নেশা

By raishaOhona

1.6K 38 1

এক উন্মাত্ত ভালোবাসার পরিনাম More

#নেশা#১
#নেশা#২
#নেশা#৪
#নেশা#৫
#নেশা#৬
#নেশা#৭
#নেশা#৮
#নেশা#৯
#নেশা#১০
#নেশা#১১
#নেশা#১২
#নেশা#১৩
#নেশা#১৪
#নেশা#১৫
#নেশা#১৬
#নেশা#১৭
#নেশা#১৮
#নেশা#১৯
#নেশা#২০
#নেশা#২১
#নেশা#২২
#নেশা#২৩
#নেশা#২৪
#নেশা#২৫
#নেশা#২৬
#নেশা#২৭
#নেশা#২৮ (শেষ পর্ব)

#নেশা#৩

79 3 0
By raishaOhona

#নেশা

লেখিকা : সৈয়দা রাইসা আবেদীন অহনা

পর্ব - ৩

এই কথা জারা নিজে নিজেই একা একা বলতে থাকে আর সামনের দিকে এক তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ছুড়ে ফেলে। এদিকে পরেরদিন জারা কোর্টে যায় এবং জারা তার কেসটি জিতেও যায়। কাজ শেষে জারা কোর্ট থেকে বের হতে নিলেই জারার ক্লাইন্টরা জারার কাছে আসে এবং বলে,

ক্লাইন্ট - আজ আপনার জন্যই আমরা সঠিক ন্যায়বিচার পেলাম।

জারা - সত্যি তো একদিন সবার সামনে আসবেই তা আজ হোক বা কাল, সত্যি কখনোই লুকিয়ে থাকে না। আর তাছাড়া আপনারা আপনাদের সঠিক ন্যায়েবিচার পেয়েছেন এটাই আমার জন্য অনেক।

জারা তার ক্লাইন্টদের সাথে আর কিছুক্ষন কথা বলে নিজের অফিসে এসে বসে আর পরবর্তি কেসের কিছু কাজ করতে থাকে আর তখনই জারার ফোনে ফাওয়াদের কল আসে,

জারা - হুম বলো। (জারা কাজ করতে করতে ফোনে কথা বলে)

ফাওয়াদ - তুমি কোথায়?

জারা - আমি কোর্টে, কেন?

ফাওয়াদ - না এমনি, আজ অফিসে আসো নি কেন?

জারা - আজ আসবোও না। আমি একটু বিজি আছি। আজ একটা কেসের হেয়ারিং ছিলো।

ফাওয়াদ - ওহ আচ্ছা, হ্যাঁ মনে পড়েছে তুমি বলেছিলে। আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম।

জারা - হুম।

ফাওয়াদ - আই এম সিউর কেসটা তুমি জিতেছো।

জারা - জ্বি ইয়েস।

ফাওয়াদ - কংগ্রাচুলেশন।

জারা - থ্যাংকস। আর আজ এমনিতেও আমার তোমার অফিসে তেমন কাজ নেই। সো আই হোপ কোন দরকার হবে না। আর যদিও হয় জানিয়ো।

ফাওয়াদ - ওকে।

জারা - বায়।

বলেই জারা ফোন কেটে দেয়। আর নিজের কাজ করতে থাকে। আর তখনই জারার অফিসরুমের ডোরে কেউ নক করলে জারা চোখ তুলে দেখতেই অবাক হয়ে যায়। কারন সেখানে জারার ফ্রেন্ড মেহেরুন আসে। মেহেরুনকে দেখে জারা বলে,

জারা - তুই! কবে আসলি? তুই না খুলনা ছিলি?

জারা তার চেয়ার থেকে উঠে এসে মেহেরুনকে জরিয়ে ধরে।

মেহেরুন - হ্যাঁ ছিলাম। আজ সকালেই আসলাম। আমি তোদের বাসায় গিয়ে আন্টির কাছ থেকে জানতে পারলাম যে আজ নাকি তোর কেসের হেয়ারিং ছিলো। তাই এইখানেই চলে আসলাম। কারন জানতাম তুই এইখানেই থাকবি।

জারা - যাক ভালোই।

মেহেরুন - তো তোর দিনকাল কেমন চলছে?

জারা - অ্যাজ ইউসুয়াল। বাট এসব কথা রাখ তোকে দেখে তো মনে হচ্ছে তুই এমনি এমনি এখানে আসিস নি, কোন রিজনে এসেছিস। বল তো কাহিনী কি?

