চতুর্থ পর্ব

819 5 0
                                    

আজ সকাল টা রিয়ার কাছে দুঃস্বপ্নের মতো। কারন আগামী পাঁচ বছরের জন্য সে তার জীবনের সকল স্বাধীনতা হারাতে যাচ্ছে। তবুও সে খুব খুশী।
কারন সে তার বাবাকে দেশের সবথেকে অভিজাত এক হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে। অবশ্য তার সাথে থাকা ছাড়া আর কিছু করতে হয়নি। যা করার
সব ঈশিতাই করেছে। রিয়া এতো দিন বাবাকে বলতো তেমন কিছু না। কদিন পরই তুমি ছাড়া পেয়ে যাবে। কিন্তু কাল বলেছে, রোগটা একটু জটিল
তাই সময় লাগবে। আর সব খরচ শুভ্র সাহেব বহন করছে। এমনকি তাকে একটি চাকুরী পর্যন্ত দিয়েছে। ওনার স্ত্রী নীলা ম্যাডামের পি এস হিসাবে ও
থাকবে। আর তাই সপ্তাহে শুধু একদিন ও দেখা করতে পারবে। ওর বাবাও মেনে নিয়েছে। কারন এই হাসপাতালে যত্নের কোন অভাব হবে না।
রাত টা নিজের সব কিছু গুছিয়ে রাখতে রাখতেই কেটে গেলো। গতকাল ঈসিতা বলে গেছে বাসা ছাড়তে হবে না এখন। আর তোমার কিছু নিতেও
হবে না। তোমার বাসার সব ঠিক রাখার দ্বায়িত্ব আমার। আগের দিনের কথা মতো ঈশিতা ঠিক সকাল আটটায় এসে হাজির। রিয়া শেষ বারের মতো
নিজের ঘরে চোখ বুলিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো।
কালকের কথা ওর মনে পরতে লাগলো।
মানুষের টাকা থাকলে কতো বিচিত্র সখই না হয়। সে নীলা ম্যামের এবারের জন্মদিনের উপহার হতে যাচ্ছে। ম্যাম দেশের বাইরে। এক সপ্তাহ পর
ওনার জন্মদিনের আগেরর রাতে ফিরবেন। আর তখন তাকে সারপ্রাইজ হিসেবে ম্যামের সামনে আনা হবে।কিন্তু মানুষ হয়ে না। কুকুর হয়ে। যাকে বলে
ওর আজ থেকে হিউম্যান ডগ, না, ডগ না, ওকে বিচ হতে হবে। সেটা হতে গেলে নাকি কিছু ট্রেনিং ও নিতে হবে।
আর এর বিনিময়ে সে পাবে তার বাবার সুস্থতার সকল খরচ, আর ওর বাবা যা বেতন পেতো সেটাও পাবে প্রতি মাসে। আর ওর নিজের দরকারি যা
লাগবে সব কিছু ঈশিতা ব্যাবস্থা করবে। এমন কি শুভ্র এটাও বলেছে, ওর বাবা যদি অল্প সময়ের মধ্যাই মারা যায়, তাহলে চাইলে সে চিকিৎসার
জন্য বাজেট করা টাকা নিজের জন্য নিয়ে নিতে পারে। এবং ছয় মাসের পর চাইলে ও চুক্তি বাদ ও দিতে পারে।
শুভ্র এসব বলে বলেছিলো যদি ও রাজি থাকে তাহলে যেন শুভ্রর পায়ে এসে চুমু খায়।
সব শুনে নিরবে কয়েক ফোঁটা চোখের পানি ফেলে, উঠে শুভ্রর পায়ের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে। আর বাম পায়ের উপর তুলে বসা ডান পায়ের তলায়
দুই হাত রেখে শুভ্রর পায়ের দিকে একটু তাকিয়ে থেকে একটা চুমু খেয়ে আর মুখটা তুলতে পারলো না। হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো। যার অনেকটা
লজ্জায়, আর অনেক টা কৃতজ্ঞতায়।
শুভ্র ওর চুলে হাত বুলিয়ে বলেছিলো, আরে কাঁদছো কেন??? আজ থেকে আমি তোমার মনিব। আমি তোমার যত্ন করবো। তোমাকে সব সমস্যা
থেকে নিরাপত্তা দিবো। আমি আর নীলা তোমাকে অনেক অনেক ভালবাসবো।

হিউম্যান ডগিWhere stories live. Discover now