Part - 33

143 6 0
                                    


পিছু ফিরে এসে বিছানায় ধপ করে বসে গেল মায়া। ওকে বসতে দেখে লিয়া কিছুটা উদ্ভিগ্ন হয়ে জিজ্ঞেস করল
---- রাণী মায়া! কি হয়েছে? কি জিনিস রয়ে গেছে আপনার বলুন। আমি এক্ষুনি নিয়ে আসার চেষ্টা করছি।। 
কাঁপা কাঁপা চিন্তিত চোখে মায়া লিয়ার দিকে তাকালো। তারপর ভাবতে লাগলো।। কি করা উচিত তার এখন?
---- রাণী মায়া?
---- হুহ
---- বলুন!
---- আমি এখন একটু একা থাকতে চাই।। আ-আমাকে একা থাকতে দাও।
---- কিন্তু রাণী মা,,,,,,,
---- লিয়া?
---- জো হুকুম রাণী মায়া।
লিয়া চলে গেল।। মায়া ভাবতে লাগল আর ঢোক গিলতে লাগল। অলোক কি কিছু বুঝে গেল? যদি ওই দাসী কে খুন হয়ে থাকে তাহলে বার্বান দের হাতে হয়েছে।। কেননা তার লাশ মহলের বাইরে তখন পাওয়া গিয়েছিল যখন তার গুপ্ত সংবাদ ওই দাসীটির দ্বারা পাঠাচ্ছিল।। মানে ঠিক এরকম টা দাড়াচ্ছে যে মায়ার গুপ্ত পত্র চালান করার সময় দাসী টি ধরা খায়।। এবং তৎক্ষনাত শাস্তি হিসেবে তাকে মৃত্যু দন্ড দেয়া হয়।
গা শিউরে উঠল।। এই মুহুর্তে তার আরো সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।। কারন শেষ আঘাত টা হানার সময় হয়েছে। মায়া দ্রুত হাতে একটা পত্র লিখল। লিখেই ভাবতে লাগল কার হাতে পত্রটা প্রেরন করবে। কারন এ মুহুর্তে মহলে প্রচুন্ড কড়াকড়ি থাকবে। কি করবে সে এখন? উপায়ান্তর না দেখে লিয়া কে ডেকে পাঠালো সে। তারপর পত্র টা পৌছাতে বলল কারারক্ষী টার কাছে। লিয়া হাবভাব কিছুই বুঝলো না। কিন্তু মায়ার চাপাচাপি তে বাধ্য হয়ে পত্র দিয়ে এলো।।
.
বাকি সময় টুকু মায়ার প্রচুন্ড অস্থিরতার মধ্য দিয়ে কাটলো। অপেক্ষা করতে লাগল উত্তর আসার জন্য। সময় টা যেন কাটতেই চাচ্ছে না।
ওদিকে অলোক পুরো মহল কে তার অনাগত সন্তানের জন্য নতুন করে সাজাতে নির্দেশ দিল। ব্যভিচারী কর্ম কর্তা দের যারা নারী নিয়ে প্রমোদে মেতে থাকতো তাদের মহল থেকে বের করে দেয়া হল। সুরার বোতল সব গোপন করে ফেলা হল। অন্দর মহলের আশে পাশে যেন কখনো কোনো বন্দি আসতে না পারে সে ব্যবস্থা করা হল।
এমনি খুশির মুহুর্তে অলোকের নিকট তার গুপ্তচর একটা সংবাদ নিয়ে এলো।। সংবাদ টা শুনে ক্রোধে অলোকের ফেটে যাওয়ার উপক্রম হল। শুধু একটা কথায় উচ্চারন করল সে।
---- "বিড়াল হয়ে বাঘের সাথে লড়াই"
---- অনুমতি দিন সম্রাট।
---- প্রস্তুত হতে বল সবাইকে। আমি আসছি।
---- যথা আজ্ঞা সম্রাট।
গুপ্তচর চলে গেল। আর অলোক দ্রুত পদে খস খস শব্দে কিছু একটা লিখে তাতে মোহর মেরে তার সেনা প্রধানের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে লাগল।
.
মহলে দ্রুত রাত নেমে এলো। রাতে বিরাট জলসার আয়োজন করা হল। একমাত্র বার্বান সাম্রাজ্যে নতুন উত্তরাধিকারি আসার খুশিতে। সবাই অনুষ্টান উপভোগ করছে। চারদিকে খুশি ঠিকরে পড়ছে। সবার মুখ উজ্জল হয়ে আছে।। কিন্তু খুশি নেই শুধু মায়া। সে গভীর ভাবে চিন্তা করছে। সেটা লক্ষ করতেই অলোক মায়া কে ডাক দিল।
---- মায়া?
---- হুম!
---- অনুষ্টান পছন্দ হয় নি?
---- হু! না। হয়েছে। খুবই সুন্দর হয়েছে।
---- তাহলে এত চিন্তিত কেন? কি হয়েছে?
--- কিছু না সম্রাট। এ-এমনিই মাথা ব্যাথা করছিল।
--- তাহলে অনুষ্টান বন্ধ করে দিই।। হয়ত এত শোরগোলে তোমার মাথা ব্যাথা করছে।।
---- না না সম্রাট। তেমন কিছু না। থাকুক অনুষ্টান।
---- উহু। সত্যিই শোর গোল বেশি হচ্ছে।
অবশেষে অলোক সাথে জলসা ভেঙে দিল। এবং মায়া কে নিয়ে সেখান থেকে কক্ষে চলে এলো।
কক্ষের মাঝ বরাবর নিয়ে তার মুখো মুখি দাড় করাল। তারপর মায়ার হাত দুটো নিজের মুটোতে নিয়ে তার দিকে তাকালো।
