আজীবন সাজা

1.3K 36 2
                                    

আইরিন খানম বেশ কিছুটা সময় সামনে বসা ছেলে আর মেয়ে দুটোর দিকে তাকিয়ে রইলো । তিনি এখনও ব্যাপারটা খানিকটা হজম করে নিতে পারছেন না । তার ১৩ বছরের পুলিশী ক্যারিয়ারে অনেক রকম ঘটনার সম্মুখীন তিনি হয়েছেন তবে এমনটা ঘটনা এই প্রথম । এমন ঘটনা তিনি শুনেছেন যে খুনি, খুন করে এসে থানায় ধরা দিয়েছে । কিন্তু একজন ধর্ষক, ধর্ষন করে এসে থানায় এসে ধরা দিয়েছে টাও আবার ভিটটিমকে সাথে নিয়ে এমন ঘটনা তার জীবনে কোন দিন হয় নি । তিনি এমন কথা শুনেনও নাই ।
তিনি আরেকবার সামনে বসা ছেলে আর মেয়ে দুটোর দিকে তাকালো । দুজনের বয়স কাছাকাছি হবে । ছেলেটার বয়স ২৭/২৮ অন্য দিনে মেয়েটার ২৫/২৬ । এরা যে পরিচিত সে বিষয় কোন সন্দেহ নেই । ছেলেটা মাথা নীচ করে বসে আছে । মেয়েটা চুপ করে থাকলেও ভেতরে ভেতরে যে কান্না আটকে রেখেছে সেটা বুঝতে আইরিন খানমের বুঝতে কষ্ট হল না !

আইরিন খান ওদের দুজনের দিকে তাকিয়ে বলল
-কি নাম তোমাদের ?
মেয়েটা বলল
-আমি নীষাত । ও শুভ !
-আচ্ছা ! কিভাবে চেনো তোমারা দুজন দুজন কে ?
এবারও দেখলে মেয়েটাই মুখ খুলল কথা বলার জন্য । তানিয়া খানমের মুখে একটা ছোট্ট হাসির রেখা দেখা দিল । উণি যা ভেবেছিলেন তেমনই কিছুই ।
নীষাত বলল
-আমরা একই অফিসে চাকরি করি !
-আচ্ছা !
-তোমাদের ভেতরে কোন রিলেশন ?
নীষাক মাথা নাড়ালো । আইরিন খানম বলল
-তবে তোমরা ভাল বন্ধু রাইট ? কারন বন্ধু না হলে শুভ কোন দিন তোমাকে এখানে নিয়ে আসতো না ।

দুজনেই চুপ করে রইলো । কেউ কোন কথা বলছে না দেখে আইরিন খানম বলল
-আচ্ছা আমি বলি কি হয়েছে !
দুজনের কেউ কোন কথা না বলে চুপ করে আগের অবস্থানেই বসে রইলো । শুভ এখনও মাথা নিচ করেই বসে আছে ।

আইরিন খানম বলল
-শুভ তোমাকে পছন্দ করে । এবং তোমার সাথে অন্য কাউকে সহ্য করতে পারে না । কিন্তু তুমি ওকে এই চোখে দেখো না । গতকাল এমন কিছু হয়েছে যাতে শুভ নিজের উপর নিয়ন্ত্রন হারিয়েছে । তোমার উপর হাতও তুলেছে আমার মনে হয় ? রাইট ?

আইরিন খানম নীষাতের চেহারার উপর কিছু লাল রেখা দেখতে পেয়েছেন ঘরে ঢোকার সময়ই । নিষাক কোন কথা বলল না ।
-তারপর সে তোমাকে রেপ করেছে । কিন্তু রাগের মাথায় কাজটা করার পর যখন তার রাগ ঠান্ডা হয়েছে তখন সে বুঝতে পেরেছে সে কতবড় ভুল করেছে । তাই নিজের অপরাধের বোঝাটা ঠিক স হ্য করতে না পেরে তোমাকে এখানে এনেছে ।

ভালবাসার অনু-গল্প সমগ্রWhere stories live. Discover now