#নেশা
লেখিকা : সৈয়দা রাইসা আবেদীন অহনা
পর্ব - ৫
বলেই জারা আর মেহেরুন জারার বাসায় ভিতর যায়। বাসায় এসেই মেহেরুন জারার মাকে জরিয়ে ধরে।
মেহেরুন - কেমন আছো গো আন্টি?
জারার মা - তুই আর বদলালি না তাইনা।
জারা - আম্মু তুমি কি আগে কখনো দেখেছো যে পাগলরা সুস্থ হয়ে যায়? আর যেগুলো হয় সেগুলো ১০০% এর মধ্যে ১% এই সুস্থ হয় আর বাকি ৯৯% পাগলই থাকে। আর আমরা এতো সৌভাগ্যবতী না যে মেহেরুন সেই ১% এর মধ্যে থাকবে, ও সেই ৯৯% পাগলদের মধ্যে পড়ে, সো ওর বদলানোর চিন্তা তুমি ছেড়ে দাও।
মেহেরুন - এতোদিন পর দেখা হলো আর তুই আমার ইনসাল্ট করছিস?
জারা - ভাই তোরে ইনসাল্ট করা আমার দ্বারা সম্ভম না। আমি তো তোর প্রশংসা করছিলাম।
মেহেরুন - হইসে থাক আর বলা লাগবে না।
জারার মা - আচ্ছা এসব কথা ছাড়। মেহেরুন এতোদিন পড় কোথায় থেকে উদ্ভব হলি তুই? লাস্ট কবে দেখেছিলাম নিজেরই মনে নেই। সকালে আসলি জিজ্ঞেসও করতে পারি নি এসেই মেইল ট্রেনের মতো জারা কোথায় জিজ্ঞেস করেই দৌড় দিয়েছিস।
জারা - আম্মু ও তো বিদ্যাসাগর ওর খোজ নিয়ে কি করবা?
মেহেরুন - জারা আবার শুরু করলি?
জারার মা - মানে বুঝলাম না? ক্লিয়ার করে বল।
জারা জম- আসলে আম্মু কাহিনী হচ্ছে যে আমাদের এই মেহেরুন ওরফে বিদ্যাসাগর,,, উপস বিদ্যাসাগর না তুই তো মেয়ে তুই বিদ্যাসাগরী তার ফোন হারিয়ে ফেলসিলো ইভেন সে তার পুরানো সিমও আর কালেক্ট করে নি নতুন সিম নতুন ফোন কিনে ইউজ করতেসিলো ইভেন তার নাকি আমাদের ফোন নাম্বারও মুখস্ত নাই তাই খোজ খবর নিতে পারে নাই।
জারার মা - তো কি হইসে, এই যুগে এসে ফোন নাম্বার না থাকলেই কি বিভিন্ন সোসাল মিডিয়া দ্বারাও তো যোগাযোগ করা যায় তাইনা।
জারার মা - দেখ মেহরুন আম্মুও সেম কথা বললো৷ যাই হোক আসলে আম্মু ওর কোন সোসাল অ্যাকাউন্ট নেই, যা ছিলো তা সব ডিসঅ্যাবল করে দিসে যেন স্টাডিতে কোন প্রবলেম না হয়। পুরো মনোযোগ যেন স্টাডিতে দিতে পারে তাই এমন করেছে।
জারার কথা শুনে জারার মা মেহেরুনের দিকে তাকিয়ে থাকে। জারার মায়ের তাকিয়ে থাকা দেখে মেহেরুন বলে,
মেহেরুন - আন্টি প্লিজ এইভাবে তাকিয়েন না।
জারার মা - তো আর কি করবো তোর কাহিনী শুনে বলার ভাষা হারিয়ে ফেলসি তাই দেখা ছাড়া তো আর কোন পথ বাকি নেই।
জারা - হাহাহাহাহা।
এদিকে জারা আর জারার মায়ের এমন কথা শুনে মেহেরুন জারার রুমে গিয়ে বসে থাকে।
