একজন হরিণীমালা ও যুদ্ধ

68 10 19
                                    

আজ রাত যুদ্ধবিরতি৷ নরকের আগুন মাঝেমধ্যে কমে কিনা জানা নেই। তবে যুদ্ধের আগুন ছলনাময়ী নারীর ছলনার মতো প্রায়ই কমে গিয়ে পরক্ষনেই ফুসে উঠে। আজ এমনই একটি রাত৷

সৈন্যরা ক্লান্ত৷ প্রহরীরা ছাড়া বাকি সবাই ঘুমুচ্ছে৷ তবে ঘোড়াগুলোর কী যেন হয়েছে। ওদের ঘুম নেই। অবশ্য ঘোড়াগুলোর সাথে সাথে ময়দানের অগ্নিপুরুষরাও জেগে আছেন। দিনে তাদের প্রয়োজন তরবারি, রাতে প্রয়োজন নারী।

স্ত্রীদের আনা নিরাপদ নয় বলেই দাসীরা আসে সঙ্গে। পুরুষদের তৃপ্ত করে। রসের কথা বলে। রসকষহীন কট্টর এইসব পুরুষদের রসের বড়ই অভাব।

হরিণীমালার মন খারাপ। এই লোকটি যতক্ষণ তাকে জড়িয়ে ধরে থাকে, তার মন ভালো হয়না। মনে হয় এক্ষুনি বুঝি তাকে ছেড়ে চলে গেল।

হরিণী এককালে খুব দূরের রাজ্যে বড় ঘরের কন্যা ছিল। তবে সেই রাজ্য জয়কালে সে সহ আরো অসংখ্য মেয়ে কে দাসী হিসেবে নিয়ে আসা হয়েছিল। সেসব খুব আগের কথা। এই জীবনে সে অনেক পুরুষাঙ্গ দেখেছে তবে সত্যিকারের পুরুষ দেখেনি। অন্তত তার সামনের লোকটিকে ছাড়া৷ মানুষটার নাম সমর বাহাদুর। এই রাজ্যের সেনাপতি।

হরিণীমালাকে সবাই ক্ষ্যাপা দাসী বলেই চেনে কিছুটা। সে পুরুষদের সাথে বিছানায় যেতে রাজী না। কামড়ে, আঁচড় কেটে রক্তাক্ত করে সে কতবার বাধা দিয়েছে কাজ হয়নি। পুরুষ মানুষ বিছানায় বড্ড বেশি হিংস্র। সাগরের পাড়ের কঠিন পাথরের মতো। যত ঢেউই আছড়ে পড়ুক ভাঙ্গবে না।

তবে সমর বাহাদুর তাকে বাঁচিয়েছেন। তিনি ওকে নিজের জন্য শুধু রেখে দিয়েছেন। তার এতে আপত্তি নেই। কিন্তু অন্য পুরুষ কে সে মানবে না। পুরনো অহংকার তার রক্তে। হোক সে দাসী!

সমর তাকে আজ গয়না দিয়ে সজ্জিত করে রেখেছেন। দাসীর বুক উন্মুক্ত। উপরে সোনার গয়না।

সে সমরের গলায় যতটুকু সম্ভব ভালোবাসা মিশিয়ে জড়িয়ে ধরে। হরিণী জানে এই ভালোবাসার একটা টুকরোও মিথ্যে না।

সে সমর কে জিজ্ঞেস করে, "ও, সখী! তুমি আমাকে আজ এমন গয়না পরিয়ে রেখেছ কেন? শরীরে তো একরত্তি কাপড় নেই।"

একজন হরিণীমালা ও যুদ্ধWhere stories live. Discover now