#নেশা
লেখিকা : সৈয়দা রাইসা আবেদীন অহনা
পর্ব - ৪
মেহেরুনের মুখে নাজাতের নাম শুনতেই জারা বুঝে যায় যে মেহেরুন কি বলতে চাচ্ছে। তাই জারা আর কথা না বারিয়ে মেহেরুনের সামনে থেকে চুপচাপ চলে আসে আর কিছু না বলেই গাড়িতে উঠে যায়। এদিকে জারাকে গাড়িতে উঠতে দেখে মেহেরুনও জারার পিছন পিছন গাড়িতে এসে বসে এবং জারা গাড়ি চালিয়ে সোজা বাসায় এসে পড়ে, গাড়িতে মেহেরুন জারাকে অনেকবার নাজাতে কথা বলে কিন্তু জারা কিছুই বলে না। জারা বাসার কাছে এসে গাড়ি থামাতেই বলে,
জারা - কাইন্ডলি রেডিও অফ কর। বাসায় চলে এসেছি।
মেহেরুন - হোয়াট?
জারা - বললাম বাসায় চলে এসেছি চল আর ননস্টপ রেডিও অফ কর। সারাটা রাস্তা একই কথা ঘ্যান ঘ্যান প্যান প্যান করতেছিস। হোয়াটস রং উইথ উয় ইয়ার। বারবার একই কথা নাজাত নাজাত। হোয়াট নাজাত? হ্যাঁ আমি মানি নাজাত ভুল করেছিলো বাট সেটা জাস্ট একটা মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছিলো। আর সেই সিচুয়েশনটাই ছিলো এমন যে সেখানে নাজাতের জায়গায় অন্য কেউ থাকলেও সেম করতো সো এসব নিয়ে এতো প্যাচাল পারার দরকার নেই।
বলেই জারা গাড়ি থেকে নেমে চলে আসে। আর জারার পিছন পিছন মেহেরুনও গাড়ি থেকে নেমে জারার কাছে আসে আর বলে।
মেহেরুন - দাড়া।
মেহেরুনের কথায় জারা পিছনে ঘুরে দাড়ায় আর বলে,
জারা - হুম বল।
মেহেরুন - দেখ তুই ভুলতে পারিস বাট আমি পারি না। তুই আমাকে শুধু ফ্রেন্ড ভাবলেও আমি সবসময় তোকে আমার বোনের মতো দেখেছি আর মেনেছিও। কেউ তোকে অপমান করলে সেটা আমার নিজের গায়েও লাগে। তুই কি করে ভুলে গেলি যে এই নাজাত তোকে রাস্তায় পুরো দুনিয়ার সামনে চড় মেরেছিলো যা তুই করিসও নি তার জন্য। আর সেই মেয়েকে তুই তোর অ্যাসিস্ট্যান্ট বানালি। আই কান্ট বিলিভাবল।
জারা এতোক্ষন চুপচাপ হাল্কা হেসে মেহেরুনের কথা শুনছিলো। এদিকে জারাকে হাল্কা হাসতে দেখে মেহেরুনের মেজাজ আরো গরম হয়ে যায় আর বলে,
মেহেরুন - তোর কাছে কি মনে হচ্ছে আমি তোর সাথে ফান করছি?
জারা - একদমই না।
মেহেরুন - তো গাধার মতো কারন ছাড়া শুধু শুধু হাসতেছিস কেন?
জারা - লিসেন আমার কথা শুন।
মেহেরুন - জ্বি বলেন আপা শুনতেসি। কারন আমি জানি এখন তুই আমাকে একগাদা ভাষন দিবি। আর আমি একটা জিনিস এখনও বুঝতেসি না যে তুই এমন চেঞ্জ হলি কিভাবে? যেই মেয়েকে আগে কেউ উচু গলায়ও কিছু বললে তার ইগোতে লাগতো সেই মেয়ে কিনা ভরা জনসম্মুখে এক মেয়ের হাতের থাপ্পড় খেয়েছে যেই দোষ সে করেই নি আবার তার ইগোতেও লাগে নি? আবার উল্টো সেই মেয়ের মনের অবস্থা বুঝা শুরু করলো কবে থেকে হ্যাঁ?
জারা - এমন খেপতেসিস কেন? একটু ভেবে দেখ সেই সময় নাজাতের জায়গায় তুই হলে তুইও তাই করতি?