জারার - হাহাহা, যা দেখ মুখ ফুলিয়ে বসে আছে।
জারা - আরে ওর এই মুড চেঞ্জ হতে পাচ মিনিটও লাগবে না,,,, হাহাহা। আচ্ছা বসো আমি গিয়ে দেখি কি করতেসে।
জারার মা - হুম যা।
এদিকে দুপুরের দিকে জারার বাসায় মেহেরুনের বাবা মাও চলে আসে কারন মেহেরুন তাদের জানায় যে মেহেরুন জারার বাসা থেকেই সোজা এয়ারপোর্ট যাবে তাই। এদিকে সেদিন মেহেরুনকে সি অফ করে মেহেরুনের বাবা মা তাদের বাড়িতে চলে যায়। জারা তাদেরকে জারার বাসায় থাকতে বললেও তারা থাকে না, কাজ আছে বলে চলে যায় এদিকে সেদিনও জারা কিছুটা ক্লান্ত থাকে বলে জারাও ওর বাসায় চলে আসে আর ফ্রেশ হয়েই ঘুমিয়ে পড়ে। এদিকে পরেরদিন ফাওয়াদের অফিসে জারা না আসলে ফাওয়াদ জারাকে ফোন দেয় কিন্তু জারাকে পায় না, জারা ফোন রিসিভ করে না, এদিকে জারার কোন খবর না পেয়ে ফাওয়াদ নাজাতকে বলে যে জারার খবর নিতে কিন্তু নাজাতও জারার কোন খোজ খবর পায় না। এদিকে জারার কোন খবর না পেয়ে ফাওয়াদ আর নাজাত দুইজনেই চিন্তিত হয়ে পড়ে এক পর্যায়ে নাজাত জারার অফিসের ম্যানেজারের কাছে ফোন দেয়। কিন্তু জারার অফিসের ম্যানেজারও জারার নির্দেশে কেসের কিছু কাজে একজায়গায় যায়। তাকে ফোন দিলে সে বলে যে সে আসলে কিছুই জানে না কারন সে অফিসে আজ যায়ই নি। কেসের কাজে ঢাকার বাহিরে গিয়েছে তাই। এদিকে রাতে জারার কোন খোজ খবর না পেয়ে যখন ফাওয়াদ আর নাজাত দুইজনেই চিন্তিত হয়ে ছিলো তখনই জারার কল আসে ফাওয়াদের ফোনে। এদিকে জারার কল দেখে ফাওয়াদ তাড়াতাড়ি কল রিসিভ করেই বলে,
ফাওয়াদ - জারা কোথায় তুমি? আর আজ সারাদিন তোমার কোন খোজ খবর নেই কেন? কতোবার ফোন দিলাম ধরো পর্যন্ত নি। আর ইউ ওকে? কি হলো কিছু বলতেস না কেন?
এদিকে ফাওয়াদ এতো তাড়াতাড়ি বলে যে জারা কিছু বলার সুযোগ পায় না। ফাওয়াদ কথা বলা কিছুটা থামালে জারা ভাঙা গলায় বলে,
জারা - আমাকে কিছু বলার সুযোগ দিলে তো বলবো।
এদিকে জারার ভাঙা গলার আওয়াজ পেয়ে ফাওয়াদ কিছুটা চিন্তিত হয়ে বলে,
ফাওয়াদ - তোমার গলার আওয়াজ এমন কেন? কি হয়েছে তোমার? ঠিক আছো তো নাকি?
জারা - হ্যাঁ ঠিক আছি এন্ড ফাস্ট অফ অল সরি।কারন তোমাদের ফোন রিসিভ করতে পারি নি ইভেন তোমাদের টেনশনে ফেলে দিলাম তাই।
ফাওয়াদ - এইসব বাদ দাও কি হয়েছে সেটা বলো। ফোন ধরো নি কেন? আর এতোক্ষন কোথায় ছিলে? আর তোমার গলার এমন অবস্থা কেন?
