Continuing,
আরও কিছু কথাবার্তা হলো তাদের মধ্যে।
অর্কদেব:- if you don't mind, আমি কি আপনাকে তুমি বলে সম্বোধন করতে পারি?
অরুন্ধতী:- হ্যাঁ, আমিও কিন্তু তুমি বলেই বলবো
অর্কদেব:- তোমার যা ইচ্ছে।
অরুন্ধতী:- এখন থেকেই শুরু করেছ।(একটা মুখ চাপা হাসি দিয়ে সে বলল)
অর্কদেব:- আমি বললেই কি দোষ?
অরুন্ধতী:- ধ্যাত, কি বলছেন বলুন তো? তা মজা করছিলাম।
অর্কদেব :- (একগাল হেসে দেয় ছেলেটা) আমার মজাটা বুঝলে না?
অরুন্ধতী:- (সে হাত দিয়ে অর্কর গায়ে হালকা ধাক্কা দেয়) ধুর তোমার মজা।
অর্কদেব:- তাহলে আপনার হ্যাঁ নাকি না?
অরুন্ধতী :- কি বিষয়ে বলছ বল তো? বিয়ে?
তাই হয় তাহলে তো তোমার এটা জানা উচিত যে ডিসিশন নিতে আমার সময় লাগবে। ততদিনের জন্য কি আমরা রিলেশনশিপে থাকতে পারি?
অর্কদেব:- are you asking me out? প্রথম দেখাতেই আমাকে তুমি পছন্দ করেছ? I mean seriously?
অরুন্ধতী :- ছেলে যদি এত হ্যান্ডসাম হয় আর তার কথা যদি এত সুন্দর হয় ,তাকে যদি আমি পছন্দই না করি তাহলে আমার পছন্দটা খারাপ বলে আমি মনে করব।
অর্কদেব:- সত্যি বলতে কি বলতো I genuinely agree with you. কিন্তু আমাদের উচিত আমাদের বাবা মাকে আগে জিজ্ঞাসা করা।
অরুন্ধতী:- আমারও তাই মনে হয়। Ok let's go.
Author's POV:-
দুজন নিজেদের কথাবার্তা শেষ করে সিঁড়ি দিয়ে নেমে গেল তাদের মা-বাবাকে তাদের মনের কথা জানাতে। দুজনেরই মুখেই একটা অন্যরকম হাসি যেন মনে হচ্ছে একে অপরের সাথে এই আধ ঘন্টার কথোপকথনের দরুন অনেকটা জেনে ফেলেছে একে অপরকে। তাদের দেখে বাবা মা জিজ্ঞাসা করে উঠলেন,
"কিরে তোদের ডিসিশন টা জানা এবার।"
অনেক কষ্টে অরুন্ধতীর মুখ থেকে স্বর বেরোলো
অরুন্ধতী:- আসলে কি বলতো আমাদের একে অপরকে পছন্দ হয়েছে কিন্তু আমরা চাই একটা রিলেশনশিপে থাকতে আর একে অপরকে আরো কিছুটা জানতে তারপরে আমরা আমাদের ফাইনাল ডিসিশন জানাবো।
তাদের বাবা-মা সবাই রাজি হয়ে গেলেন তাদের এই ডিসিশনে। নব দম্পতি বললে ভুল হলেও বলতে বাধ্য আমি যে অরুন্ধতী অর্কদেব দুজনেই আজকে বড্ড খুশি শুধুমাত্র একে অপরের সাথে আধ ঘন্টার একটা কথোপকথনে। দুজনেরই মুখে হাসি ফোটার কারণ তারা দুজন নিজেরাই।
বাবা-মা ও দুই ছেলে মেয়ের মধ্যে কথোপকথন শেষ হতেই বিদায় নিলো অর্কদেব ও তার পরিবার।
বলা বাহুল্য যে কথোপকথনের মধ্যে তাদের মধ্যে নাম্বার এক্সচেঞ্জ হয়নি। কিন্তু আমাদের অরুন্ধতীকে ডেস্পারেট মনে না হলেও সে রাত্রিবেলা নিজের মায়ের থেকে ঠিক গিয়ে
অর্কদেবের নাম্বার নিয়ে আসে।
