পর্ব-১১

526 5 0
                                    

আগের পর্বের পর...

অরণ্য সবেমাত্র ষ্টুডিওয় ঢুকতে যাবে এইসময় একটি মেয়ে হঠাৎ করে এসে অরণ্যকে জাপ্টে ধরলো। আচমকা এরকম হওয়ায় কথার ধরে থাকা হাতটা অরণ্যর হাত থেকে ছেড়ে গেলো যার ফলে অরণ্যর থেকে কিছুটা দূরে সরে গেলো কথা।

-হাই অরণ্য কেমন আছো?
-আই এম ফাইন মিস শর্মা। আপনি কেমন আছেন?
অরণ্য মেয়েটার বাহুবন্ধন থেকে নিজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে কিছুটা বিরক্তিভাব নিয়ে বললো।
-আই এম অলওয়েজ গুড এন্ড তোমাকে দেখেতো আরও ভালো হয়ে গেলাম। বাট ইটস নট ফেয়ার অরণ্য আমি কতবার তোমাকে বলেছি আপনি নয় তুমি করে বলতে। এন্ড ডোন্ট কল মি মিস শর্মা জাস্ট শালিনী বলবে।
-সরি মিস শর্মা আমার পক্ষে আপনার রিকোয়েস্টটা রাখা পসিবল নয়। প্রথমত আমি অপরিচিতদেরকে আপনি বলাই পছন্দ করি। এন্ড সেকেন্ডলি আমার সাথে আপনার এমন কোনো বিশেষ সম্পর্ক নেই যে কারণে আমি আপনাকে নাম ধরে ডাকবো।
আমাদের সম্পর্কটা অনলি প্রফেশনাল। আমাদের কোম্পানি আপনাকে দুটো প্রজেক্টের জন্য এস আ মডেল হায়ার করেছে। এন্ড কন্ট্রাক্ট শেষ হলে আমাদের প্রফেশনাল রিলেশনশিপটাও শেষ। সো আমার মনে হয় আপনাকে যে কাজের জন্য হায়ার করা হয়েছে আপনি সেটা ভালোভাবে করুন।
শালিনী আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলো কিন্তু অরণ্য ওকে আর কোনো কিছু বলতে না দিয়ে কথার হাত ধরে স্টুডিওর দিকে এগিয়ে গেলো।

অরণ্যের যাওয়ার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে থাকলো।শালিনী কোনোদিনও ভাবতে পারেনি যে ওর মাদকতাকে কাটিয়ে কোনো পুরুষ বারবার ওকে এইভাবে রিজেক্ট করতে পারে।
"আমিতো তোমাকে নিজের করেই ছাড়বো অরণ্য বিশ্বাস বাই হুক ওর ক্রক।"
অরণ্যের যাওয়ার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বললো রোশন।