জারা - আরে বাবা সব বলছি। গিভ মি সাম টাইম।
ফাওয়াদ - আচ্ছা বলো।
জারা - আসলে কাল কেন বিজি ছিলাম হয়তো নাজাত তোমাকে বলেছে।
ফাওয়াদ - হ্যাঁ বলেছিলো যে মেহেরুন আসছিলো আর ও নাকি অ্যাবরড যাচ্ছে তাই কাল ওকে টাইম দিলে।
জারা - হুম, তো কাল ওকে সি অফ করে বাসায় আসার পর অনেক টায়ার্ড ছিলাম তাই ঘুমিয়ে পড়ি কিন্তু সকালে হটাৎ জানি না কেন যেন প্রচুর জ্বর আসে সাথে ঠান্ডায় গলা ভেঙে এই অবস্থা হলো। দুপুর অবধি তো অবস্থা এতোই খারাপ ছিলো যে বেড থেকেই উঠতে পারি নি। দেন দুপুরের পর ডাক্তারের কাছে যাই আর সেখান থেকে এসে রাতে ডিনার করে মেডিসিন নিয়ে তোমাকে কল দিলাম। আমি জানতাম যে আজ আমার খোজ খবর না পেয়ে অনেক টেনশন করবে। আর যখন ফোন হাতে নিলাম দেখার জন্য তখন সত্যি বুঝতে পারলাম যে কতোটা টেনশনে ছিলে তুমি এন্ড এই টেনশনটা দাওয়ার জন্য সরি।
ফাওয়াদ - আরে ইটস ওকে ব্যাপার না। কিন্তু তুমি নিজের খেয়াল রেখো কিন্তু কেমন। আর সুস্থ না হওয়া অবধি অফিসে আসা লাগবে না ওকে?
জারা - হুম ।
ফাওয়াদ - বায়।
জারা - বায়।
এদিকে ফোন কাটতেই নাজাত এগিয়ে আসে আর বলে,
নাজাত - কি হয়েছে জারার? বললে যে নিজের খেয়াল রাখতে।
ফাওয়াদ - জারা সিক। জ্বর আসছে তাই আসতে পারে নি।
নাজাত - ওহ।
পরেরদিন সকালে জারা নাস্তা করে নিজের বারান্দায় এসে আনমনে বসে থাকে। এদিকে দুপুরের দিকে জারার বাসায় ডোরবেল বেজে উঠলে বাসার সার্ভেন্টরা দরজা খুলতে গেলে জারার মা বলে,
জারার মা - তোমরা যাও। তোমাদের কাজ করো আমি দেখছি।
বলেই জারার মা দরজা খুলতে দেখে যে ফাওয়াদ, ফাওয়াদে মা, ফাওয়াদের বাবা আর নাজাত, নাজাতের মা এসেছে। তাদেরকে দেখে জারার মা বলে,
জারার মা - আরে ফাওয়াদ বাবা তুমি! আরে নাজাতও এসেছো দেখছি।
তখনই পিছন থেকে নাজাতের মা বলে উঠে,
নাজাতের - জারা অসুস্থ। আর মেয়েটাকে দেখতে আসবো না এটা কোন কথা?
জারার মা - ভালোই করেছেন। আসুন আসুন, ভিতরে আসুন।
এরপর সবাই ভিতরে এসে বসে, আর এদিকে জারার মা জারাকে ডাক দেয়।
জারার মা - জারা নিচে আয় দেখ কারা এসেছে।
এদিকে জারার মায়ের ডাকে জারার ভাবনায় ব্যাঘাত ঘটে আর হাল্কা ভ্রু কুচকে অল্প কিছু ঘাড় ঘুরিয়ে বলে,
জারা - আসছি।
বলেই জারা নিচে আসার জন্য গায়ে একটা পাতলা শাল নিয়ে রুম থেকে বের হয়। এদিকে জারার মা ফাওয়াদকে জিজ্ঞেস করে,
জারার মা - কেমন আছো ফাওয়াদ? এখন তো আর বাসায়ই আসো না
ফাওয়াদ - আসলে আন্টি অফিসে কাজের এতো প্রেশার সময় হয়ে উঠে না। আর আসতে পারি না বলে যে আপনার খোজ খবর নেই না কথাটাও কিন্তু ভুল কারন জারাকে ডেইলি আপনার কথা জিজ্ঞেস করি। ইভেন জারাকে ডেইলি আপনার কথা জিজ্ঞেস করতে করতে জারাও অফিসে এসে আগে আপনার কথা জানায়। (হাল্কা হেসে)
জারার মা - হাহাহাহাহা। তো তুমি কেমন আছো নাজাত?