Author's POV:-
সময় তখন রাত্রি বারোটা অরুন্ধতী তখন নিজের বারান্দায় দাঁড়িয়ে। বি.এড স্টুডেন্টের পড়াশোনার চাপ সামলে না ঘুমিয়ে এত রাত্রি বেলায় বারান্দায় দাঁড়িয়ে কি করছে তা ভাববার বিষয় হলেও তার হাতের সিগারেট সবকিছু বলে দেয়। তার পরনে একটা সাদা কালো নাইটসুট। নাইটসুটের প্যান্টের পকেট থেকে নিজের ফোনটা বার করলো সে। এক হাতে সিগারেট আরেক হাতে ফোন। ফোনের কন্টাক্ট লিস্ট এ গিয়ে অর্কদেবের নাম্বারটাতে ক্লিক করে কল দিল সে।
অপরদিকে,
হাতে শার্লক হোমস নিয়ে উল্টো হয়ে বিছানায় শুয়ে বইটা পড়ছিল অর্কদেব। ঘরে লাইট দেখে মনেই হচ্ছে না এখন রাত্রি বারোটা বাজে। তার চোখে ঘুম থাকা সত্ত্বেও বইটা পড়ার কিছুটা আগ্রহ ছিল তার মধ্যে।কাছে ছিল ফোনটা, বেজে উঠতেই ধরে নিল সে। Unknown নাম্বার দেখেও ফোন তোলার স্বভাব তার আজকের নয়। কেননা সে সব সময় মাথায় এই চিন্তাটা নিয়ে ঘোরে যদি কেউ কোন দরকারে ফোন করে থাকে। ফোনটা কানে দিলো সে।
অর্কদেব:- হ্যালো ।কে বলছেন?
অরুন্ধতী:- হ্যালো আমি বলছি , চিনতে পারছ ?
অর্কদেব:- অরুন্ধতী বলছ? এত রাতে? কোন প্রয়োজন ছিল?
অরুন্ধতী:- প্রয়োজন ছাড়া কি ফোন করা যায় না? আর এত রাত কি বলছ সবে তো রাত্রি বারোটা বাজে । আর আমিও এটা ভালো করেই বুঝতে পারছি যে তুমিও ঘুমাওনি। কি করছিলে বুঝি?
অর্কদেব:- শার্লক হোমস পড়ছিলাম। তুমি?
অরুন্ধতী:- ইউনিভার্সিটি যাওয়ার আছে কাল, কিছু কাজ বাকি ছিল সেগুলোই কমপ্লিট করে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি। Guess what I am doing right now?
অর্কদেব:- নিশ্চয়ই স্মোক করছ?
অরুন্ধতী:- কি করে এত সহজে বুঝলে বলতো আমি কি করছি?
অর্কদেব:- এত রাত্রি বেলা কেই বা বারান্দায় এমনি দাঁড়িয়ে থাকবে and when he or she does smoke?
অরুন্ধতী:- তাও ঠিক।
অর্কদেব:- By the way, আমার নাম্বার কি করে পেলে তুমি? আমি তো তোমাকে দিইনি
অরুন্ধতী:- মায়ের থেকে নিয়েছি।
অর্কদেব:- তুমি অতটাও ইনোসেন্ট নও যতটা আমি তোমাকে মনে করেছিলাম।
অরুন্ধতী:- আপনার এই ধারণাকে আমি কুর্নিশ জানাই যে আপনি একজন ২৫-২৬ বছরের মেয়েকে ইনোসেন্ট মনে করেছেন। আর যখন সেই মেয়েটা স্মোক করে।
অর্কদেব :- (এতটাই জোরে হাসলো যে অরুন্ধতী ফোনে সবটাই স্পষ্ট শুনতে পেল) তুমি পারোও বটে।
অরুন্ধতী:- খুব হাসা হচ্ছে না? নেক্সট দিন দেখা হলে তোমাকে আমি মজা দেখাবো।
অর্কদেব:- সেই নেক্সট দিনটা কবে হবে?
অরুন্ধতী:- তুমি যদি পার, কালকে দেখা করতে পারি।
অর্কদেব:- কালকে কখন?