মেহেরুন - আমি অতো শতো বুঝি না ভাই।
জারা - এইজন্যই তুই এখনও গাধা। সরি গাধা না গাধী৷
মেহেরুন - দেখ আমি মানি সেই সিচুয়েশনে মনের অবস্থা কি থাকতে পারে তাই বলে না জেনে শুনেই এইভাবে থাপ্পড় মারবে, এটা কোন কথা?
জারা - ভাই তোরে বুঝানো না কখনোই সম্ভব না বুঝলি!
বলেই জারা একরাশ বিরক্ত নিয়ে বাসায় ডুকতে নিলেই মেহেরুন জারার হাত ধরে জারার বাসার পাশের বাগানে নিয়ে আসে আর বলে,
মেহেরুন - ওকে ফাইন, তো ভালো মতো বুঝা আমিও বুঝি।
এবার জারা কিছুটা বিরক্ত নিয়ে মেহেরুনের দিকে তাকায় এবং বলে,
জারা - ওকে লিসেন, লেট রিমাইন্ড ইউ অ্যাগেইন,,,,, সেদিন আসলে কি হয়েছিলো,,,,,,, আমি খুলনাতে গিয়েছিলাম অ্যাজ ইউ নো,,,,,, আমি আমার গাড়ি নিয়েই আসছিলাম তখনই দেখি যে একটা সাদা গাড়ি একটা ছেলেকে ধাক্কা দিয়ে চলে গেল যেটা দেখে আমিও আর কোন ওয়েট না করে সেই ছেলেটির সামনেই গাড়িটা রেখে সেই ছেলেটার কাছে যাই আর তখনই জানি না কোথায় থেকে নাজাত আসে আর এসেই কান্না করতে থাকে, কারন সেই ছেলেটা নাজাতের ছোট ভাই ছিলো নাজাত যখন আসে সেখানে আরো লোকজন জড়সড় হয়ে গিয়েছিলো আর সবাই বলতেসিলো যে এই গাড়ি দিয়েই নাকি অ্যাক্সিডেন্টে হয়েছে, আসলে তা হয় নি কারন যেই গাড়ি দিয়ে অ্যাক্সিডেন্টে হয়েছিলো সেই গাড়িটাও দুর্ভাগ্যবশত আমার গাড়ির মতোই সাদা ছিলো কিন্তু আমার গাড়ি ছিলো না সেটা কিন্তু আশেপাশের মানুষ এতোটা খেয়াল করেনি। কারন সেই অ্যাক্সিডেন্টের গাড়িটা অনেক ফাস্ট চলে যায় আর সেই গাড়ির পিছনেই আমার গাড়ি হওয়ায় সবাই ভাবে যে আসলে সেটা আমার গাড়ি দ্বারা হয়েছে। তো নাজাত সেখানে সেইসব লোকদের কথা শুনে রেগে উঠেই আমাকে সবার সামনে চড় মারে যেটার জন্য আমারও রাগ আসে যে কেন মারলো সত্যটা না জেনেই। যাই হোক তখন আমিও জানতাম যে এই সিচুয়েশনে আমার কথা কেউ শুনবে না মানবে না বিশ্বাসও করবে না তাই আমি সেই সিচুয়েশন সামলানোর জন্য বলি যে এই অ্যাক্সিডেন্টের পেসেন্টের সব ধরনের খরচ আমার, পেসেন্ট সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আমি তার চিকিৎসার দায়ভার বেহন করবো তখন নাজাত সেই ছেলেকে নিয়ে আমার গাড়িতে করেই তোর হসপিটালে নিয়ে আসি এন্ড দেন তোর হসপিটালের ডাক্তাররা সেই ছেলেটির ট্রিটমেন্টও করে আর সেই হসপিটালেই আমার তোর সাথে দেখা হয়ে যায় বলে তোকে এসব কথা শেয়ার করেছিলাম। আর তখন তো তোকে নাজাত চিনতোও না, আজ চিনলো।
মেহেরুন - ইয়েস। কিন্তু তখন তুই এটাও বলেছিলি যে তুই এই চড়ের বদলা নিবি। কারন সেই চড় তোর ইগোতে লাগে। আর তাছাড়া তুই যে কতোটা আত্মসম্মানি ছিলি তা আমি জানি। কিন্তু এখন এমন কি হলো যে তুই এসব ভুলেই গিয়েছিস।
