বাচ্ছাগুলোকে দেখে নিজের অজান্তেই একটা শুকতারা উঁকি মেরে যায় অন্ধকার মনের ঘরটায়। একবারের জন্য বোধ হয় ইচ্ছে করেই ফেলে, আমার জন্যও যদি কেউ এরকম করে একঝাঁক উজাড় করা মুহূর্তদের কাগজে রাজহংসী দিয়ে বন্দী করত। ফাউন্টেন পেনের স্রোতে কেমন ধরা দিয়ে যাওয়া দুপুর শেষে বাসায় ফেরার আয়োজনে ব্যস্ত বনের পাখিদের ঝরনায় আমিও বেশ একবার চোখ বুলিয়ে নিতাম। কিন্তু এইসব অহেতুক ইচ্ছেদের পাত্তা দিইনি কোনোকালেই। অস্থিরচিত্তে শুধু একবার খাতির জমাতে দৌঁড়ে গেছি বড্ড চেনা পুকুরপাড়ের সবেদা গাছটার কাছে। বৃষ্টি ঝরার আগেই আবার ফিরে এসেছি গুমোটে ঘরটায়। কাজল পরিনি বহুদিন সেভাবে। পরতে পারিনা। মা'য়ের মত যত্ন করে কেউ পরিয়ে দিতে চায়নি বহুবছর, কাজলাচোখে মেয়েকে কেমন লাগে দেখার জন্য। দু-একটা বিয়ে বাড়ি ছাড়া আমারও তাই পরা হয়না। তবু বৃষ্টি এলে ভয় করে কাজল ঘেঁটে যাওয়ার। তাই মেঘ জমার খবর আমলকি বনে পৌঁছানোর আগেই চিরপরিচিত কোন কৌশলে কালো মেঘেদের অদৃশ্য প্রাসাদে বেঁধে ফেলি। আমি ফিরে যাই গুমোটে ঘরটায়।
কিন্তু এই বাচ্ছাগুলোকে দেখে সময়ে অসময়ে শুকতারাটা খোঁজ নিতে আসে। অবগত হওয়া মাত্রই আমি তাকে মনে করিয়ে দিই আমার যা-কিছু পছন্দ নয়। কারো স্নেহ, দরদ চাইনা আর নতুন করে। কিন্তু আত্মার মর্মদেশে উপচে পড়া আবেগ প্লাবিত হতে থাকে। সে'সব কোথাও না জমালে-ই নয়! তাই আমিও হয়ে উঠি নক্ষত্র-প্রেমী। শুকতারা নয়, ধ্রুবতারা'দের পায়ে জমাই উজাড় করা প্রেম। মৃগতৃষ্ণার মতই কোনও মায়াকাননে ঢেলে দিই স্নেহের পরশ।
এই বাচ্ছাগুলো ভালো থাকুক। এদের নীলডানায় রঙের ছোপ লেগে থাকুক চিরবসন্ত জুড়ে। এদের দেখেই একটু ভালো থাকতে চাই আমি। জানলার কাঠের গরাদের ফাঁক দিয়ে আমার চেরিরঙের করঞ্চাগুলো দেখতে ব্যস্ত হয়ে যাবো আমি।।
VOCÊ ESTÁ LENDO
রাজহংসীদের গান
Diversosযা কিছু কবিতার মতো, কিংবা একেবারেই কবিতার মতো নয়... প্রতিদিনের রাগ, কান্না, দুঃখ, অভিমান, খুশি, আনন্দ, চোখের জল।