অরুন্ধতী:- ওই বিকেল দিকে, সাড়ে ৪টে নাগাদ
ইন্ডিয়ান কফি হাউসে ।
অর্কদেব:- ok done. তাহলে কালকে দেখা হচ্ছে।
এখন রাখছি তাহলে।
অরুন্ধতী:- hmm রাখছি, bye।
এখানেই তাদের এই মোবাইলের কথোপকথনের সমাপ্তি ঘটে। দুজনেই নিজেদের নিদ্রাচ্ছন্ন চোখে শান্তি দিয়ে নিজেদের পার্সোনাল বিছানায় বিলীন হয়ে যায়।
পরবর্তী দিন, সময়:- চারটে পঁচিশ।
স্থান:- ইন্ডিয়ান কফি হাউস
গোলাপি রঙের একটা চুড়িদার পরা মেয়ে, আপনারা ঠিকই ধরেছেন সে অরুন্ধতী। অপেক্ষা করছে একজনের জন্য ।সে কে সেটা বোঝা আপনাদের কাছে একেবারেই দুষ্কর নয়। একটা সাদা শার্ট আর কালো প্যান্ট পড়ে কফি হাউসের দরজার সামনে উপস্থিত হলো অর্কদেব। হাতে ফোন, মুখে একটা মিষ্টি হাসি। তাকে দেখার প্রয়োজন হয়নি অরুন্ধতীর ,কিন্তু তার সেই গোলাপী ঠোঁট অরুন্ধতীকে শান্ত করতে পারছে না।
দিনের বেলায় তার চোখে স্বপ্ন, সে যেন অর্কদেবকে কিস করছে।
অর্কদেব দেখতে পেল অরুন্ধতীকে, দেখল অরুন্ধতী গভীর চিন্তায় মগ্ন । মেয়েটির চোখের সামনে নিজের আঙ্গুলগুলো নেড়ে পরিস্থিতি সামলে নিতে অর্কদেব। অরুন্ধতীর সামনের চেয়ারে বসে পড়লো সে।
অর্কদেব:- অনেকক্ষন অপেক্ষা করাইনি তো?
অরুন্ধতী:- না না, আমিই একটু তাড়াতাড়ি এসে গেছিলাম। By the way, তোমাকে ভীষণ হ্যান্ডসাম লাগছে আজকে।
অর্কদেব:- seriously? I mean এই সাধারণ একটা সাদা শার্ট আর কালো প্যান্টে আমাকে হ্যান্ডসাম লাগছে?
অরুন্ধতী:- হ্যান্ডসাম যে, তাকে তো যাই পরুক তাতেই হ্যান্ডসাম লাগবে।
অর্কদেব:- তোমাকেও খুব মিষ্টি লাগছে।(এগিয়ে গিয়ে মেয়েটার গাল দুটো টিপে দিল সে।
অরুন্ধতী:- (প্রথমে একটু রেগে গেলেও পরে মিষ্টি করে হেসে দিল)
তাদের কথাবার্তা এভাবেই চলতে লাগলো , ফোনে কিংবা কোথাও দেখা করে। এভাবে প্রায় পনেরো দিন কেটে গেছে।
সেদিন অরুন্ধতীর ইউনিভার্সিটিতে ছুটি ছিল। বিকেল ৫টা বাজে তখন। ছাদে দাঁড়িয়ে ছিল অরুন্ধতী, পরনে ছিল হাফ প্যান্ট আর over-sized টি শার্ট। পকেটে থাকা ফোনটা বেজে উঠল হঠাৎ। না দেখেই ফোনটা তুলে কানে দিল সে। হাতে ছিল আধপোড়া সিগারেট। ওটা আবার মুখে দিয়ে ধোয়া ছাড়লো একটা। ফোনের অপর পার থেকে শোনা গেলো অর্কদেবের গলা, "হ্যালো"।
অরুন্ধতী:- হ্যাঁ অর্ক বলো। সরি অর্কদেব, বলো।
অর্কদেব:- if you want to তাহলে তুমি আমাকে অর্ক বলে ডাকতে পার। কিন্তু আমিও তোমাকে আরু বলে ডাকবো।
অরুন্ধতী:- ঠিকাছে অর্ক ।
____________________________________