কুদ্দুস মিয়া গাড়ি চালাচ্ছেন মিডিয়াম গতিতে। অবশ্য এটাও দাদীর আদেশ। দাদী বলেদিয়েছেন,যতই তাড়াহুড়ো থাকুক না কেন আমি যখনই গাড়ীতে থাকব তখন যাতে গাড়ী দ্রুত চালান না হয়। তাই কুদ্দুস মিয়াও আয়েশ করে গাড়ী চালাচ্ছেন।গাড়ী তে রেডিও চলছে,আর সেখনে আমার খুব পছন্দের গান বাজছে 'চিরকুটের -জাদুর শহর'। আমার দৃষ্টি বাহিরে। বাহিরের আবহাওয়াটা খুব ভাল লাগছে। স্নিগ্ধ বাতাস বইছে। আকাশটা দেখতে বেশ ভাল দেখাচ্ছে। শরতকাল প্রায় শেষের দিকে, তাই হয়তো মিষ্টি রোদ চারিদিকে বিরাজ করছে। কেন যেন মনে হচ্ছে এবার শীত খুব ভাল ভাবেই পড়বে। কিন্তু আমি কী পারব এইবারের শীত আমার পরিবারের সাথে কাটাতে? মনে হচ্ছে না.....।
তখন চিরকুটের কন্ঠে ভেসে আসল এই লাইনটি 'এ শহর জাদুর শহর প্রানের শহর ঢাকারে'। আসলেই জাদুর শহর,প্রানের শহর এই ঢাকা শহর।কত মানুষ এই শহরে, প্রত্যেকের আলাদা আলাদা জীবন,কাহীনি আলাদা,সব আলাদা,হাসি,কষ্ট, মায়া,ভালবাসা সব আছে এখানে। তবুও সবাইকে আগলে রেখেছে এই শহর।কিন্তু একটি জায়গায় আমাদের সকলের মিল রয়েছে। তা আমরা সকলেই এই শহটিকে অনেক ভালবাসি।কেমন যেন এক মায়া কাজ করে এই শহরকে ধিরে। যা বলে বুঝানো যাবে না। আমি ভাবতেই পারছিনা এই শহরকে কিছুদিনের মধ্যে আমার বিদায় যানাতে হবে।আমার জায়গা হয়তো দখল করবে অন্য কোন জেনী।কিন্তু এই শহর,আর এর মানুষ গুলোকি আমাকে এত সহজে ভুলে যাবে? কিন্তু আমিতো পারবনা, কোন দিনও ভুলতে।আমি তো সবসমই খুব মিস করব।পৃথিবীর যেখানেই থাকি না কেন যত সুন্দর শহরেই যাই না কেন।
শীতের কথা মনে পরলেই আমার আগের সব স্মৃতি মনে পরে যায়। যখন বাবা বেচে ছিলেন তখন আমি,ভাই আর বাবা মিলে কত উদ্ভট কাজ করেছি। আমি সাতার পারি না তবুও পানি দেখলে নিজেকে পানিতে নামা থেকে বিরত রাখতে পারি না। বাবা সরকারি কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। তাই আমরা সরকারি বাসভবনে থাকতাম,আবাসিক এলাকায়। আর সেখানে খুব সুন্দর আর খুব বড় একটা পুকুর ছিল। কনকনে শীতে আমারা রাতে বেলায় বরফের মত ঠান্ডা পানিতে কোমড় পর্যন্ত ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম। সময় নির্ধারিত থাকত ৫ মিনিট। যে জিতবে সে পাবে আকর্ষণীয় পুরষ্কার। ভাই সবসময় জিত্ত,আর পুরষ্কারও ঐ পেত।তবে পুরষ্কারগুলো ঘুরে ফিরে আমার কাছেই আসত।ভাই যেখান থেকেই যা পেত সব আমার জন্য রেখে দিত।আমার বড় ভাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বড় ভাই। তবে আমার ছোট ভাই আমাদের সাথে সব পাগলামিতে থাকত না। কারন ও আমাদের অনেক ছোট ছিল আর খুব তাড়াতাড়ি অসুস্থ হয়ে যেত। তাই মা ওকে এইসব থেকে একটু দুরেই রাখত।
YOU ARE READING
ভালবাসার অপেক্ষায়...
Romanceজিনীয়া ইসলাম জেনী। "ভালবাসা" ...এই শব্দ থেকে সে এখন পালিয়ে বেড়ায় । এর পেছনে অবশ্যই কারণ আছে । কারনটি হল সে যাকেই ভালবেসেছে সেই তাকে ছেড়ে চলে গেছে ।এজন্য সে ভালবাসতে ভয় পায় । ১৮ বছর বয়সে জেনী জানতে পেরেছিল তার জীবনের অপ্রিয় সত্যগুলো ।সবকিছু জেনে...