তমালিকার রক্তজবা

12 2 4
                                    

তমালিকার রক্তজবা

- আম্মু, আমি এখানে বসি?
পাঁচ বছরের ছোট্ট আয়াজের এই প্রশ্নে একটু হেসে তমালিকা বললো,

-না বাবা, ওটা অন্য একজনের সীট। তুমি তোমার জায়গায় এসো।

চলন্ত ট্রেনের এসি কেবিনের জানালার দিকে তাকিয়ে আয়াজ বললো,
- মা, দেখো! কত্ত সুন্দর বাইরে! আমি এখানেই বসি প্লিইইজ! কিছুক্ষণ?

ছেলের বায়না ফেলতে পারলো না তমালিকা। পাশে বসে থাকা আয়াজের বাবা ইভান সাহেবও বললেন,

- আচ্ছা ঠিক আছে৷ কিন্তু যখন ওদিকের মানুষ চলে আসবে, তখন কিন্তু চুপচাপ এখানে এসে জানালার পাশে বসবে। Okay?

আয়াজ হেসে বললো,
- আচ্ছা, বাবা।

তমালিকা আর ইভান ব্যাগপত্র ঠিকঠাক করে রেখে বসলো আয়াজের মুখোমুখি সীটে। আয়াজের এটা প্রথম ট্রেন জার্নি। আয়াজ বললো,

- আম্মু দেখো! বাইরে একটা নদী!!

তমালিকা হেসে ফেললো। পাশ থেকে ইভান বললো,
- না বাবা, ওটা নদী না, ওটাকে বলে পুকুর।

আয়াজ মাথা চুলকে জিজ্ঞেস করলো,
- তাহলে নদী কোনটা?

তমালিকা হেসে বললো,
- নদী আসতে এখনও অনেক দেরি, বাবা।

আয়াজ অবাক চোখে তাকিয়ে আছে ট্রেনের জানালা দিয়ে। আজ প্রায় ৭বছর পর গ্রামে যাচ্ছে ওরা। আয়াজের অবশ্য এটাই প্রথম গ্রামে যাওয়া। তাই ওর আনন্দটা আরেকটু বেশি।

প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিট ট্রেন চলার পর মধুপুর জংশনে থামলো ট্রেন। তমালিকা এক বোতল পানি কিনতে বাইরে গেল। তমালিকাকে বাইরে যেতে দেখে আয়াজ ইভানের দিকে তাকিয়ে বললো,
- বাবা! আমরা কি চলে এসেছি?
- না, বাবা এখনও আসি নি। এটা মধুপুর জংশন। এখান থেকে অনেক মানুষ ট্রেনে উঠবে।

- ও!

কিছুক্ষণ পরেই বেশ বড়সড় একটা ব্যাগ কাঁধে নিয়ে একজন লোক কেবিনের দরজা খুললো। আগে থেকেই কেবিনে থাকা মানুষদের দিকে তাকিয়ে একটু হেসে আয়াজ যেদিকটায় বসে ছিলো, সেদিকটায় উপরের দিকে ব্যাগ ঠিক করে রাখলো।

ভালোবাসার অংশবিশেষWhere stories live. Discover now