পুরানো ফ্ল্যাটটির গল্প

0 0 0
                                    

আমার খুব পছন্দের এক শিক্ষক দুরিয়া মিস। তিনি প্রায়ই ক্লাস শেষে সময় থাকলে, আমাদের গল্প শোনাতেন। একদিন তিনি আমাদেরকে ধানমন্ডির একটি পরিবারের গল্প বলেছিলেন। তারা দুরিয়া মিসের বাসার কাছাকাছি থাকতেন।

তার গল্প অনুসারে, পাশের বিল্ডিংয়ের একটিতে একটি পুরানো পরিত্যক্ত ফ্ল্যাট ছিল। এবং সম্প্রতি একটি দম্পতি সেখানে উঠে। এটি ছিল ধানমন্ডির কমার্শিয়াল এলাকায় একটি চমৎকার ফ্ল্যাট। স্বাভাবিক ভাবেই এর মূল্য বেশি হওয়ার কথা কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়  কাছাকাছি অন্যান্য ফ্ল্যাটের তুলনায়, তারা এটি তুলনামূলকভাবে কম খরচে পেয়েছে। এবং কেউ জানত না কেন এটি এত সস্তা ছিল।

প্রথম দিন থেকেই, ফ্ল্যাটে একধরনের অদ্ভুত ও শ্বাসরুদ্ধকর অনুভূতি হচ্ছিল।তারা ভেবেছিল একটি নতুন জায়গায় আসছে বলে হয়ত তাদের  সামঞ্জস্য করার জন্য আরও কিছু সময় প্রয়োজন। কিন্তু শীঘ্রই তারা তাদের সমস্যার চরমসময় পৌঁছে যায়। তারা অনুভব করতে শুরু করে যে রান্নাঘরের কিছু পাত্র হঠাৎ হারিয়ে যাচ্ছে এবং প্রায়শই তাদের অবস্থান পরিবর্তন করছে।আবার মাঝে মাঝে মাঝরাতে পায়ে হাঁটার আওয়াজ পেত, যেন কেউ ফ্ল্যাটের আশেপাশে হেঁটে বেড়াচ্ছে। তারা অনুভব করত যে তাদের দেখা হচ্ছে এবং কিছু বা কেউ তাদের অনুসরণ করছে।মাঝেমধ্যে আবার মাঝরাতে, কারও কান্না শুনতে পেত, যেন কেউ খুব কষ্টে আছে। তবে তারা সব কিছু উপেক্ষা করেই চলছিল। তারা হয়ত ভেবেছিল, এইটা সামান্য কোন জিনিস, কিন্তু তাদের এই ভুল ধারনা খুব দ্রুতই ভুল প্রমাণিত হল।

একদিন রাতে, যখন মহিলাটি  টয়লেটে গেল, সে হঠাৎ অনুভব করল, যেন একটা ঠান্ডা হাত তার গলা চেপে ধরছে। সে শ্বাস নিতে পারছিল না, এবং একটা পর্যায়ে গিয়ে জোরে চিৎকার করে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এই শব্দের ফলে তার স্বামী ঘুম থেকে উঠে যায় এবং টয়লেটের দরজা ভেঙে দেখে তার স্ত্রী মেঝেতে পড়ে আছে এবং তার মাথার পেছন থেকে রক্ত ​​বেড়হচ্ছিল।  তাড়াতাড়ি করে তার স্ত্রীকে কাছের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঠিক সময় হাসপাতালে পৌঁছানোর কারণে মহিলাটি প্রাণে বেচে যায়। জ্ঞান ফিরে আসার পর, সে তার স্বামীকে ঘটনাটি জানায় এবং সাথে সাথে তারা ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

তারা চলে যাওয়ার পড় পুলিশ আসলে, এলাকায় গল্পটি ছড়িয়ে পড়ে। বাড়ির মালিক জানান যে, কয়েক বছর আগে এক দম্পতি এখানে থাকতেন।যেখানে স্বামীটা ছিল খুব আগ্রাসী ছিলেন এবং প্রায়ই তার স্ত্রীকে মারধর করত। একদিন ওই লোক রাগের মাথায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তার স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যা করে। হত্যার করার কিছু দিন পরে, আসে পাশের লোকেরা অদ্ভুত গন্ধ সম্পর্কে অভিযোগ করা শুরু করে। তাই তারা দরজা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয়। দরজা ভেঙে দেখে মহিলাটির লাশ মেঝেতে পড়ে আছে। মহিলাটির স্বামী পালিয়ে যাওয়ায় সবাই বুঝতে পারে, যে এই খুনটি কে করেছে। সেই ঘটনার পর থেকে নীচ তলার বা উপরে বসবাসকারী লোকেরা প্রায়ই নাকি অদ্ভুত শব্দ শোনার অভিযোগ করতো। আর তারপর থেকে ফ্ল্যাটে আর কেউ আসেনি।



Bhooter rajje ek dinWhere stories live. Discover now