চ্যাপ্টার ১০

342 17 2
                                    

বিদায়টা যেভাবেই হউক, তানভীর নিজের উদ্দেশ্য পূরণে সফল হয়েছে। রাতে দাদীকে খাইয়ে অ্যাসাইনমেন্টের কাজ করার সময় ওর বলা প্রতিটা কথা বারবার মাথায় সুড়সুড়ি দেয়া শুরু করে।
“আঙুল স্যুভেনির হিসেবে রাখা একটু জটিল প্রক্রিয়া।”
দরজার কাছে বাবা হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে বলে। বাবা কখনো হিউমান অরগান ট্রফি কিংবা স্যুভেনির হিসেবে কালেক্ট করতো না। বাবার স্যুভেনির কালেকশন পুলিশ জব্দ করলেও আইদাদের কাছে কয়েকটা থেকেগেছে। আইদাদ টেবিলের ড্রয়ার খুলে চামড়ার ব্যাগ বের করে। চোখের সামনে থাকাতেই হয়তো কেউ ধারণাও করতে পারেনি এগুলোও বাবার স্যুভেনির কালেকশনের অংশ।
“দুইটা কেটে একটা ফেলে গেছে প্রথমে, এবার তিনটা কেটে একটা ফেলে গেছে।”
আইদাদ বাবার দিকে তাকায়,
“কী বলতে চাইছে লোকটা?”
মাহবুব আজম দুই হাত তুলে কাঁধ ঝাঁকায়,
“নো আইডিয়া! সবারই নিজস্ব স্টাইল থাকে।”
“হুঁম। তা ঠিক।”
জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়ায় ও। একটা লোক সিগ্রেট ফুঁকতে ফুঁকতে হেঁটে গেল। রাত-বিরাতে মাতাল হয়ে অনেকেই হেঁটে বেড়ায় রাস্তায়। খুন-খারাবি হোক আর যাই হোক, এদের স্বাভাবিক জীবনে এসবের প্রভাব পড়ে না। তথাকথিত স্বাভাবিক মানুষের জীবনেই যত কিছুর প্রভাব পড়ে।
“কী ভাবিস?”
আইদাদের পাশে এসে ওর বাবা দাঁড়ায়। বাবা সাধারনত আইদাদকে তুই করে সম্বোধন করতো না। অল্প বয়স থেকেই আইদাদকে নিজের সমবয়েসী লোকের মত প্রাধান্য দিয়েছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ওর মতামত নিয়েছে। তাই হঠাৎ হঠাৎ যখন তুই করে বলতো, কানে লাগতো। আজ অবশ্য লাগছে না। খুব স্বাভাবিকই মনে হচ্ছে। আইদাদ ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলে,
“আমার মনে হয় ....”
কথাটা উচ্চারন করবে কিনা একবার ভেবে নেয় ও। রুম ফাঁকা। বাবা পাশে নেই। কিন্তু কথাটা কাউকে বলা খুব দরকার। অন্য কাউকে না, কথাটা আসলে তানভীরকে বলা দরকার।
ফোন বন্ধ।
আইদাদ মেসেজ টাইপ করে। ভোর হতে হতেই তানভীর ফোন অন করবে । আর মেসেজটা পড়ে নাস্তা না করেই যদি চলে আসে আইদাদ অবাক হবে না।
আইদাদ মেসেজের ডেলিভারী রিপোর্টের আশায় বসে না থেকে ঘুমুতে যায়। বাবা সবসময় বলতো, মাথা ঠান্ডা রাখার জন্য ঘুম খুব জরুরী।

উত্তরাধিকার Where stories live. Discover now