প্রথম পর্ব

676 5 0
                                    

"শাড়িটা খুলে ফেলো রিমা।"

আমার শাশুড়ি আম্মার এই বক্তব্যে আমি নিজের চোখের পানি ধরে রাখতে পারছি না।সবার সামনে আমাকে এই কথা তিনি কিভাবে বলতে পারলেন! আমি আম্মার কথায় কিছুটা বিরক্তিভাব প্রকাশ করলে তিনি আমাকে আরও জোরে ধমক দিয়ে বলেন,"তোমাকে না বললাম শাড়িটা খুলো!"

আম্মার এই ধমকে আমার চোখদিয়ে গড়গড় করে পানি বেয়ে পড়ছে। সেটা আমার স্বামী রিশাদ খেয়াল করল। কিন্তু সে কিছুই বলছে না; আমিই তাকে না করেছি কখনো আমার পক্ষ নিয়ে আম্মার সাথে তর্ক না করতে। আম্মা এমনিতেই আমাকে পছন্দ করেন না। তার উপর আমার পক্ষ নিয়ে যদি কিছু সে বলেও তাহলে তিনি ভাববেন আমি তার ছেলেকে আমার বশে এনে ফেলেছি।

আমি শাড়িটা পাশের রুমে গিয়ে খুলে ফেললাম। রিশাদ আমার পিছন পিছন রুমের ভিতর ঢুকল।

"কি দরকার ছিল তোমার?", রিশাদের প্রশ্নে আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না সে কি বুঝাতে চাচ্ছে।

" কি?"

"আম্মার পুরোনো শাড়িটা কেন পরলে। জানো না আম্মার কত স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই শাড়িতে।"

"আমি বুঝতে পেরেছি রিশাদ। তবে বড় ভাবি যখন শাড়িটা পরেছিল তখন তো আম্মা কিছু বলেননি!"

"আহা বাদ দাও না!"

"বাদই দিলাম। আমার ভুলটা কোথায়? আমার মধ্যে কি কোনো কমতি আছে? আমার ভুল কি শুধু প্রেম করে বিয়ে করাটাই?"

রিশাদ শান্ত স্বভাবের মানুষ। তাকে এত কথা বলার পর সে কিছু বলল না। চুপ করে রুমের দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে আমার কাছে এলো।

"এই নাও তোমার জন্য এনেছি।"

পকেট থেকে সুন্দর একটা হাতের ব্যান্ড এনে আমার হাতে পড়িয়ে দিল। আমি খুব খুশি হলাম। রিশাদ বারবারই আমাকে খুশি করে রাখার চেষ্টা করে থাকে। বিয়ের আগে প্রেমের সময় যখন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কখনো আমাকে ছেড়ে যাবে না। সাত বছর পরও সে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় একপাও পিছপা হলো না।

শাড়িটা খুলে ভাজ করে আমি দরজার লক খুলে বাইরে বেরুলাম। আমার মন এখন আর কষ্টের মধ্যে নেই। মুহুর্তেই রিশাদ আমার মনটা ভালো করে দিল। তাই আম্মার রাগের কথা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম। আম্মার কাছে শাড়িটা দিয়ে বললাম,"আম্মা আমার ভুল হয়ে গেছে। আমাকে মাফ করবেন। আপনাকে না জানিয়ে আর আপনার আলমারি খুলব না। "

শাড়িটা খুলে ফেলো রিমা!Where stories live. Discover now