মেহেরুন - মাঝে মাঝে আমি ভাবি যে তুই আসলে লয়্যার নাকি মনোবিজ্ঞানী। কারন বুঝি না কিভাবে তুই কারো মনের কথা বুঝিস।

মেহেরুনের কথা শুনে জারা হাল্কা হেসে বলে,

জারা - দেখ একজন ডাক্তার আর একজন লয়্যারের কাছে মানুষ সবসময় সত্যি কথা বলে। আর লয়্যার হওয়ার পর ক্লাইন্টদের সত্য মিথ্যা কাহিনী শুনতে শুনতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি বলেই কে মিথ্যা বলছে আর কে সত্য বলছে তা বুঝতে পারি। কারন কেউ যখন কোন কথা লুকানোর চেস্টা করে বা মিথ্যা বলে তার ফেস রিয়্যাকশন অন্যরকম হয়ে যায় যা দেখলেই বুঝা যায়। ইভেন মোস্ট অফ দা টাইম কথার দ্বারাও বুঝা যায়।

মেহেরুন - ভাই আমি বললাম কি আর তুই বললি কি? আমি এইখানে সত্য মিথ্যার কি বললাম?

জারা - বলিস নি। কিন্তু আমি যা বলেছি তা তুই বুঝিস নি, আর আমি তোর কথার ভিন্ন উত্তরও দেই নি। যাই হোক তোর ফেস রিয়্যাকশন দেখে মনে হচ্ছিলো যে তুই কিছু বলতে চাচ্ছিস বাট হ্যাজিটেড ফিল করছিস, ফ্রিলি বলতে পারছিস না তাই গেস করলাম আর কি।

মেহেরুন - গেস না তুই সিউর ছিলি।

জারা - আচ্ছা বাদ দে এখন বল হয়েছে কি?

মেহেরুন - আসলে আমি ফ্রান্স যাচ্ছিলাম।

জারা - হোয়াট? কিন্তু কেন?

মেহেরুন - আরে ঘুরতে যাচ্ছি না, স্টাডির জন্য যাচ্ছি।

জারা - কিন্তু তোর স্টাডি তো অলমোস্ট শেষ। আর তুই খুলনা মেডিকেল থেকেই তোর পড়াশুনা শেষ করেছিস।

মেহেরুন - হ্যাঁ, বাট আব্বু বলছিলো যে হাইয়ার ডিগ্রীর জন্য দেশের বাহিরে পড়াবে তাই। আর তোকে না বলে চলে যাবো তাও তো হয় না তাইনা।

জারা - হ্যাঁ তাই বলতে আসলি যে চলে যাচ্ছি, রাইট। ভাবলাম তুই অনেকদিন পর আসলি, হয়তো এখন থেকে ঢাকাতেই থাকবি বাট না তুই তো বায় জানাতে এসেছিস।

মেহেরুন - আরে ভাই এমন কিছুই না বেশিদিনের ব্যাপার না আশা করি দুইতিন বছরের মধ্যেই ফিরে আসবো।

জারা - ফ্লাইট কখন?

মেহেরুন - আজ রাতেই।

জারা - বাহ আজ যাচ্ছিস আর আজই জানাচ্ছিস? তো এখন বললি কেন যাওয়ার আগে বায় বললেই পারতি।

মেহেরুন - রাগ করতেসিস কেন? আমি আগেই বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু ব্যাস্ত থাকায় আর পারি নি। সরি ইয়ার।

জারা - ইটস ওকে।

মেহেরুন - আমাকে কিন্তু তোর সি অফ করে আসাই লাগবে।

জারা - জানতাম এটাই বলবি।

মেহেরুন - তো কি আসবি না?

জারা - আমি এমন কখন বললাম? যাই হোক বাসায় চল। বাসায় গিয়েই কথা হবে।

মেহেরুন - হ্যাঁ তা তো যাবোই। তখন আন্টির সাথে ভালোমতো কথাও বলতে পারলাম না।

জারা - হুম চল। বাট ওয়েট আমার কিছু কাজ আছে। আধা ঘন্টা বা এক ঘন্টা ওয়েট করতে পারবি?

মেহেরুন - কেন পারবো না অবশ্যই পারবো।

জারা - ওকে বস।

বলেই জারা ফোন করে নাজাতকে,

জারা - হ্যালো নাজাত!

নাজাত - হ্যাঁ বলো,

জারা - আমার অফিসে আসো তো একটু কাজ ছিলো। ফ্রি আছো তো নাকি?

