৭ম অংশঃ২য় পর্ব

398 11 1
                                    

তবে তার চেহারা দেখে মনে হচ্ছে তার ধ্যর্যের বাধ ভেঙ্গে যাচ্ছে । তবে তার বিভ্রান্ত চেহারা দেখতে খুব ভাল লাগছে । আমি আমার মুখ না ধুরিয়ে শুধু চোখ বা দিকে ঘুরিয়ে ক্লাস ভর্তি অডিয়েন্সদের দেখলাম তাদের অবস্থা কী ।তাদের দেখে মনে হচ্ছে তারা খুব মজা পাচ্ছে ।তবে খুব সিরিয়াস ভাবে আমাদের কথা গিলছে । হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে । যাক ম্যডাম না হোক সাধারন জনতা মজা পাচ্ছে । এটাই বেশী ।


তারপর সেই কাক্ষীত মুহূর্ত বলে এল । ম্যডামের চোখ রাগে জ্বল জ্ব্ল করছে, পুরো অগ্নি কুন্ডের মত । মনে হচ্ছে দূর্গার মত চোখ দিয়ে এখনি আগুন বের হবে। আর আমাকে জ্বালিয়ে ভস্ম করে দিবে । তারপর সে হুংকার দিয়ে বলল "ফাজলামি, আমার সাথে ফাজলামি কর তুমি ? নিজেকে কি খুব ভাল স্টরি টেলার বা কমেডিয়ান মনে কর ? তুমি কি ভাব আমার মুখে গাধা লিখা আছে "। Oh My God একসাথে এতগুলো প্রশ্ন...কীভাবে উত্তর দেই, হাহাহা । তিনি বলেই যাচ্ছেন "তুমি কী ভাব আমি বোকা, আমি কিছু বুঝি না ? তুমি আমার সামনে দাঁড়িয়ে কী করার চেষ্টা করছ আমি তা খুব ভাল করেই তা জানি । তোমার মুল উদ্দেশ্যই হল আমাকে বিরক্ত করা আর আমাকে রাগান " ।


এখন আমাকে আর বেশী কিছু বলা যাবে না । কিছু বললেই তা একটু বেশী হয়ে যাবে। তাই আমি মাথা নিচু করে মাটির দিকে তাকিয়ে বললাম " সরি ম্যডাম আর দেরি হবে না" । গত তিন বছর ধরে একি কথা বলে আসছি ।কিন্তু কি করা দেরি আমার পিছু ছাড়ে না । যাক আপাতত সরি বলার কারনে বকা এবং আমার জন্য অপেক্ষায় রত বড় লেকচার থেকে হয়তো বেচে গেলাম ।


মানুষের একটা স্বভাব তা হল তারা অন্যর কাছে সরি ধন্যবাদের চাইতে বেশী শুনতে ভালবাসে । যদি সামনের মানুষ দোশ নাও করে থাকে । সরি বলার সাথে সাথে ম্যডামের কন্ঠ কিছুটা নরম হয়ে এল । আর তার কিছুক্ষন পরই তিনি আমাকে জায়গায় গিয়ে বসতে বললেন । তারপর তিনি আবার ক্লাস করান শুরু করলেন ।


সবাই ভেবেছে আমি হয়ত বাসের কথা মিথ্যা বলেছি । কিন্তু না আমি কিন্তু সত্যি বলেছি ।আসলেই আমি ড্রাইভারটিকে জেলে পাঠিয়েছি । তবে কেন তার পেছনে কারন আছে । কলেজে ঢোকার আগে আমার বাবা খুব কাছের এক বন্ধু, যিনি পুলিশের এস.আই তাকে ফোন দিয়েছিলাম এবং তাকে সব বলেছি কি হয়েছিল তখন । আর কেন আমি তাকে জেলে পাঠিয়েছি । তিনি আমাকে বললেন কোন চিন্তা না করতে বিকালের মধ্যে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে । তাই আমাকে দাদীর বাসায় যাবার আগে রমনা থানায় গিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনতে হবে । আমি না গেলেও হবে ।কিন্তু আমি তার সাথে দেখা করতে চাই এবং তাকে তার বাসা পর্যন্ত পৌছে দিয়ে আসতে চাই । কারন আজ আমার কাছে গাড়ি আছে। গাড়ি থাকতেও যদি গাড়ির ফায়দা না উঠানো যায় তবে কি হল ।


এর মাধ্যে আর একটা মজা হল গাড়ির ড্রাইভার কুদ্দুস মিয়া ওরফে কুম্ভকরন যিনি আমাকে মটেও পছন্দ করেন না । এর পেছনের কারন হল আমি যখনি গাড়ি পাই তখনি এর সৎ ব্যবহার করি ।যাকে বলে সুযোগে সৎ ব্যবহার । উট যেমন পেটে পানি জমিয়ে রাখে , আমিও তেমনি আমার যেই জায়গায় যাবার ইচ্ছা থাকে সেগুলো জমিয়ে রাখি । আর জখন গাড়ি পাই তখন করি তুমুল ঘোরাঘুরি । দাদি বলে গাড়ি এটা আমার কাছে রেখে দিতে, কিন্তু আমি রাখি না কারন সবসম গাড়ির সুবিধা পেলে আমি ঘোরাঘুরি করার এমন এক্সাইটেশন হারি ফেলব । আর কুম্ভকরন কেউ এভাবে প্যারা দেয়া যাবে । না হলে কার সাথে টম এন্ড জেরী খেলব ।


তাই ভার্সিটি শেষ করে আমার কাজ হল আমার বাসায় যাওয়া ।বাসা থেকে বের হয়ে থানায় যাওয়া । এরপর বাস ড্রাইভারকে তার বাসায় পৌছে দেয়া এবং সবশেষ দাদীর বাসায় যাওয়া ।




ভালবাসার অপেক্ষায়...Where stories live. Discover now