Part - 30

240 13 2
                                    


মায়া নিজের কক্ষে এসে দর্পনে সামনে দাড়িয়ে আছে।। খুটিয়ে খুটিয়ে নিজেকে দেখছে।। কেমন লাগছে তাকে?? মাথায় উজ্জল মুকুট আর কোমড়ে খোচা খঞ্জর!! নিজেকে যেন এখন সত্যিকারের সম্রাজ্ঞী বলেই মনে হচ্ছে।। মায়া মুকুট টা মাথায় রেখে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নিজেকে দেখতে লাগল।। নীল উজ্জল পাথরের মুকুট টা কেমন জ্বল জ্বল করছে।। ঠোটের কোনে হাসি ফুটে উঠল।। মায়া কে হাসতে দেখে লিয়া জিজ্ঞেস করেই ফেলল
.
---- বলেছিলাম না রাণী মায়া!! সম্রাট আপনাকে কখনো দুঃখ দিবে না!!
.
লিয়ার কথাই মায়া খানিকটা চমকে গেল।। তার পর মুকুট টা খুলে রেখে বলল
.
---- সুখই বা দিয়েছে কখন!!
.
---- সম্রাট আপনাকে কিন্তু খুব ভালোবাসে।। বড় রানী কিন্তু খুব ফুসবে।। কারন এই মুকুট টা তিনিই চেয়েছিলেন।। আর সেটা সম্রাট আপনাকে দিয়ে দিল।।
.
----- লিয়া!! মুকুটের প্রতি আমার কোনো লোভ নেই।। আমার আপন মানুষ রা খুশি থাকলেই হল।। তাদের জন্য এরকম হাজার টা মুকুট বিসর্জন দিতে দ্বিধা করবোনা।।
.
---- ঠিক বলেছেন রানী মায়া।।
.
*******
.
---- আমার কথায় হচ্ছে কি?? 
.
হঠাৎ করে অন্য কারো কন্ঠ পেয়ে লিয়া আর মায়া দুজনে চমকে উঠে দাড়ালো।। পিছন ফিরে দেখলো সম্রাট দাড়িয়ে। লিয়া তড়িগড়ি করে কুর্নিশ জানিয়ে সামনে থেকে কেটে পড়ল।। আর মায়া কিছুটা বিব্রত হলেও দ্রুত নিজেকে সামলে মিষ্টি করে হাসল।। তারপর বলল
.
----- মুকুট আর খঞ্জরের জন্য সম্রাট অসংখ্য শুকরিয়া জানাচ্ছি।।
.
অলোক এক গাল হেসে মায়ার কাছে এগিয়ে আসলো।। তারপর বলল
.
---- এটা তোমার প্রাপ্য!! শুকরিয়ার প্রয়োজন নেই।।
.
---- শুনেছি আপনি রানী ইরাভ কে না দিয়ে এই রাজজ মুকুটা আমাকে দিয়েছেন!! এর কারন টা জানতে পারি??
.
---- এটা সত্য উনি আমার মা।। তবে কোনো সম্রাজ্ঞী নন।। উনার স্বামী মহলের একজন উচ্চপর্যায়ের মন্ত্রী ছিলেন মাত্র।। আর তুমি!! তুমি হলে সম্রাট অলোকের অর্ধাঙ্গিনী, তার স্ত্রী।। একজন সম্রাজ্ঞী!! এটা তোমারই প্রাপ্য মায়া!!!
.
শুনে মায়ার খানিকটা খটকা লাগল।। কৌতুহল দমন করতে না পেরে বলে উঠল
.
----- উনার স্বামী মানে?? উনার স্বামী মানেই তো আপনার পিতা!!
.
----- না মায়া!! ওই লোক টা আমার পিতা না।। আমার পিতা রাজা ছিলেন।। উনি মারা যাবার পর মা আরো একবার জীবন সঙ্গী হিসেবে যাকে বেছে নিয়ে ছিলেন সে ছিলেন মহলের উচ্চ পদস্ত রাজ কর্মচারী।। আর উনিই রাজসিংহাসনে বসার স্বপ্ন অবিরত দেখতেন।। কিন্তু কখনো তা পুরন হয় নি।।
.
----- মানে??
.
---- মানে ষড়যন্ত্র করার অপরাধে তাকে ফাসি দেয়া হয়েছে!!
.
---- তা-তার মা-মানে আপনি""""
.
---- হ্যা মায়া!! আমিই তাকে ফাসির ঝুলাতে ঝুলিয়েছি।। 
.
চারদিকে একটা পিনপতন নিরবতা নেমে এলো।। মায়া হা করে তাকিয়ে রইলো তার দিকে।। অলোক আরো কয়েক পা এগিয়ে এসে মায়ার দু বাহু ধরল।। তারপর ধীরে ধীরে বলল
.
----- তুমি কি আমাকে এর জন্য ঘৃণা কর মায়া??
.
মায়া খানিকক্ষন মৌন রইল।। তারপর জবাব দিল
.
----- না।। আপনি আমার সম্রাট।। আর নিজের সম্রাট কে কখনো ঘৃনা করা যায় না।।
.
মায়ার কথা শুনে অলোক একটু চমকে উঠল।। কারন মায়া এই প্রথম তাকে নিজের সম্রাট বলে অভিহিত করেছে।। আর কিছু না ভেবে মায়া কে ঝাপটে জিয়ে ধরল।। এটা তার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি এটা।। সে চাইই মায়ার সম্রাট হতে।। আর আজ মায়া নিজ মুখে স্বীকার করেছে।। 
আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরল অলোক মায়া কে।। কিন্তু পর মুহুর্তে অলোকের মনে হল মায়া তাকে জড়িয়ে ধরছেনা।। সে তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিল।। তারপর অপরাধীর মত মায়ার দিকে তাকালো।। কিন্তু মায়ার চেহারায় একরাশ প্রশান্তি বিরাজ করছে।। অলোক কে বিস্ময়ের সাগরে ডুবিয়ে মায়া তার দিকে এগিয়ে এসে তাকে জড়িয়ে ধরল।। প্রথমে অলোক ভ্যাবাচ্যাকা খেল।। পর মুহুর্তে মায়া যখন আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরল তখন অলোক স্থান কাল পাত্র না ভেবে মায়া কে জড়িয়ে ধরে তার ঘাড়ে মাথা ডুবিয়ে দিল।।
.
মায়া মনে মনে বলল
.
---- এই সামান্য কারনে আমি তোমাকে ঘৃনা করি না।। কারন তোমাকে ঘৃনা করার জন্য আমার যথেষ্ট কারন আছে।।
.
চোখ শক্ত করে চেপে বন্ধ করে রইল মায়া।। তার কষ্ট হচ্ছে কালক এর জায়গা অন্য কাউকে দিতে।। তারপরও সে চেষ্টা করবে।। চেষ্টা করবে সব কষ্ট কে জয় করার।।
অলোক ইতোমধ্যে মায়ার নিরব অনুমতি পেয়ে জামার ফিতা খুলে ফেলতে লাগল।। মায়ার দাগ হীন ফর্সা ঘাড় অলোকের চুমু তে ভরে আছে।। কিন্তু তৃপ্তি আসছেনা।।
ফিতাটা একটানে খুলে ফেলল অলোক।। আর সাথে সাথে পুরো জামাটা ভুমি কম্পে ধসে পড়া বাড়ির মত খুলে পড়ল।।
চোখ বন্ধ করে ফেলল মায়া।। মনে মনে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করছে।।
.
----- শান্ত হও মায়া।। শান্ত হও
.
আর অলোক!! সে হা করে মায়ার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকাতে লাগল আর ঢোক গিলতে লাগল।। 
মায়ার পড়নে হাত কাটা সাদা সেমিজ।। যেটা মাঝ রান পর্যন্ত এসে থেমে।। আর সেখান থেকে মায়ার ফর্সা পা অলোক কে আহবান করছে।।
ধীরে ধীরে পা থেকে দৃষ্টি টা উপরে তুলল অলোক।। সেমিজ পড়া না আর পড়া সমান হয়ে আছে মায়ার।। চুল গুলো হালকা হালকা ভাবে উড়ছে।। যেন মায়াকে অলোকের নজর থেকে বাচানোর বৃথা চেষ্টা করছে।। মায়া কে মনে হচ্ছে সাদা রজনী গন্ধা।। যে তার শ্বেত শুভ্র পোশাকে মন মাতানো শুভাস ছড়াচ্ছে।। একি মোহনীয় মুহুর্ত.... অলোক তো পাগল হয়ে যাবে।। এক সাথে এত সৌন্দর্য্য সে আগে কখনো দেখে নি।। কোনো নারীকে সে স্পর্শ করে নি।। আর আজ তার সব সাধনা কামনা সার্থক হতে চলেছে।। 
ধীরে ধীরে অলোক মায়ার গালে হাত রাখলো।। তারপর ধীরে ধীরে হাতটা নিচে নামতে লাগল।। স্পর্শ করতে লাগলো মায়া কে।। মায়ার বিবেক বাধা দিলেও তার শরীর অলোকের স্পর্শে সাড়া দিচ্ছে।। পারছেনা অলোক কে দুরে সরিয়ে দিতে।। 
এরপর ঝট করে মায়ার ঠোটে আক্রমন করে বসল।। দু হাত মুখটা ধরে মায়ার ঠোটে চোখ বন্ধ করে চুমু খেতে লাগল।। এরপর সারা মুখে চুমু খেতে লাগল।। তারপর সারা পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে মায়া কে ঝটকায় কোলে তুলে নিল।। তারপর শুয়ে দিল অলোকের রাজকীয় বিছানায়।।
তারপর একটানে অলোক নিজের সমস্ত আবরন ফেলে দিল।। মেতে রইলো মোহনীয় মায়া তে।।
.
বাইরে সুন্দর আকাশ টা যেন মুহুর্তে ঘন মেঘে পরিণত হল।। গুড়ুম গুড়ুম শব্দে আকাশ টা চৌচির হয়ে যেতে লাগল।। পাগল হাওয়া যেন সব কিছুই উড়িয়ে নিয়ে যেতে চাইছিল।। সেই পাগলাটে হাওয়ায় রজনী গন্ধা তার মিষ্টি সুভাস মিশিয়ে দিল।। নেশা ধরে যায় সে হাওয়াতে।।। এমন হাওয়া বারে বারে আসুক।। বার বারে সবার মনে বৃষ্টি বয়ে দিক।। বার বারে সবার মনে বৃষ্টি বয়ে দিক।।
.
(চলবে)

Every Thing Is Fair In Love And War ♥Where stories live. Discover now