নাজাত - এইতো আন্টি ভালো আপনি?
জারার মা - ভালো। আর আপনারা কেমন আছেন?
ফাওয়াদের মা - এইতো ভালো।
এদিকে সবার সাথে কথা বলতে থাকলে জারা সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসতে থাকে। এদিকে কারো পায়ের আওয়াজ পেয়ে ফাওয়াদ সামনে তাকাতেই দেখে যে জারা। জারা একটি সিম্পল সাদা ফুলহাতা কামিজ আর সালোয়ার পড়া আর গায়ে হাল্কা মাড কালারের শাল জড়ানো আর চুলগুলো পিছনে বাধা আর সামনে দিয়ে মুখের দুই পাশে কিছু চুল পড়ে আছে। এদিকে জারা নিচে এসে সবাইকে দেখে অবাক হয়ে যায় আর বলে,
জারা - আপনারা!
ফাওয়াদ - জ্বি আমরা।
এদিকে জারাকে দেখে ফাওয়াদের আব্বু বলে,
ফাওয়াদের আব্বু - কেমন আছো নুর ?
জারা - জ্বি আংকেল কালকের থেকে একটু ভালো। আপনি কেমন আছেন?
ফাওয়াদের আব্বু - এইতো মা ভালো।
জারা - আর আন্টি আপনি কেমন আছেন? আর আপনি অসুস্থ শরীর নিয়ে এখানে কেন আসলেন?
ফাওয়াদের মা - দেখো মেয়ে বলে কি? মেয়ে অসুস্থ আর আমি এইখানে বসে থাকবো তা কি হয় নাকি? আর তুমি আর ফাওয়াদ তো আমাকে এমনভাবে ট্রিট করছো যেন আমি একদম অসুস্থ চলাফেরা করতে পারি না। মানলাম আমি হার্টের পেশেন্ট কিন্তু এতোটাও অসুস্থ না যতোটা তোমরা আমাকে ভাবো।
জারা - তাও আন্টি নিজের খেয়ার রাখা উচিত। বাই দা ওয়ে আপনি কেমন আছেন আন্টি।
নাজাতের মা - এইতো মা ভালো।
নাজাত - কাল তোমার কোন খোজ খবর না পেয়ে আমরা যে কতোটা টেনশড হয়ে গিয়েছিলাম তা তোমাকে বলেও বুঝাতে পারবো না।
ফাওয়াদের মা - হ্যাঁ। কাল রাতে ফাওয়াদ যখন তোমার কথা বললো তখনই ফাওয়াদের আব্বু বলছিলো যে তোমাকে দেখতে যাবে আর তাই আজই চলে আসলাম।
নাজাতের আম্মু - হ্যাঁ নাজাতও বাসায় এসে বলার পর আমারও চিন্তা হচ্ছিলো তাই চলে আসলাম দেখতে তোমাকে।
জারা - আপনারা যেভাবে বলছেন মনে হচ্ছে আমি কতোদিনের যেন রোগী।
ফাওয়াদের আব্বু - বাহ রে মেয়ে অসুস্থ আর আমাদের চিন্তা হবে না নাকি?
