সপ্তম পর্ব

1K 36 27
                                    


শ্রবণা গাঢ় ঘুমে তলিয়ে গেছে। কিন্তু চোখেমুখে অতৃপ্তির ছায়া। শীতুলের বিরক্ত লাগতে শুরু করেছে এখন। এত সুন্দর একটা মেয়ে কেন এরকম সবসময় হতাশায় ভোগে? সুন্দর মেয়েদের সবসময় হাসিখুশি আর ফুরফুরে থাকা উচিত। তাহলে দেখতে আরো সুন্দর লাগবে। শ্রবণার চেহারাটা আদরমাখা। ছোট্ট লম্বা নাক, চিকন মেদহীন চিবুক। ওকে একবার বলতে হবে যেন সবসময় হাসিখুশি থাকে। হাসলে গালে টোল পড়ে কিনা খেয়াল করা হয়নি। না পড়ারই কথা। টোল পড়বে নাদুসনুদুস গালে, মেদহীন গালে টোল পড়ে কিনা শীতুলের জানা নেই।

শ্রবণার দিকে তাকিয়ে এসব ভাবতে ভাবতে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলো শীতুল৷ ইয়ারফোনে গান বেজে চলেছে,
'আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে, দেখতে আমি পাইনি তোমায়..
দেখতে আমি পাইনি।
বাহির পানে চোখ মেলেছি, বাহির পানে..
আমার হৃদয় পানে চাইনি...'

গানটা শুনতে শুনতে আরেকবার শ্রবণার দিকে তাকালো শীতুল। তারপর মনে মনে বললো, 'কত মেয়ে দেখি, কত মেয়ের সাথে পরিচয় হয়। অথচ কোন দূরত্বের এক অজানা অচেনা মেয়ে আমার হৃদয় হরণ করে নিলো। না জানি নাম, না জানি পরিচয়। কিভাবে তাকে খুঁজে পাবো আল্লাহ ই জানেন। এবার বোধহয় বিজ্ঞাপনে নামতে হবে।'

শীতুল অজান্তেই হেসে উঠলো। ট্রেন সুন্দর গতিতেই চলছিলো। হঠাৎ একদিকে বাঁকা হয়ে কেঁপে উঠলো পুরো কক্ষ। শ্রবণা চমকে ঘুম থেকে উঠে শীতুলের দিকে তাকালো। শীতুলও কিছু বুঝে উঠতে পারলো না। বেশিরভাগ যাত্রীরাই ঘুমে অচেতন ছিলো বলে প্রত্যেকেই চোখ কচলে তাকাচ্ছেন। ট্রেন কেঁপে কেঁপে চলছে। কারো মুখে কোনো কথা নেই, শুধু চোখে কৌতুহল।

এমন সময় ট্রেনের গতি কমে এলো। অনেক বড় হুইসেল দিয়ে থেমে গেলো হঠাৎ। শ্রবণা ভয় ভয় চোখে শীতুলের দিকে তাকালো। শীতুল শ্রবণাকে অভয় দিয়ে বললো, 'ডোন্ট ওরি, কিচ্ছু হয়নি।'
- 'তাহলে ট্রেন থামলো কেন?'
- 'মাঝেমাঝে এরকম থেমে যায়। ভয়ের কিছু নেই। একটু পরেই আবার ছাড়বে।'

শ্রবণা আশ্বস্ত হয়ে মাথা নিচু করলো। একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়তেই শীতুল বললো, 'আপনাকে বারণ করেছিলাম এত বড় শ্বাস না ফেলার জন্য।'

You've reached the end of published parts.

⏰ Last updated: Sep 16, 2019 ⏰

Add this story to your Library to get notified about new parts!

প্রিয় অসুখWhere stories live. Discover now