শালিনী মেহেতা বেঙ্গলের টপ মডেল এন্ড এক্ট্রেসদের মধ্যে নম্বর ওয়ান পসিশনে আছে। ত্রিশ বছরের শালিনীর রূপের আগুনে অনেক পুরুষের হৃদয় গলাতে পারলেও অরণ্য বিশ্বাসের পাথর কঠিন ব্যাক্তিত্বকে কখনো টলাতে পারেনি।
তিন বছর আগে দেবরায় গ্রুপ এন্ড কোম্পানিসের একটি বিজনেস পার্টিতে এ বি ইন্ডাস্ট্রিসের সিইও থার্টি টু ইয়ার্সের হ্যান্ডসাম অরণ্য বিশ্বাসকে প্রথম দেখেছিলো শালিনী। ও তখন দেবরায় গ্রুপের ওনার রূদ্র দেবরায়ের সাথে রিলেশনশিপে ছিল। তাই রূদ্র দেবরায়ের গার্লফ্রেন্ড হওয়ার দরুন ও পার্টিতে প্রেসেন্ট ছিল। সেদিন লাল বডিফিটিং লংগাউনে শালিনীর আগুন ঝরানো রূপে পার্টিতে উপস্থিত অনেক অবিবাহিত এবং বিবাহিত পুরুষ এট্রাক্টেড হলেও অরণ্য সেইদিকে কোনো কেয়ার দেখায়নি। আর সেই কারণটাই শালিনীকে অরণ্যর প্রতি এট্রাক্ট করেছিল। দ্বিতীয় কারণ অবশ্যই ছিল অরণ্যের হ্যান্ডসম এলিগ্যান্ট লুক যা যেকোনো নারীকেই একবার হলেও ওর দিকে তাকাতে বাধ্য করবেই।
তাই একপ্রকার যেচেই ও অরণ্যের সাথে আলাপ করেছিল। কিন্তু অরণ্য কিছু সাধারণ কথাবার্তার পর ওর প্রতি আর কোনো ইন্টারেস্ট না দেখিয়ে সোজা পার্টি থেকে বেরিয়ে এসেছিলো।
সেইদিন থেকেই অরণ্যকে নিজের করে পাওয়ার আশাটা একপ্রকার জেদে পরিণত হয়েছে ওর কাছে। এই তিন বছরে ও অনেকবারই সেই চেষ্টা করেছে কিন্তু অরণ্যের অদৃশ্য সুরক্ষা বলয়কে ভেদ করে কখনোই ওর কাছাকাছি পৌঁছতে পারেনি। তাই অরণ্যর কোম্পানি থেকে মডেলিংয়ের কন্ট্রাক্টটা পেতেই ও রাজি হয়ে যায় কাজটা করার জন্য।
.
.
.
অরণ্য ভেতরে আসতে রোশনি রীতিমতো চড়াও হলো ওর ওপর।
-অরি আমি তোকে আগেই বলেছিলাম ওই মেয়েটাকে এই প্রজেক্টে না নিতে। অথচ তুই কী করলি আমার একটাও কথা না শুনে ওকে সিলেক্ট করলি।
রোশনির বকুনি খেয়ে অরণ্য কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলো কিন্তু ওর মুখে হাত চাপা দিয়ে রোশনি আবার নিজের বক্তব্য চালু করলো
-আমি জানি তুই কী বলবি। তুই পার্সোনাল লাইফ আর প্রফেশনাল লাইফ মিক্স করা পছন্দ করিসনা এটাই বলতে চাস তো। কিন্তু ওই শাঁখচুন্নি থুড়ি শালিনীটা কী সেটা বোঝে। দেখলিস তো তুই আসতে না আসতেই কেমন তোর গলায় গিয়ে ঝুলে পড়লো। বুঝিসনা কেন তোকে পাওয়ার চেষ্টাটা ওর কাছে নেশায় পরিণত হয়েছে। আমি বলছি দেখবি একদিন এই কারণে ও নিশ্চই কোনো বড়ো কান্ড ঘটাবে।
এই বলে রোশনি আবার বলার জন্য মুখ খুলতে গেলে অরণ্য নিজের মুখ থেকে ওর হাতটা সরিয়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি করে ওই জায়গাটা থেকে প্রস্থান করলো একপ্রকার পালালোই বলা ভালো। ও নিজের বসি অ্যাটিটিউডের জন্য সবার ওপর ছড়ি ঘোরাতে পারলেও নিজের এই বান্ধবীটিকে কখনোই কাবু করতে পারেনি। যদিও ও সেই চেষ্টাও কখনো করেনি। বরঞ্চ বন্ধুর এই শাসনসুলভ দিদিমনি চরিত্রটিকে একপ্রকার প্রচ্ছন্ন পশ্রয়ই দেয় সে।
দুই বন্ধুর খুনসুটি দেখে এতক্ষন একপাশে দাঁড়িয়ে হেসে চলেছিল কথা বেশ মজা লাগছে ওর। অরণ্য ওকে প্রায়ই বকাবকি করে থাকে আজ তাকে কেউ বকছে দেখে বেশ মজাই লাগছে ওর।
-তুমি আবার দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাসছো কেন। ওই শাঁখচুন্নিটা যখন অরির গায়ে উঠেছিল টেনে এক চড় মারতে পারলেনা।
-ফালতু সিন্ ক্রিয়েট করে কী কোনো লাভ আছে রোশনিদি বরঞ্চ তাতে আরও ঝামেলা বাড়বে। শালিনী ম্যামের সাথে আমাদের দরকারটা শুধুমাত্র আজকের এডশুট আর নেক্সট মান্থের ফ্যাশন শোয়ের জন্য তাই আমার মনে হয় উনি যা করছেন করুন আমাদের উচিত তাতে মাথা গরম না করে নিজেদের কাজটা ওনাকে দিয়ে করিয়ে নেওয়া। এটাতো মানতেই হবে যে এই দুটো কাজই আমাদের ড্রিম প্রজেক্টগুলোর জন্য কত ইম্পরট্যান্ট হতে চলেছে আর শালিনীর মতো ফেমাস ফেস যদি এই প্রজেক্টগুলোর ব্র্যান্ড এম্ব্যাসাডার হয় তাহলে এইগুলোর মার্কেট ভ্যালু আরও অনেক বেড়ে যাবে।
-এবার বুঝেছি আমার বন্ধুটি কেন সবার মধ্যে থেকে তোমাকেই বেছে নিয়েছে। সত্যিই তুমি অরণ্যের জন্য একেবারে পারফেক্ট।
আচ্ছা ওইসব বিসনেসের কথা এখন ছাড়ো এবার তোমাকে একটু ভালো করে দেখি। না আমার বন্ধুর চয়েস আছে মানতে হয়। শাড়িটায় তোমাকে সত্যিই খুব সুন্দর লাগছে। কিন্তু সাজটা ঠিকঠাক কমপ্লিট হয়নে। গিভ মি ওয়ান মিনিট।
এই বলে রোশনি একটা ফাউন্ডেশনের টিউব নিয়ে এসে কিছুটা ফাউন্ডেশন বার করে কথার ঘাড়ের কাছে লাগাতে লাগাতে বললো
-কিছু দাগ একান্তই আপন হয় সেগুলো সবার থেকে লুকিয়ে রাখাই ভালো।
রোশনির এরকম কথায় বেশ লজ্জা পেয়ে গেলো কথা। উফফ অরণ্য আর রোশনি এরা দুই বন্ধুই সেয়ানা নাম্বার ওয়ান কাউকে লজ্জায় ফেলার একটু সুযোগ পেলে এদের দুজনের কেউই সেটা হাতছাড়া করেনা।
.
.
.
❤️ক্রমশ❤️

লাভ মি লাইক ইউ ডু 🔞Where stories live. Discover now