ফাওয়াদ - তোমাদের দেখে মনে হচ্ছে আমি তোমাদের কেউ না। আউটসাইডার। জারাই সব।
ফাএয়াদের মা - ঠিকই তো। নুরই তো আমাদের মেয়ে। ওর খেয়াল রাখবো না তো কার খেয়াল রাখবো।
জারা - হাহাহা। ওকে ওকে স্টপ আর তর্ক করা লাগবে না।
(আসলে ফাওয়াদ তার বাবা মার একমাত্র ছেলে হওয়ায় এবং ফাওয়াদের কোন বোন না থাকায় আর ফাওয়াদের ক্লোজ ফ্রেন্ড হওয়ায় ফাওয়াদের ফ্যামিলিতে সবাই জারাকে নিজের মেয়ের মতোই মানে। ফাওয়াদের সাথে জারা পরিচয় হওয়ার পর যখন ফাওয়াদ প্রথম তার বাবা মার সাথে জারার পরিচয় করায় তারা ভাবে যে ফাওয়াদ জারাকে পছন্দ করে বলে তাদের সাথে দেখা করাতে নিয়ে গিয়েছে। এমনকি জারার অনেক নম্র বিহেইভিয়ারেও ফাওয়াদের ফ্যামিলির সবাই জারাকে পছন্দ করে তাদের ছেলের বউ হিসাবে কিন্তু ফাওয়াদ যখন জারাকে নিজের ফ্রেন্ড হিসাবে পরিচয় করায় তারা কিছুটা নিরাশ হয়ে যায়। এমনকি পরে যখন তারা যখন জানতে পারে যে ফাওয়াদ জারাকে না নাজাতকে পছন্দ করে তখন তারা কিছুটা নাখোশ থাকলেও পরে তারা তাদের ছেলের পছন্দকে প্রাধান্য দেয়। কারন ফাওয়াদের উপর তাদের বিশ্বাস ছিলো যে ফাওয়াদ কখনো অভদ্র কোন মেয়েকে পছন্দ করবে না। এমনকি জারাই ফাওয়াদের ফ্যামিলিতে নাজাতকে পরিচয় করায় আর ফাওয়াদের কথা বলে যে নাজাত আর ফাওয়াদ একে অপরকে পছন্দ করে। এমনকি নাজাত মেয়ে হিসাবেও যথেষ্ট ভালো। অর্থাৎ জারাই তাদের এক প্রকার কনভেন্স করায় যে ফাওয়াদের জন্য নাজাতই উপযুক্ত মেয়ে)
এদিকে জারার জোরাজুরিতে সবাই জারাদের বাসায় ডিনার করে। এদিকে ডিনারের টেবিলে জারা যেই পাশে বসে তার বিপরীত পাশেই জারার সামনে ফাওয়াদ আর তার পাশে নাজাত পাশাপাশি বসে। নাজাতের পাশে নাজাতের মা আর ফাওয়াদের পাশে ফাওয়াদের মা বাবা আর এদিকে জারার পাশে তার মা বসে। ডিনারের মাঝে নাজাত বলে,
নাজাত - জারা তোমার ফাইলগুলো দেখা শেষ। আর ফাইলের শেষের কিছু পেজে লুপহোল পেয়েছি। ইভেন আমি পেন্সিল দিয়ে তা মার্ক করে রেখেছি।
জারা - ইটস ওকে আমি দেখে নিবো। তুমি হাসনাত সাহেবকে সেসব ফাইল দিয়ে দিয়ো।
নাজাত- ওকে।
ফাওয়াদ - ওয়েট আ মিনিট।
নাজাত- হোয়াট?
ফাওয়াদ - জারার ফাইল তুমি কেন দেখলে? আর তুমি জারার অফিসের ম্যানেজার হাসনাত সাহেবকে কিভাবে চিনো?