সবুজ গভীর চোখ দুটোই অলোকের চেহারা ভাসছে।। হালকা গোলাপী ঠোট দুটো একটু একটু কাপছে।। ভ্রু কুঞ্চিত কপালে মৃদু মৃদু ঘাম জমেছে। মৃদু মন্দ বাতাসে জুলফি বেড়িয়ে এসে গালের সাথে লেপ্টে আছে। লাল আপেলের মত গালটা আরো বেশি ফোলা ফোলা হয়ে আছে।। অলোকের মনে হচ্ছে এখনি সেখানে একটা কামড় বসিয়ে দিই।
.
ধীরে ধীরে মায়ার গালে হাত বুলিয়েই মাথা হতে বিরাট ওড়না টা খুলে ফেলে দিল।
সাথে সাথে মায়ার ঘাড় গলা অলোকের সামনে উন্মুক্ত হয়ে গেল। ধীরে ধীরে হাত বুলাতেই মায়া খানিকটা শিউরে উঠল।।
---- সম্রাট!
আলতো করে মায়ার হাত টা সরিয়ে দিল অলোক। মায়া আর কিছু বলল না। চুপ চাপ চোখ বন্ধ করে অলোকের স্পর্শ কে অনুভব করতে লাগল।। 
ইদানিং মায়া যেন আরো ফর্সা আর যেন মোহনীয় হয়ে উঠেছে।। ধব ধবে ফর্সা ঘাড় যেন যে কোনো মুহুর্তে অলোক কে খুন করতে প্রস্তুত। 
আলতো করে মায়ার ঘাড়ে কামড় দিলো অলোক।। মায়া খানিকটা শিউরে উঠে অলোক কে শক্ত করে ধরল। দু হাতে অলোক মায়া কে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরে তার ঘাড় শুষে নিতে লাগল। যেন মধুর দেয়া আছে তাতে। এরপর বাম ঘাড় ছেড়ে ডান ঘাড়।। ধীরে ধীরে নিচে নেমে এলো অলোক। অপূর্ব নেশা যুক্ত মাদকতায় মেতে উঠেছে অলোক।। এরপর এক ঝটকায় মায়া তে কোলে তুলে নিল। আর মায়া দু হাতে অলোক গলা জড়িয়ে ধরে তাতে মুখ গুজে রইল। ঝির ঝির করে বাতাস আসতে লাগল বাগানের দিকের জানালা দিয়ে। হয়তোবা কোনো দাসীর ভুলে লাগানো হয়নি জানালাটা। নাম না জানা কোনো একটা পাখি এক টানে তারস্বরে চিঁ চিঁ চিৎকার করে যাচ্ছে। রাত কেটে গেলো সুন্দর কিছু মুহুর্তের মধ্যে।
.
অলোকের ঘুম ভাঙলো খুব ভোরে।
ঘুম জড়ানো চোখে তাকিয়ে দেখলো এলোকেশি মায়া তার বুকে মুখ গুজে শুয়ে আছে।
তার ফর্সা পিঠ টা পুরো উদোম হয়ে অলোক কে দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে। সেই ফর্সা পিঠ টাতে কমলা রঙের অলোকের কামড়ের ছোপ ছোপ চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। অস্ফুট স্বরে কিছুটা হাসলো অলোক। কিন্তু পরক্ষনেই তা মিলিয়ে গেলো। ঘুমন্ত মায়া কে তোষকে জড়িয়ে আলতো ভাবে কোলে তুলে নিল। তারপর কক্ষ হতে বেড়িয়ে কোথাও নিয়ে যেতে লাগল। পথিমধ্যে দারাহ সামনে পড়লে প্রশ্নবিদ্ধ চোখে দারাহ তার সম্রাটের দিকে তাকালো। কিন্তু অলোকের গম্ভীর চেহারা দেখে কিছুই বলল না। শুধু পিছন পিছন যেতে লাগল। যেতে যেতে অন্দর মহলের শেষ কয়েক টা সিড়ি ঘর ফেলে অলোক মায়া কে নিয়ে যেতে লাগল। ঘুম জড়ানো চোখে মায়া অলোকের দিকে বেশ কয়েকবার তাকালেও কিছুই বুঝে উঠতে পারে নি। বরং পরম আবেশে তার চোখ দুটো মুদে এসেছে।।
হাটতে হাটতে অলোক একটা কক্ষের সামনে এসে দাড়ালো। মহলের এদিক টা জনমানব হীন। কারো এদিকে প্রবেশাধিকার নিষেধ। অলোক ভিতরে প্রবেশ করে মায়া কে রেখে আবার বাইরে চলে আসলো। তারপর লৌহ দরজা টা বন্ধ করে দারাহের দিকে তাকালো।।
---- সম্রাট?
---- পাহারা দাও। যতক্ষণ আমি না বলি বের হতে দিবে না। খাবার দাবার সব এখানে পৌছে দাও।
----- কিন্তু সম্রাট,,,,,,
---- কোনো কিন্তু নয় দারাহ। কেউ যেন মায়ার সাথে সাক্ষাত না পারে। মহলে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়ে যাক না কেন, মায়ার গায়ে যেন একটা আচড়ও না পরে। দেখে রাখবে তাকে।
---- জো হুকুম সম্রাট।
এরপর অলোক গট গট শব্দে দ্রুত পায়ে সেখান থেকে বেড়িয়ে গেলো।
.
(চলবে)

Every Thing Is Fair In Love And War ♥Where stories live. Discover now