প্রথম পর্ব

1.3K 5 12
                                    

শুধু মাত্র ছবিতে দেখেই রিয়া তার মায়ের মুখটা মনে রেখেছে। সেই দুই বছর বয়সে তার মা তাকে ছেড়ে পরপারে চলে গেছে। সেই বয়সের স্মৃতি
কারই বা মনে থাকে???
আর মাকে নিয়ে রিয়ার তেমন কোন মাথা ব্যাথাও নেই। এর কারন হল তার বাবা। এমনিতেই রিয়া খুব হাঁসি খুসি আর সহজ সরল স্বভাবের মেয়ে।
খুব অল্পতেই খুসি হয়ে যায়। তার উপর বাবার অকৃপণ আদর যত্নতো ছিলোই। সে কারনে কোনদিন মাকে নিয়ে দুঃখ করার কথা মনেও হয়নি। তার
বাবা যে শুধু মাত্র তার মায়ের দ্বায়িত্ব পালন করেছে তা নয়। বরং তার এই বাইশ বছর বয়সে তা্র বাবার মতো বন্ধুও কাউকে খুঁজে পায়নি। ওর
কাছে এই জগত সংসার মানেই ওর বাবা। কি আনন্দের জীবনই না ছিলো ওদের বাপ মেয়ের।
কিন্তু রিয়ার জগতে গভীর অন্ধকার নেমে এলো, যখন তার বাবার মরণ ব্যাধি ক্যান্সার ধরা পড়লো। ডাক্তার বলল, আয়ু সর্বোচ্চ তিন থেকে চার
মাস। আর যদি ঠিক মতো চিকিৎসা করা হয় তাহলে হয়তো সারতে পারে। কিন্তু সেই সম্ভাবনা খুব কম। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রোগী মারা যায়। আর
চিকিৎসা করতে গেলে অনেক অনেক টাকার ও প্রয়োজন।
ডাক্তারের কথায় রিয়ার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। ওর বাবা একটা প্রাইভেট কোম্পানির সামান্য একজন কর্মচারি। বেতন যা পেতো সে টাকাতো
সবই প্রায় শেষ হয়ে গেছে ওর নিজের পরা শুনা আর সংসার খরচের পিছনে। আর ওদের এমন কোন আত্বিয় স্বজনও নেই যার কাছে রিয়া কোন
রকম সাহায্য পেতে পারে। কি করবে সে এখন??? বাবা না থাকলে তার বেঁচে থাকার মানেই বা কি??? টাকা নেই বলে বাবার চিকিৎসার ঝুঁকি
নিবে না, এটা কি ভাবে হয়??? সে তার বাবা কে বিনা চিকিৎসায় মরতে দিতে পারে না!!!
কোন উপায় না দেখে রিয়া ভাবলো, একটা জায়গাই আছে যেখানে রিয়া সাহায্য পেতে পারে, আর সেটা হলো তার বাবার অফিস। আর তাই দেরী না
করে রিয়া তার বাবার সহকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করলো। সবাই অবশ্য ওর সাথে খুব সমবেদনা দেখালো। কারন ওর বাবা ভীষণ ভালোমানুষ
ছিলেন। কিন্তু সমবেদনা থাকলেই কি??? ওকে সাহায্য করার মতো সাধ্য তাদের কোথায়??? সবাই একটা পরামর্শই দিলো, সেটা হলো কোম্পানির
মালিকের কাছে সাহায্য পার্থনা করা। ওনার অনেক টাকা। উনি যদি দয়া করেন তাহলে ওর বাবার চিকিৎসা করানো কোন ব্যাপারই না।
তাই রিয়া সিদ্ধান্ত নিলো, যে করেই হোক ওনাকে রাজি করাতে হবে সাহায্যের জন্য।

হিউম্যান ডগিWhere stories live. Discover now