জাহাজ বাড়ির গল্প

0 0 0
                                    

সেই নব্বইয়ের দশকের কথা,করিম মিয়া একটি মাল বাহি জাহাজে কাজ করতেন।কাজের কারণে দেশ- বিদেশ পাড়ি দিতেন।মাসের পর মাস সমুদ্রে কাটাতেন।তার পরিবারের সাথে বছরে দুই চার বার দেখা হতো।টাকার কারণে তাকে এই পেশা বেছে নিতে হয়েছিল,তবে সে তার কাজের প্রতি বেশ মনোযোগী।একবার সেই রকম একটি সফরে রুশ জাচ্ছিলেন।সেখানে তার দেখা হয় জাইক হোসেন এর সাথে।জাইক হোসেন একজন পাকিস্তানি ক্যাপটেন।এই জাহাজে নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন।মানুষটি বেশ ভালো মনের।সবার সাথে ভালো ভাবে কথা বলেন।নিয়মিত সব নামাজ পরেন।একবার ফযরের নামাজ পরার জন্য করিম মিয়া জাহাজের মসজিদে গেলেন তখন তার সাথে পরিচয়।করিম মিয়া জাহাজের মসজিদে ইমামতি করতেন।দুই জনের মধ্যে বেশ ভালো বন্ধুত্ব ছিল।প্রতিদিন সবার আগে জাইক হসেন মসজিদ প্রাঙ্গণে হাজির হতেন।দুজনে মিলে মসজিদ পরিচালনা করতেন।জাইক হোসেন প্রতিদিন মাগরিবের পর আর জুম্মার দিন হাদিস বয়ান করতেন।রুশ থেকে ফেরার পথে জাইক হোসেন অসুস্থ হয়ে পরেন।প্রথমে সর্দি,তার পর কাশি এক পর্যায় জ্বরই এসে পড়লো।সবাই উনাকে নিয়ে চিন্তিত ছিলেন।সেই বছর ঠান্ডাও বেশ পরেছিল।এসিস্তেন্ট ক্যাপটেন মোহাম্মদ রাসেল জাইকের অবর্তমানে ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পালন করছিলন।জাইক হোসেনের শরীর দিনের পর দিন খারাপ হচ্ছিল।হাটাতো দূরের কথা,বিছানার থেকে উঠতেও পারছিলেন না।চোখ নাখ সব লাল হয়ে গিয়েছিল।ব্যথা আর যন্ত্রণায় ছট-পট করছিলেন।ডায়রিয়া হয়ে শরীর থেকে তরল বের হয়ে শরীর আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছিল।বলছিলেন আর কতদিন লাগবে ডেকে পৌঁছতে।তিনি তার স্ত্রী আর সন্তানদের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য মরিয়া হয়ে পরেছিলেন।কিন্তু তাদের আর দেখা হলো না।১৫ দিন ব্যথা সোয্য করে অবশেষে জাইক হসেন মৃত্যু বরন করে।সবাই শোকে ছিল,কিন্তু এর মাঝে মাথা চারা দিয়ে উঠলো আরেক সমস্যা।এখনও ডেকে পৌছাতে দেড়ি আছে।লাশ লাখার জায়গা নেই।ঠিক করা  হলো লাশটি আপাতত দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি ঘরের পাশে হিমাগারে রাখা হবে।এই ধরনের জাহাজ গুলোতে খাবার সামগ্রী রাখার জন্য বড় বড় হিমাগার থাকে।ওইখানেই লাশটি নিয়ে যাওয়া হলো।ইসলামির সরিয়ৎ অনুযায়ী লাশটি চাদর দিয়ে ঢেকে রাখা হলো।



Bhooter rajje ek dinWhere stories live. Discover now