নাজাত - উপস তোমাকে তো বলাও হয় নি। আসলে আমি নতুন ল' প্রাক্টিস শুরু করেছি অ্যাজ ইউ নো। সো সেই হিসাবে আমি এমন কারো কাছে কাজের জন্য প্রাক্টিস করতে চাচ্ছিলাম যার কাছ থেকে কোন কেস কিভাবে হ্যান্ডেল করতে হয় শিখতে পারবো ইভেন যার অনেক ভালো এক্সপেরিয়েন্স আছে। আর সেইদিক দিয়ে জারা যথেষ্ট ভালো এক্সপেরিয়েন্সড। তাই আমি জারা কাছে হেল্প চাই এন্ড জারাও বলে যে হেল্প করবে। তাছাড়াও জারা নাকি অনেকদিন ধরে ওর জন্য একজন অ্যাসিস্ট খুজছিলো। তাই আমি যখন হেল্পের কথা বলালাম তখন জারা বললো যে আমি যেন ওর অ্যাসিস্ট হয়ে কাজ করি। কারন এতে আমার ল' প্রাক্টিসও হয়ে যাবে আর জারার অ্যাসিস্টের কাজও হয়ে যাবে।
ফাওয়াদ - তো এই কথা এতোদিন পর জানলাম আমি?
নাজাত - এতোদিন পর কোথায়? লাস্ট পরশুদিনের আগের দিন জারার সাথে যিখন বাসায় যাচ্ছিলাম তখন জারার সাথে এই নিয়ে কথা হয় আর তার পরেরদিনই জারা আমাকে অফিসে ডেকে এসব ফাইল বুঝিয়ে দেয় যেদিন মেহেরুন আসলো। আর সেদিন আমি ফাইল নিয়ে বাসায় চলে আসি আর ফাইলের উপর কাজ করা শুরু করি তাই তোমাকে সেদিন বলাম হয় নি। তাছাড়াও সেদিন তোমার সাথে আমার দেখাও হয় নি কাজ নিয়ে ব্যাস্ত ছিলাম বলে আর গতোকাল তো তুমি আমি জারার কোন খোজ খবর না পেয়ে চিন্তায় ছিলাম আর আমার মনেও ছিলো না তাই বলা হয় নি।
ফাওয়াদ - ওহ।
এদিকে নাজাতের কথা শেষ হতেই জারা ফাওয়াদের আব্বুকে বলে,
জারা - আংকেল আপনার ছেলে বউকে আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট বানালাম বলে রাগ করেন নি তো আবার?
ফাওয়াদের আব্বু - নুর কি যে বলো না। রাগ করবো কেন? তাছাড়া নাজাত তোমার কাছ থেকে কিছু শিখতে পারলে সেটা তো আরও ভালো কথা তাইনা।
জারা আর বেশি কিছু না বলে মুচকি হাসি দেয়। আর ফাওয়াদকে বলে,
জারা - আর তোমার?
ফাওয়াদ - আমার কি?
জারা - আমার উপর রাগ নেই তো নাকি? যে তোমার উড বি ওয়াইফকে অ্যাসিস্ট্যান্ট বানালাম বলে।
ফাওয়াদ - আরে না কি যে বলো না।
এদিকে সবাই রাতে ডিনার করে চলে যাওয়ার সময় জারা তাদের গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসে তখন ফাওয়াদ জারাকে বলে,
ফাওয়াদ - নিজের খেয়াল রাখবে টাইমলি মেডিসিন নিবে। আর কোন কাজ না। একদম সুস্থ হয়ে তারপর কাজ আর অফিস। মনে থাকে যেন।
জারা - হাহাহা আচ্ছা মনে থাকবে।
ফাওয়াদের আব্বু - নুর নিজের খেয়াল রেখো মা কেমন? (জারার মাথায় হাত বুলিয়ে)
জারা - জ্বি আংকেল।
নাজাত - টেক কেয়ার। (জারাকে জরিয়ে ধরে)
জারা - হুম।
এরপর সবাই গাড়িতে উঠে চলে গেলে জারা সেখানে দাড়িয়েই একদৃষ্টিতে তাদের গাড়ির দিকে তাকিয়ে থাকে। গাড়ি চোখের পলক হতে দূরে চলে গেলেই জারা এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাসায় চলে আসে।
চলবে......