৪৫

579 32 10
                                    

"উমম.. শোন না আমি আর খেতে পারছিনা। কেমন বমি বমি ঠেকছে।"

নিঝুম কাঁচুমাচু ভঙ্গিতে বলে উঠল। ওর আসলেই খুব লজ্জা লাগছে, অরণ্য এত আগ্রহ করে চা খাওয়াতে নিয়ে আসল আর ও খেতেই পারছেনা। চা টা চমৎকার কিন্তু ওর আবার গলা জ্বলা শুরু হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে এক্ষুনি বমি করতে পারলে ওর ভালো লাগত।

অরণ্য সাথে সাথে নিঝুমের হাত থেকে চায়ের গ্লাসটা নিয়ে নিল। ওর নিজের চা খাওয়া হয়ে গেছে অনেক আগেই, নিঝুমের অবশিষ্ট চাটুকু নিয়েও কয়েক চুমুকেই সেটা শেষ করে ফেলল।

"আপনি তো প্রচুর চা খেতে পারেন মনে হচ্ছে," ফাহিম এতক্ষণ নিঝুমের চা খাওয়া দেখছিল চুপ করে, বাকি চাটুকু অরণ্যকে খেতে দেখেই চোখ দ্রুত অন্যদিকে সরিয়ে নিল।

"আপনি পছন্দ করেন না বোধহয় তেমন একটা," ঠক করে চায়ের গ্লাসটা দোকানির চুলার পাশের টেবিলটাতে রাখল অরণ্য। ফাহিমের মুখ দেখে বোঝ যাচ্ছে ফাহিম কষ্ট পাচ্ছে কিন্তু অরণ্য এখানে  কীবা করতে পারে।

ঝুমকে ফাহিমের সাথে ও মরার আগ পর্যন্ত যেতে দিবে না কিন্তু ছেলেটা কষ্ট পাচ্ছে সেটা দেখেও অরণ্যর কষ্ট লাগছে এখন। ভালবাসার মানুষটাকে অন্যের সাথে দেখলে ভীষন কষ্ট হয়। মুখে যতই বলা হোক তুমি সুখে থাকলে আমি সুখি কিন্তু আসল কথাটা আসলে অনুচ্চারিতই থেকে যায় যে, সেই সুখি তুমিটার সাথে আমি আসলে সবসময় আমাকেই চাই।

অরণ্য খুব করে চাইছে আশুর সাথে ফাহিমের খুব গাঢ় একটা মানসিক বন্ধন তৈরী হোক। ঝুম বারবার কেবল আশুর নিরাপত্তা নিয়ে অস্থির হয়ে আছে কিন্তু ফাহিম এখন ডিপ্রেশন আছে। কারও শক্ত কাঁধ এখন ওর দরকার। অরণ্যর স্বান্তনাবাক্য এখানে উল্টো কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো লাগবে ফাহিমের কাছে।

হিংসার বদলে এখন এই ডাক্তার রুগী ঠিক করার মহান ব্রতই অরণ্যর মাথা পাগল করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। মনে মনে শাশুড়ির  চোদ্দগুষ্টি উদ্ধার করল ও। কী ফ্যাসাদেই না ফেলছে ওকে। তারউপর এভাবে এই ডাক্তার বাবাজী লাইনে আসবে না... নিঝুমের পাশে বসতে বসতে সেটাই মাথার মধ্যে ঘুরতে লাগল অরণ্যর।

লুকোচুরি Where stories live. Discover now