জারা - লেট মি ফিনিশড ফার্স্ট,,,, দেন ইউ গেট অল অফ ইউর আন্সারস।
মেহেরুন - ইয়া প্লিজ।
জারা - তারপর তোর হসপিটালে সেই ছেলেটি সুস্থ হওয়ার পর আমি সেখান থেকে সোজা থানায় চলে আসি, যেই থানার আন্ডার এরিয়াতে এই ঘটনা হয়েছিলো সেখানে গিয়ে আমি আগেই সেই এরিয়ার সিসিটিভি ফুটেজ কালেক্ট করি। ভাগ্যভালো যে সেই অ্যাক্সিডেন্ট এরিয়াটা ক্যান্টনমেন্ট এরিয়া ছিলো কারন ক্যান্টনমেন্ট এরিয়া ছাড়া নরমাল এরিয়াতে সিসিটিভি পাওয়া খুব টাফ। তো যাই হোক লয়্যার হওয়ায় পুলিশদের কাছ থেকে সেই অ্যাক্সিডেন্ট স্পটের সিসিটিভি ফুটেজ খুব ইজিলি আমি পেয়ে যাই এবং নাজাতের সব ইনফরমেশনও কালেক্ট করে নেই যে, ও কোথায় থাকে, কি করে, বাসা কোথায় এ্যাকসেক্ট্রা এ্যাকসেক্ট্রা,,,, তারপর সেই ফুটেজ আর ইনফরমেশন নিয়ে ঢাকায় চলে আসি। কারন আমি যেই ইনফরমেশন কালেক্ট করেছিলাম সেখানে জানতে পারি যে নাজাত ঢাকাতেই থাকে। তাই ভাবলাম যে ঢাকাতেই গিয়ে যা করার করবো। কিন্তু ঢাকায় আসার পর,,,,,,
মেহেরুন - কিন্তু ঢাকায় আসার পর কি?
জারা কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে যে,
জারা - ঢাকায় আসার পর আমি বুঝি যে আসলে এইখানে নাজাতের কোন ভুল নেই, সিচুয়েশনটাই এমন ছিলো যে নাজাতের জায়গায় আমি হলেও হয়তো সেম কাজ করতাম।
মেহেরুন - কেন ঢাকায় আসার পর এমন কি হয়েছিলো যে তুই তোর মাইন্ড চেঞ্জ করে ফেলেছিস? আর তাছাড়া ঢাকার আসার পর তো তোর সাথেও কথা হয় নি আমার।
জারা - হ্যাঁ, আর তাই তুই আজ নাজাতকে আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট দেখে অবাকের চড়ম সীমানায় চলে গিয়েছিস।
মেহেরুন - যাওয়ারই তো কথা। কারন আমি জানতাম তুই অনেক আত্মসম্মানি। তুই বিনা দোষে সবার সামনে চড় খেয়ে চুপ করে বসে থাকার লোক না । আর সেখানে যখন সেই মেয়েই তোর অ্যাসিস্ট্যান্ট আমার অবাক হওয়া বড় কিছুই না।
জারা - হুম।
মেহেরুন - তো বল পরে কি হয়েছিলো।
জারা - তো ঢাকায় আসার পর একদিন আমি আমার অফিসে বসে কাজ করছিলাম আর তখনই ফাওয়াদ জারাকে নিয়ে আসে। আমি ফাওয়াদকে দেখে অবাক না হলেও নাজাতকে দেখে ঠিকই অবাক হই। সুধু আমিই না আমার সাথে সাথে নাজাতও অনেক অবাক হয়। এমনকি নাজাত সেখান থেকে চলেও যেতে চেয়েছিলো,,
অতীত,,,,
নাজাত - ফাওয়াদ তুমি আমাকে এটা কোথায় নিয়ে আসলে?
ফাওয়াদ - তোমার প্রবলেমের সুরাহা এখানে ছাড়া অন্য কোথাও হবে না।
নাজাত - আমি এখান থেকে আমার প্রবলেমের সুরাহাও করতে চাই না।
ফাওয়াদ - চুপচাও বসো। (কিছুটা ধমকের সুরে)
বর্তমান,,,
জারা - এরপর ফাওয়াদের কথায় নাজাত চুপচাপ হয়ে বসে ছিলো। তখন ফাওয়াদ আমাকে বলে যে নাজাত ওর জিএফ এন্ড নাজাতের পক্ষে আমাকে একটা কেস লড়তে হবে।
মেহেরুন - হোয়াট!
