পরিবেশ পালটাবার জন্য শালিনী বলল, "মা হালকা কিছু নেবে?"
"ডেজার্ট কিছু বল।"
"ঠিক বলেছ।" ঘরে থাকা মেনু কার্ড দেখে একের পর এক নাম বলে যেতে লাগল।
"আরে অত পড়তে হবে না যা হোক কিছু বল। এই পরিবেশে সবই ভাল লাগবে। হোটেলের ঘরটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে। ইন্টারনেট কানেকশান আছে তো? তোর কনফারেন্স কলের তো সময় হয়ে এলো।"
"এখনও দেরী আছে, আগে শমিক আপডেট পাঠাক।"
শমিকের প্রসঙ্গ উত্থাপিত হতেই ঘরে নূতন করে প্রাণের সঞ্চার হল। মিসেস মজুমদার নড়েচড়ে বসে বললেন, "রোজই ভাবি তোকে বলব ওকে একদিন বাড়িতে ডাক।" পরমুহূর্তেই কে যেন ঠোঁটের কোণা থেকে ছোট্ট হাসির ঝিলিক কেড়ে নিলো।
চিন্তিত কণ্ঠস্বরে জানালেন, "না, বাড়িতে নয় অন্য কোথাও মিট করব।"
একটু পরেই আবার হাসতে হাসতে বললেন, "আমার নিজের জীবন নিয়ে এখন খুব হাসি পায়, কিভাবে একটার পর একটা পাতা উলটে যায় আর জীবনের মানে পালটে যায়। এক এক বার মনে হয় তরী ডুবে গেল আবার কে যেন পেছন থেকে টেনে ধরে, আশায় বুক বেঁধে নূতন উদ্দমে শুরু হয় পথ চলা। খুব ইন্টারেস্টিঙ।"
দরজায় বেল দিতেই শালিনী গিয়ে দরজা খুলল। ট্রলিতে সাজিয়ে আনা হয়েছে ডেসার্ট। একটু পরেই শমিকের ফোন। শালিনীর সামনে ল্যাপটপ খোলাই ছিল। সেদিনের কাজের পরিপ্রেক্ষিতে দুজনের কিছুসময় আলোচনা চলল। শমিক কাজে খুবই তৎপর। বর্তমানে বীরভূমে কাজ চলছে। সেখানেই হোটেলে থেকে গেছে। আগামীকাল ওয়ার্কশপ আছে তাই ওকে প্রায় জোর করেই রেখে দিয়েছে এক এন.জি.ও সংস্থা।
এবার উঠল দার্জিলিঙের প্রসঙ্গ। শালিনী হিমালয়ের পাদদেশে পৌঁছাতে পেরে উচ্ছ্বসিত। দার্জিলিং আসার পরামর্শ শমিকই দিয়েছিল, কাজেই তার প্রশংসা করতে ভুলল না। কথায় কথায় শমিকের কাছ থেকে কথা আদায় করে নিলো যে দশ দিনের ভেতর দুজনে আবার এখানে আসবে। শমিককে সে দেখাতে চায় তার চোখে দেখা দার্জিলিং, তাছাড়া সেখানে কাজও আছে। শমিক এক কথায় রাজী। বিদায় জানিয়ে ফোন রাখল দু'জন।
YOU ARE READING
চক্রব্যূহ
General FictionA story about modern-day aspirations and everyday social conflicts.