নাজাত - হ্যাঁ আমি ফ্রি। আচ্ছা আসতেসি।

জারা - আমার অফিসের অ্যাড্রেস জানো তো?

নাজাত - আরে হ্যাঁ জানি, ফাওয়াদের সাথে তো আগে এসেছিলাম। ভুলি নি।

জারা - আচ্ছা আসো তাহলে।

বলেই নাজাত ফোন কেটে দেয় আর জারার অফিসে এসে পৌছায়। নাজাত জারার অফিসে এসে ডোরে নক করলেই জারা নাজাতকে ভিতরে আসতে বলে। এদিকে নাজাত জারার অফিসে আসলে নাজাতকে দেখে মেহেরুন চমকে যায়। সে জারাকে কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারে না। এদিকে নাজাতকে দেখে জারা বলে,

জারা - বসো নাজাত।

বলেই জারা তার অফিসের ম্যানেজারকে কল দেয়।

জারা - হাসনাত সাহেব আমার অফিসে আসেন এখনি।

হাসনাত সাহেব - আসছি ম্যাম।

জারা - হুম।

বলেই জারা ফোন কেটে দেয় আর তার কিছুক্ষন পরেই হাসনাত সাহেব জারার রুমে এসে ডোর নক করে বলে,

হাসনাত সাহেব - মে আই কাম ইম ম্যাম?

জারা - ইয়েস কাম ইন।

এরপর হাসনাত সাহেব জারার রুমে আসলে জারা বলে,

জারা - হাসনাত সাহেব আপনাকে ওনার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই। সে এখন থেকে আমাকে অ্যাসিস্ট করবেন। যার কথা আপনাকে বলেছিলাম। ইনিই হলেন নাজাত শেখ। আপনি নাজাতের ইনফরমেশন গুলো কালেক্ট করে নিন। আর নাজাত তুমিও তোমার ইনফরমেশনগুলো যেমন তোমার এক কপি ছবি, নাম, ফোন, ইমেইল, হোম অ্যাড্রেস সব ইনফরমেশন গুলো হাসনাত সাহেবের কাছে দিয়ে দিয়ো। যেন কোন দরকার বা কাজে আমি নিজে অথবা হাসনাত সাহেবের দ্বারা তোমাকে জানাতে পারি।

নাজাত - ঠিক আছে।

জারা - তো হাসনাত সাহেব আমি একটু পরেই চলে যাবো কিছু কাজ আছে। আমি চলে যাওয়ার পরে আপনি নাজাতের ইনফরমেশন কালেক্ট করে নিয়েন।

হাসনাত সাহেব - ঠিক আছে ম্যাম।

জারা - বাই দা ওয়ে নাজাত, আমার নেক্সট কেসের কিছু ফাইল তোমাকে দিবো। তুমি সেগুলোর উপর স্টাডি করে আমাকে জানাবে। কেমন?

নাজাত - ওকে।

জারা - বাই দা ওয়ে মিট উইথ হার, সি ইজ মেহেরুন। মাই বেস্ট ফ্রেন্ড। আর মেহেরুন এটা নাজাত। আমার ওয়ার্ক অ্যাসিসট্যান্ট।

নাজাত - নাইছ টু মিট ইউ। (মেহেরুনের দিকে হাত বারিয়ে)

মেহেরুন - মি টু (মেহেরিনের সাথে হ্যান্ড শেইক করে)

মেহেরুন কিছুটা অদ্ভুতভাবে নাজাতকে দেখছিল আবার জারাকে।

জারা - বাই দা ওয়ে নাজাতের আরেকটা পরিচয় হলো ও ফাওয়াদের গার্লফ্রেন্ড। খুব তাড়াতাড়িই ওদের বিয়ে হবে।

এইকথা শুনে যেন মেহরুন আকাশ থেকে পড়ে। আর অবাক হয়ে জারার দিকে তাকিয়ে থাকে। আর জারাও মেহেরুনের এমনভাবে দেখাটা খেয়াল করে কিন্তু তারপরেও তা ইগ্নর করে নিজের মতো নরমালি বলতে থাকে।

জারা - ফাওয়াদকে তো চিনিসই। যার কথা তোকে বলেছিলাম আর যার অফিসের চিফ লিগ্যাল অ্যাডভাইসর হিসাবে আছি। ওরই গার্লফ্রেন্ড।