জারা - হুম। আমিও তোর মতো অবাক হই যেখানে আমি নিজেই নাজাতকে ওর দাওয়া চড়ের হিসাব মিটাতে চাচ্ছিলাম সেখানে ফাওয়াদ নিজেই আমাকে নাজাতের পক্ষে কেস লড়তে বলে। তখন ফাওয়াদের কথা শুনে আমি যতোটা অবাক হই ঠিক ততোটাই অবাক নাজাতও হয়। এমনকি নাজাত তো বলেই উঠে যে,,
অতীত,,,,,
নাজাত - আমি চাই না সে আমার কেস লড়ুক। (বসা থেকে দাড়িয়ে)
ফাওয়াদ - কিন্তু কেন?
নাজাত - সেটা তুমি তার কাছেই জিজ্ঞেস করে নাও।
ফাওয়াদ - এসব কথা ছাড়ো। আমি জারাকে ভালোমতো চিনি। আই বিলিভ অন হার। জারা কখনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়বে না।
এটা শুনে নাজাত কিছুটা তাচ্ছিল্য করে বলে যে,
নাজাত - তাই নাকি? যে নিজেই অন্যায় করে সে আবার অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়বে না এটা কেমন কথা? জোকস বললে নাকি ফাওয়াদ।
তখন ফাওয়াদ কিছু বলতে যাবে তখনই জারা কিছু না বলে নিজের হাতের ইশারায় ফাওয়াদকে চুপ থাকতে বলে আর মোবাইল থেকে সেই সিসিটিভি ফুটেজটা অন করে ফাওয়াদ আর নাজাতের দিকে এগিয়ে দেয় আর বলে,
জারা - দেখো তো এই অন্যায়ের কথা বলছো কিনা?
তখন নাজাত জারাকে ফাওয়াদের দিকে ফোন এগিয়ে দাওয়া দেখে বলে,
নাজাত - এসব কি?
জারা - তুমিও দেখতে পারো, তোমাকে তো দেখতে নিষেধ করি নি।
তখনি নাজাতও এগিয়ে এসে আবারও ফাওয়াদের পাশে বসে এবং ওরা দুইজনেই সেই সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে থাকে।
বর্তমান,,,,,,
মেহেরুন - তারপর?
জারা - তারপর আর কি? সেই ফুটেজ দেখে নাজাত চুপ হয়ে যায়। ওর বলার আর কোন ভাষা থাকে না। সেই ফুটেজে নাজাত দেখে যে, আসলে আমার গাড়ি না আমার গাড়ির সামনে যেই গাড়ি ছিলো সেই গাড়িটি ধাক্কা দেয় ছেলেটিকে আর পরবর্তিতে আমি গাড়ি থামিয়ে ছেলেটিকে বাচাতে যাই। আর এটা দেখে নাজাত একদম চুপ হয়ে যায় আর কান্না কান্না স্বরে আমার কাছে মাফ চাইতে থাকে আর এদিকে ফাওয়াদ পুরো সিসিটিভির ফুটেজ দেখে যেখানে এটাও ছিলো যে নাজাত আমাকে চড় মারে। সেটি দেখে ফাওয়াদও রাগে নাজাতকে বলে যে না জেনেই কেন আমাকে চড় দিলো। এদিকে নাজাত পুরো ঘটনা বলে যে, আসলে নাজাতদের গ্রামের বাড়ি খুলনা কিন্তু ওরা ঢাকাতে থাকে৷ কিন্তু ওদের গ্রামের বাড়িতে ওর দাদার সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ চলতে থাকে ওদের চাচাদের সাথে৷ আর সেই দ্বন্দের জের ধরেই সেই লোকেরা নাজাতের ভাইয়ের অ্যাক্সিডেন্ট করায়।
মেহেরুন - হোয়াট?
