পথে হলো দেখা

100 13 14
                                    

- প্রথমবার একা যশোরে যাচ্ছেন বুঝি?

মায়ের সাথে কথা বলে ফোনটা ব্যাগে ঢুকাতেই পাশের সিটে বসা লোকটা নীলিমা কে কথাটি বলল। নীলিমা প্রথমে একটু অবাক হলেও পরমুহূর্তেই বলল,

- জ্বী! আপনি কিভাবে বুঝলেন?


লোকটি হেসে বলল,
-

বাস ছাড়ার মাত্র ১৫ মিনিট হয়েছে। এরই মধ্যে আপনাকে আপনার মা কম হলেও ৬-৭ বার ফোন দিয়েছেন। এ থেকেই একটু আন্দাজ করলাম আরকি!


নীলিমাও হেসে বলল,
- হুম! আসলে প্রতিবার ঢাকা থেকে যাবার সময় কেউ না কেউ থাকেই। কখনো কোনো কাজিন, কখনো বা ভাইয়া। কিন্তু এবার আমার কিছু কাজের জন্যই একটু দেরি হয়ে গেল যেতে!

- ও আচ্ছা!

নীলিমা বলল,
- আপনিও কি একাই যাচ্ছেন?

- জ্বী, তবে তৃতীয়বার।

- ও আচ্ছা!

একটু থেমে লোকটি বলল,
- নামবেন কোথায়?

- মণিহার বাস স্টপেজে। আপনি?

- মণিহার থেকে ১.২ কিলোমিটার সামনেই শংকরপুর বাস টার্মিনালে।

- ও আচ্ছা! ভালো কথা, আপনার নামটা তো জানা হলো না?

লোকটি হেসে বলল,
- আমি অয়ন, অয়ন আহমেদ। আপনার নাম?

- নীলিমা। নীলাঞ্জনা নীলিমা।

- বাহ! খুব সুন্দর নাম তো! একেবারে কাব্যিক কাব্যিক ধরণের! লেখালেখি করেন নাকি?

- এই.... মাঝে-মধ্যে.... একটু-আধটু।

এরপর আর কেউ কোনো কথা বলে না। নীলিমা বাসের জানালায় মাথা রেখে ঘুমিয়ে যায়। এতক্ষণ অয়ন নীলিমাকে ভালোমতো খেয়াল করেনি। হঠাৎই অয়ন অনিচ্ছাকৃতভাবেই নীলিমার দিকে তাকালো।

নীলিমাকে দেখতে আসলেই বেশ সুন্দর। টানা টানা দুটি চোখ। সুন্দর লম্বাটে নাক, ঠোঁটের ডানে একটা ছোট্ট তিল যেন সৌন্দর্যকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে! পরনে নীল-সাদা কামিজ। মোট মিলিয়ে আসলেই নিজের নামের সার্থকতা প্রমাণ করছে এসব কিছু!

এসব চিন্তা দূর করার জন্য কানে ইয়ারফোন ঢুকিয়ে প্রিয় একটা গান ছেড়ে দিল অয়ন। গান শুনতে শুনতে চোখদুটো লেগে এসেছে। কতক্ষণ হলো, মনে নেই অয়নের।

হঠাৎই বিকট এক শব্দে এবং প্রচন্ড ঝাঁকিতে ঘুম ভাঙে অয়ন ও নীলিমাসহ বাসের অন্যান্য যাত্রীদের!

---------------------------------------------------------------------------

নীলাঞ্জনা নীলিমা
২৩.১০.২০২০
শুক্রবার

পথের মাঝের গল্প حيث تعيش القصص. اكتشف الآن