথে এই অফিসের কার্যকলাপের অমিলই বেশী। ধরাবাঁধা কাজ সময়ের মাপকাঠিতে বাঁধা তাতে মজার নামগন্ধ থাকে না, তাই সময় কাটতে চায় না। সেই কারণেই অফিসের গতানুগতিক কাজে শমিক আকর্ষণ বোধ করত না, অথচ কাউকে কিছু বলতেও পারত না। শালিনীর সাথে কাজ করার মজাই আলাদা। ল্যাপটপ খুলে বসলেই অফিস শুরু – কখনো পার্কের খোলামেলা পরিবেশে, বা রেস্টুরেন্টে চায়ের পেয়ালা হাতে নিয়ে, আবার কখনো নিরিবিলিতে শালিনীর এয়ারকন্ডিশন আরামদায়ক গাড়িতে।

দু-চারদিন একসাথে কাজ করার পর শমিক নিজেই বিভিন্ন এলাকায় কাজ শুরু করে দিয়েছে। কলকাতায় দীর্ঘদিন থাকার ফলে শহর তার বহুদিনের চেনা, কাজেই যে কোন ঠিকানায় পৌঁছে যাওয়া তার পক্ষে অনেক সহজ, এবং মানুষের সাথে বন্ধুত্ব হতেও সময় লাগে না। বেশ কয়েকটা জেলাতেও সফর করে এসেছে যদিও শালিনীকে নিয়ে আবার যাবে। কাজের গতিতে শালিনীও খুশী। কাজের বাইরে আড্ডাও চলছে। শালিনীর কলকাতায় বন্ধু বলতে একমাত্র শমিক।

তিনটে স্তরে কাজটা ভাগ করা যায়। প্রাথমিক কাজ হল সরকারি তথ্য যোগাড় করা, যেমন কোন প্রকল্পে কত ফান্ড দেওয়া হচ্ছে, এবং সেই অর্থ যথাযথভাবে খরচ হচ্ছে কিনা! তথ্য সংগ্রহের জন্য ওয়েবসাইট আছে, এবং প্রয়োজনে সরকারি আমলাদের সাহায্য পাওয়া যায়। দ্বিতীয় হল - এন. জি. ও. সংস্থাদের ভূমিকা নিয়ে। সরকারি, বেসরকারি বা বিদেশ থেকে যে ফান্ড তাঁরা পাচ্ছেন তা সঠিক প্রক্রিয়ায় ব্যয় করা হচ্ছে কি না? যদি প্রকল্প ঠিকঠাক সম্পন্ন হয় তবে যারা উপকৃত হচ্ছেন তাদের নাম ও ঠিকানা সংগ্রহ করা এবং ব্যক্তিগতভাবে তাদের কাছে পৌঁছে সত্যতা যাচাই করা। যদি কোন প্রকল্প মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়ে থাকে বা আদৌ চালু না হয়ে থাকে তার যথার্থ কারণ জানা। তৃতীয় এবং সবচেয়ে জরুরী হল প্রত্যন্ত গ্রামে একেবারে তৃনমূলস্তরে মানুষের কাছে যাওয়া এবং অনুদান সম্পর্কে যথাযথ তথ্য সংগ্রহ করা।

চক্রব্যূহWhere stories live. Discover now