জারা - হুম। তখন আমিও রিয়ালাইজ করি যে আমার ভাইও এক রোড অ্যাক্সিডেন্টে মারা যায় যদিও সেটা দুর্ঘটনা ছিলো কিন্তু ভাই হারানোর কষ্ট কি তা আমি জানি সেখানে নাজাতও ওর ভাইয়ের এমন অবস্থা দেখে প্যানিক হয়ে এমন করে। তাই সিচুয়েশন দেখতে গেলে এইখানে নাজাতেরও কোন দোষ নেই। সো পরে এসব ভাবার পর আমিও এটা রিয়ালাইজ করলাম যে এইখানে আমার চড়ের বদলা নাওয়া বোকামি ছাড়া আর কিছুই না। দ্যাটস হোয়াই আই চেঞ্জ মাই ডিসিশন।
মেহেরুন - নাউ আই গেট ইট।
জারা - তুই তো শুধু শুধুই চেতলি।
মেহেরুন - কি করতাম আমি কি পুরা কাহিনী জানতাম নাকি।
জারা - হুম। আর তাছাড়াও আমি নাজাতকে সেইদিনের পর আরো ভালোভাবে জানলাম। ও আসলেই ভালো মেয়ে। অনেক ফ্রেন্ডলি।
মেহেরুন - তো পরে কি সেই কেস লড়েছিলি?
জারা - হ্যাঁ পরে নাজাতের জন্য সেই অ্যাক্সিডেন্ট কেস লড়েছিলাম আমি।
মেহেরুন - আই এম সিউর তুই জিতেছিলিও।
জারা - হুম। আর সেই কেসের রায় ওদের পক্ষে হওয়ায় সে আমার উপর কৃতজ্ঞ।
মেহেরুন - যাক ভালোই।
জারা - হুম।
মেহেরুন - বাই দা ওয়ে ফাওয়াদের সাথে পরিচয় তো তোর নাজাতের আগেই হয়েছিলো তাইনা।
জারা - হুম।
মেহেরুন - কিন্তু তুই আমাকে ফুল কাহিনী জানাস নি কেন। আমি কি এতো কাহিনী জানতাম নাকি। তাইতো নাজাতকে তোর অফিসে তাও আবার তোর অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে দেখে আমার মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছিলো।
জারা - জানাতাম কিভাবে৷? তুই কি যোগাযোগ রেখেছিলি? খুলনায় সেই ঘটনার সময় তোর সাথে দেখা এরপর আর কোন যোগাযোগ পাই নি তোর।
মেহেরুন - আই এম সরি। আসলে আমার ফোন হারিয়ে গিয়েছিলো এরপর আর সেই পুরাতন সিম উঠাই নি নতুন সিম আর নতুন ফোন কিনে নেই। যার জন্য তোর নাম্বারও ছিলো না। তাই আর হয় নি।
জারা - বাহ তুই না আমাকে বোনের মতো মানিস আর আমার সামান্য একটা ফোন নাম্বার জানিস না! বাহ। আর আমাকে জিজ্ঞেস কর তোর ফোন নাম্বার এখনও জানা আছে আমার, যদিও তোর সেই নাম্বার এখন আর নেই। সো এসব নাম্বারের কেম এক্সকিউজ দেখাস না। মানলাম নাম্বার হারিয়েছে সোসাল মিডিয়ার কি অভাব পড়েছিলো। সেখানে যোগাযোগ করতে পারিস নি?
মেহেরুন - সেখানে কিভাবে করবো, যেখানে সোসাল অ্যাকাউন্টই নাই।
জারা - মানে কি? তোর ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ এসব কি হইসে?
মেহেরুন - আসলে স্টাডি নিয়ে এতো প্রেসারে ছিলাম যে আমার সব সোসাল অ্যাকাউন্ট ডিসঅ্যাবল করে দেই, যেন অনলাইনে যাওয়ার কোন নেশা না থাকে। ইউ নো নেশা খারাপ জিনিস একবার ধরলে আর ছাড়া যায় না। তাই আমি চাই না আমার কোন কিছুতে নেশা ধরুক। নাহলে সোসাল মিডিয়ার নেশায় আমার ডাক্তারি পড়ার বারোটার তেরোটা বাজতো।
জারা - আহারে বিদ্যাসাগর আমার।
মেহেরুন - থ্যাংক্স ফর দিস ক্রেডিট। (হেসে)
জারা - বত্রিশটা দাত বের করে কেলাইতে হবে না এখন ভিতরে চল।
বলেই জারা আর মেহেরুন জারার বাসায় ভিতর যায়।
চলবে.......