মেহরুন নিজেকে কিছুটা শান্ত করে বলে।

মেহেরুন - ওহ আচ্ছা। যাক ভালোই আর বিয়ের জন্য অ্যাডভান্স কনগ্রাচুলেশন।

নাজাত - থ্যাংক।

জারা - আসলে নাজাত আজকে মেহেরুন ফ্রান্স চলে যাবে তো তাই ওর সাথে কিছুটা টাইম স্পেন্ড করতে চাচ্ছিলাম। এমনিতেও ওর সাথে বহুদিন পরে দেখা হলো। এতোদিন খুলনাতেই ছিলো। স্টাডি করতো খুলনা মেডিকেল কলেজে। আর এখন হাইয়ার ডিগ্রীর জন্য ফ্রান্স যাচ্ছে।

নাজাত - ওয়াও দ্যাটস আ গ্রেট নিউজ। বেস্ট ওফ লাক। (মেহরুনের দিকে তাকিয়ে)

মেহেরুন - থ্যাংক্স ( জোর করে কিছুটা হেসে বলে)

জারা - আজ সকালেই ও খুলনা থেকে আসলো আর আমাকে বলতেসে আজ রাতের ফ্লাইটেই নাকি ফ্রান্স যাবে তাই ভাবলাম এতোদিনপর যখন দেখা তাছাড়া আজ চলেও যাচ্ছে সো স্পেন্ড সাম টাইম উইথ হার।

নাজাত - হ্যাঁ ঠিক।

জারা - তাই আজকের কিছু কাজ তোমাকে দিয়ে যাচ্ছি। জাস্ট এই ফাইলগুলো ভালোমতো স্টাডি করে কোন লুপহোল পেলে আমাকে জানাবে।

নাজাত - ওকে।

জারা - সো টেক দিস ফাইল। এগুলোর রিপোর্ট আমাকে কাল জানাবে ।

নাজাত - ওকে।

জারা - আমি আসি তাহলে এখন। আর হাসনাত সাহেব নাজতের ইনফরমেশনগুলো নিয়ে নিয়েন।

হাসনাত সাহেব - ওকে ম্যাম।

নাজাত - বায়।

জারা - বায়। চল মেহেরুন।

মেহেরুন - হুম।

বলেই জারা মেহেরুনকে সাথে নিয়ে চলে আসে। জারা আগে আগেই চলে আসে কিন্তু মেহেরুন আসতে আসতে বারবার পিছনে ফিরে নাজাতকে দেখতে থাকে, কিন্তু নাজাত তা খেয়াল করে না সে হাসনাত সাহেবকে তার ইনফরমেশন দিতে ব্যাস্ত থাকে। এদিকে মেহেরুনকে পিছনে দাড়িয়ে থাকতে দেখে জারা মেহেরুনকে ডাক দিলে মেহেরুন চলে আসে।

জারা - কি রে সেই কখন থেকে ডেকে যাচ্ছি। কোথায় ছিলি?

মেহেরুন - কোথাও না।

জারা - হটাৎ হলো কি তোর?

মেহেরুন - কোথায়?

জারা - এতো ঢং করিস না। তোর মুখ এমন বাংলার পাচ করে রেখেছিস কেন?

মেহেরুন - তো জানতে চাস কেন এমন মুখ করে রেখেছি?

জারা - কেন?

মেহেরুন - তোর জন্য।

জারা - হোয়াট ননসেন্স?

মেহেরুন - জি ইয়েস তোর জন্য।

জারা - আমি কি করলাম আবার?

মেহেরুন - নাজাত।

মেহেরুনের মুখে নাজাতের নাম শুনতেই জারা বুঝে যায় যে মেহেরুন কি বলতে চাচ্ছে। তাই জারা আর কথা না বারিয়ে মেহেরুনের সামনে থেকে চুপচাপ চলে আসে আর কিছু না বলেই গাড়িতে উঠে যায়।

চলবে........

Continue Reading

You'll Also Like

1.9K 2 1
বাংলা চটি গল্প
12.4K 953 47
A walkway to destiny... ইটালিতে থাকা জেসমিন আয়াজ তার জীবনকে নতুন রূপে সাজাতে,নতুন মোড় নিতে শুরু করে "জার্নি"। এই জার্নি তাকে নিয়ে যায় আরেক জার্নির পথ...
681 158 6
রহস্যময় পৃথিবীর রহস্য কখনো শেষ হয় না। শেষ হয় না অতিপ্রাকৃতিক ঘটনা । দেখা যায় হরেক রকম মানুষ । দেখা যায় অপ্রীতিকর অপ্রকৃতস্থ মানুষ ও তাদের ঘটনা । "অপ...
3.8K 353 18
written by Sadia Khan ( subasini)